বিজ্ঞাপন

দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে বাংলাদেশের প্রথম জয়

March 19, 2022 | 1:31 am

স্পোর্টস ডেস্ক

২০০২ সালের অক্টোবরে প্রথমবারের মতো রঙিন পোশাকে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে খেলতে নেমেছিল বাংলাদেশ। সেবার ১৬৮ রানে হেরেছিল টাইগাররা। এরপর দ্বিপাক্ষিক সিরিজ এবং বিশ্বকাপ মিলিয়ে আরও আটটি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ দক্ষিণ আফ্রিকায় তাদের বিপক্ষে খেললেও জয়ের দেখা পায়নি বাংলাদেশ। এবার সেই আক্ষেপ ঘুচল টাইগারদের। ২০২২ সালের ১৮ মার্চ ইতিহাস গড়ে প্রোটিয়াদের তাদের মাটিতেই হারানোর গৌরব অর্জন করল বাংলাদেশ দল।

বিজ্ঞাপন

সেঞ্চুরিয়নে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৩১৫ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় বাংলাদেশ। তবে টাইগার পেসারদের তোপের মুখে ভেঙে পড়ে প্রোটিয়াদের ব্যাটিং অর্ডার। সেই সঙ্গে শেষ দিকে এসে মেহেদি হাসান মিরাজ ঘূর্ণিতে ৪ উইকেট তুলে নিলে দক্ষিণ আফ্রিকা অলআউট হয় ২৭৬ রানে। আর বাংলাদেশ পেয়ে যায় ৩৮ রানের দুর্দান্ত এক জয়।

বাংলাদেশের ছুঁড়ে দেওয়া ৩১৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই শরিফুল ইসলাম এবং তাসকিন আহমেদের বোলিং তোপে লণ্ডভণ্ড দক্ষিণ আফ্রিকার টপ অর্ডার। মাত্র ৩৬ রানেই টপ অর্ডারের তিন ব্যাটারকে তুলে নেন এই দুই পেসার। এরপর প্রতিরোধ গড়েন টেম্বা বাভুমা এবং ভ্যান ডার ডুসেন। ভয়ংকর হয়ে ওঠে এই জুটিটাও ভেঙেছেন টাইগার পেসার শরিফুল ইসলাম।

বিজ্ঞাপন

শুরুটা দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং ইনিংসের চতুর্থ ওভারের পঞ্চম বলে। শরিফুল ইসলামের শর্ট লেংথের বল ব্যাটের কোণায় লেগে উইকেটের পেছনে মুশফিকের তালুবন্দি হন জানেমান মালান। এতেই দলীয় ১৮ রানে প্রথম উইকেট হারায় প্রোটিয়ারা।

দ্বিতীয় উইকেটে টেম্বা বাভুমার সঙ্গে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন কাইল ভেররেন্নে। তবে তাসকিন আহমেদের এক স্পেলেই দুটি উইকেট হারালে ভেঙে পড়ে প্রোটিয়াদের প্রতিরোধ। ৮ম ওভারের প্রথম ২৫ বলে ২১ রান করা কাইলকে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলেন তাসকিন। আর ওই ওভারের চতুর্থ বলে এইডেন মারক্রামকে মেহেদি হাসান মিরাজের তালুবন্দি করালে ৩৬ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে স্বাগতিকরা।

বিজ্ঞাপন

এরপর চতুর্থ উইকেটে ৮৫ রানের দুর্দান্ত এক জুটি গড়েন অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা এবং রসি ভ্যান ডার ডুসেন। এই জুটিতেই এগোচ্ছিল প্রোটিয়ারা। কিন্তু দ্বিতীয় স্পেলে বল হাতে এসেই বাভুমাকে তুলে নিয়ে প্রতিরোধ ভাঙেন শরিফুল ইসলাম। ২৭তম ওভারের তৃতীয় বলটি একটু বেশিই বাউন্স মেরেছিলেন শরিফুল। তার বলটা উইকেটরক্ষকের মাথার ওপর দিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন বাভুমা কিন্তু শেষ পর্যন্ত টপ এজে মুশফিকের গ্লাভস বন্দি হন তিনি। এতেই ভাঙে প্রতিরোধ। ১২১ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা।

বাভুমা ফিরলে উইকেটে আসেন ডেভিড মিলার। আর ক্রিজে এসেই শুরু করেন তার তাণ্ডব। ভ্যান ডার ডুসেনের সঙ্গে ৬৪ বলে ৭০ রানের ঝড়ো জুটি গড়েন মিলার। একটা সময় তো বাংলাদেশের হাত থেকে ম্যাচটা নিয়েই যাচ্ছিলেন এই দুই প্রোটিয়া ব্যাটার। তবে তাসকিন আহমেদের অগ্নিঝরা বোলিংয়ের সামনে শেষ পর্যন্ত মাথা নোয়াতেই হয়েছে ভ্যান ডার ডুসেনকে।

৩৮তম ওভারে বল হাতে এসেই ভ্যান ডার ডুসেনকে তুলে নেন তাসকিন আহমেদ। আউট হওয়ার আগে ৯৮ বলে ৮৬ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেন ডুসেন। এরপর জ্বলে ওঠেন মেহেদি হাসান মিরাজ। একে একে তুলে নেন ফেলুকায়ো, জ্যানসেন, রাবাদা এবং ডেভিড মিলারকে। তাতেই নিভে যায় প্রোটিয়াদের জয়ের আশা। স্বাগতিকরা ৭ বল বাকি থাকতেই অলআউট হয় ২৭৬ রানে। আর বাংলাদেশ পায় ৩৮ রানের দুর্দান্ত এক জয়।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ চারটি উইকেট নেন মেহেদি হাসান মিরাজ। এছাড়া তিনটি উইকেট নেন তাসকিন আহমেদ আর দুটি উইকেট নেন শরিফুল ইসলাম।

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে লিটন দাস, সাকিব আল হাসান এবং ইয়াসির আলী চৌধুরী রাব্বির অর্ধশতকে ভর করে বাংলাদেশে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ৩১৪ রান তোলে।

সংক্ষিপ্ত স্কোরকার্ড

বাংলাদেশ: ৫০ ওভার; ৩১৪/৭; (তামিম ৪১, লিটন ৫০, সাকিব ৭৭, মুশফিক ৯, ইয়াসির ৫০, মাহমুদউল্লাহ ২৫, আফিফ ১৭, মিরাজ ১৯*, তাসকিন ৭*); (এনগিডি ১০-১-৭৫-১, রাবাদা ১০-০-৫৭-১, জ্যানসেন ১০-১-৫৭-২, কেশভ ১০-০-৫৬-২, ফেলুকায়ো ১০-১-৬-১)।

দক্ষিণ আফ্রিকা: ৪৮.৫ ওভার; ২৭৬/১০; (কাইল ২১, মালান ৪, বাভুমা ৩১, মারক্রাম ০, ডুসেন ৮৬, মিলার ৭৯, ফেলুকায়ো ২, জ্যানসেন ২, রাবাদা ১, কেশভ ২৩, এনগিডি ১৫*); (সাকিব ১০-০-৫৪-০, শরিফুল ৭-০-৩০-২, তাসকিন ১০-১-৩৬-১, মুস্তাফিজ ১০-০-৫০-০, মিরাজ ৯-০-৬১-১, মাহমুদউল্লাহ ১.৫-০-২৪-১)।

ফলাফল: বাংলাদেশ ৩৮ রানে জয়ী।

বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার সিরিজের সবকটি ম্যাচ সরাসরি সম্প্রচার করবে দেশের জনপ্রিয় স্যাটেলাইট চ্যানেল জিটিভি। এছাড়াও বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় অনলাইন প্ল্যাটফর্ম র‍্যাবিটহোলের ওয়েবসাইটে দেখা যাবে খেলা। অনলাইনে র‍্যাবিটহোলে খেলা দেখতে ব্রাউজ করুন https://www.rabbitholebd.com/

সারাবাংলা/এসএস

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন