বিজ্ঞাপন

‘আপা লোকটিকে চিনি বলার সঙ্গে সঙ্গে সে তাকে গুলি করে’

March 20, 2022 | 8:05 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী এলাকায় গুলিতে সগিরা মোর্শেদ হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় প্রত্যক্ষদর্শী রিকশাচালক সালাম মোল্লা জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দিতে তিনি সগিরা মোর্শেদকে কীভাবে গুলি করে হত্যা করা হয় সেই চিত্র তুলে ধরেন।

বিজ্ঞাপন

রোববার (২০ মার্চ) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামানের আদালতে এই সাক্ষী সাক্ষ্য দেন। তবে এদিন সালাম মোল্লার সাক্ষ্য শেষ হয়নি। আদালত আগামী ৩০ মার্চ সাক্ষ্য গ্রহণের পরবর্তী তারিখ ধার্য করেছেন আদালত।

রিকশাচালক সালাম মোল্লা জবানবন্দিতে বলেন, ‘১৯৮৯ সালের ২৫ জুলাই বিকেল ৫টার দিকে শাহজাহানপুরের শহীদবাগ থেকে রিকশা নিয়ে রাজারবাগের দিকে যাচ্ছিলেন। রাজারবাগ গলির মুখ থেকে সগিরা মোর্শেদ আমাকে ডাক দিয়ে বলে, সিদ্ধেশ্বরী ভিকারুননিসা স্কুলের সামনে যাব কি না? আমি যাব বলি এবং চার টাকা ভাড়া ঠিক করি। এর পর তাকে নিয়ে রওনা দিয়ে মালিবাগ পেট্রোল পাম্পের কাছে গিয়ে আমি বলি, আপা শান্তিনগর দিয়ে যাব? তখন আপা বলেন, না তুমি সিদ্ধেশরীর ভিতর দিয়ে যাও। এদিক দিয়ে কাছে হবে। সিদ্ধেশরীর ভিতর ঢুকে কালীমন্দিরের সামনে এলে একটি মোটরসাইকেল বের হয়ে আসে। সেখানে দু’জন লোক ছিল। ঘটনাস্থল ভিকারুননিসার দুই বাড়ি আগে আমার রিকশা এলে মোটরসাইকেলটি সামনের চাকার সামনে এসে ব্রেক করে এবং ব্যারিকেড দেয়। আপার হাতে একটি ব্যাগ ছিল।’

তিনি বলতে থাকেন, ‘মোটরসাইকেলের পিছনে বসা লোকটি ব্যাগটি টান দিয়ে নিয়ে নেয়। পরে সেটা মোটরসাইকেলে বসা সামনের লোকটির কাছে দেয়। এরপর মোটরসাইকেলে বসা সামনের লোকটি আপার হাতের বালা টানাটানি করে। এ সময় আপা বলে, তুমি আমার সাথে এগুলো কোরো না। আমি তোমাকে চিনি। আপা লোকটিকে চিনি বলার সঙ্গে সঙ্গে মোটরসাইকেলের সেই আরোহী তাকে গুলি করে। গুলি আপার বুকের বাম পাশে লাগে। আপা রিকশা থেকে পড়ে যেতে লাগলে আমি হাত দিয়ে তাকে ঠেকিয়ে রাখি। যাওয়ার সময় তারা আরও একটি গুলি করে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘ওই সময় আমি একটি ইট নিয়ে হাইজ্যাকার হাইজ্যাকার বলে মোটরসাইকেল আরোহীদের পিছনে পিছনে ছুটতে থাকি। আমি ভিকারুননিসা স্কুলের কাছে মহিলা সমিতি পর্যন্ত দৌড়ে যাই। কিন্তু তারা মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায়। তারপর আমি আবার রিকশার কাছে যাই। সেখানে গিয়ে তখন অনেক লোক দেখতে পাই। তারা আমাকে বলে, আপাকে হাসপাতালে নিয়ে গেছে। এরপর আমি রমনা থানায় যাই এবং ঘটনা পুলিশকে জানাই। তারপর থানার পুলিশসহ আমি আবার ঘটনাস্থলে আসি।’

রিকশাচালকের জবানবন্দির মাধ্যমে মামলাটিতে আট জনের সাক্ষ্য নেওয়া হলো।

উল্লেখ্য, ১৯৮৯ সালের ২৫ জুলাই বিকেল পাঁচটার দিকে সগিরা মোর্শেদ সালাম (৩৪) বাসা থেকে বের হয়ে তার দ্বিতীয় শ্রেণি পড়ুয়া বড় মেয়ে সারাহাত সালমাকে বাসায় আনতে স্কুলের দিকে যাচ্ছিলেন। স্কুলের সামনে পৌঁছামাত্রই অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতিকারীরা তার হাতের বালা ধরে টান দেয়। বালা দিতে অস্বীকার করায় সগিরাকে গুলি করা হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী আব্দুস সালাম চৌধুরী রমনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

বিজ্ঞাপন

মামলার আসামিরা হলেন- আনাস মাহমুদ ওরফে রেজওয়ান (৫৯), ডা. হাসান আলী চৌধুরী (৭০) ও তার স্ত্রী সায়েদাতুল মাহমুদ ওরফে শাহীন (৬৪) এবং মারুফ রেজা।

 

সারাবাংলা/এআই/পিটিএম

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন