বিজ্ঞাপন

কনসার্টে প্রধানমন্ত্রীর গান শোনার সমালোচনা করলেন ফখরুল

March 30, 2022 | 5:45 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: জনগণকে দুরবস্থায় রেখে কনসার্টে প্রধানমন্ত্রীর গান শোনার সমালোচনা করলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (৩০ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এক অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব এই সমালোচনা করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজ এমন একটা অবস্থা তৈরি হয়েছে যে, মানুষ টিসিবির ট্রাকের পেছনে লাইন দিচ্ছে। কারণ নিত্য প্রয়োজনীয় চাল-ডাল-তেল-লবণ কেনার জন্য যে অর্থ সেই অর্থ তার নাই। পণ্যের দাম হু হু করে বেড়ে যাচ্ছে।’

‘আর ওই সময় আমরা কি করছি? আমাদের প্রধানমন্ত্রী ভারত থেকে বিখ্যাত গায়ককে নিয়ে এসে কনসার্টে তিনি গান শুনছেন, নিজে ভিডিও করছেন এবং সেখানে কোটি কোটি টাকা খরচ হচ্ছে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘আমাদের ব্যুরোক্র্যাটসরা ঢাকা-টরেন্টো ফ্লাইটে যাচ্ছেন। সেখানে অর্ধেক হচ্ছে তাদের পরিবার। সেই ফ্লাইটে কোটি কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে। এই হচ্ছে দেশের অবস্থা।’

প্রসঙ্গত, গতকাল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ‘ক্রিকেট সেলিব্রেটস মুজিব হান্ড্রেড’ শীর্ষক কনসার্টের ভারতের অস্কার জয়ী সঙ্গীত তারকা এ আর রহমান গান পরিবেশন করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এদিন স্টেডিয়ামে উপস্থিত হয়ে গান শোনেন। কনসার্টে বাংলাদেশের জনপ্রিয় ব্যান্ড দল মাইলস ও জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী মমতাজও অংশ নেন।

ন্যায্যমূল্যের কার্ডেও দলীয়করণ

বিজ্ঞাপন

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘পত্রিকায় প্রকাশ হয়েছে যে, ন্যায্যমূল্যের কার্ড দিয়েছে তারা। খুব জোর গলায় বলা হচ্ছে, এক কোটি কার্ড দেওয়া হয়েছে গরিব মানুষদের; যেন তারা ন্যায্যমূল্যে পণ্য কিনতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘আমার ঠাকুরগাঁওয়ে যাকে কার্ড দেওয়া হয়েছে তিনি হলেন- আওয়ামী লীগের মহিলা দলের সভানেত্রী। তার দোতলা বাড়ি। আর তার পাশেই একজন দুঃস্থ গরিবের এক চালা বাড়ি। কিন্তু সে কোনো কোনো কার্ড পায়নি। এই হলো দেশের অবস্থা।’

সদ্য কারামুক্ত বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজীকে সংবর্ধনা জানাতেই এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে রুহুল আমিন গাজী মুক্তি পরিষদ। সাংবাদিকদের বিভিন্ন ইউনিয়নের পক্ষ থেকে কারামুক্ত নেতাকে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ২১ অক্টোবর নিজের কর্মস্থল দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকার অফিস থেকে রুহুল আমিন গাজীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। রাষ্ট্রদ্রোহ ও ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে দু’টি মামলা দায়ের করা হয় তার বিরুদ্ধে। ১৭ মাস পর গত ২২ মার্চ উচ্চ আদালতের জামিনে কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি।

বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠানে অসুস্থ রুহুল আমিন গাজী সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তার মুক্তির জন্য যারা আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণে যত আইন হচ্ছে

গণমাধ্যমকর্মী আইনের খসড়া বিল জাতীয় সংসদে উত্থাপনের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, ‘এই আইন কারা করবে? সাংবাদিকরা করছেন না, আইনটা করছেন পার্লামেন্টের সদস্যরা। যারা নির্বাচিত হননি, যারা বিনা ভোটে ক্ষমতা দখল করে বসে আছেন, তারা আইন তৈরি করবেন সাংবাদিক ও গণমাধ্যমের জন্য। সেটার কী অবস্থা দাঁড়াবে আমরা জানি।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আরেকটা হচ্ছে উপাত্ত সংরক্ষণ আইন। ৩৪ পৃষ্ঠা খসড়া দিয়েছে। এছাড়া বিটিআরসির মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়া কন্ট্রোল করতে পারবে সেই আইনও আনছে তারা। বলতে গেলে তারা বাংলাদেশকে ফ্যাসিবাদী একটা রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। এখানে কথা বলার স্বাধীনতা নেই। কথা বললে শিরোচ্ছেদও হতে পারে- এরকম একটা অবস্থা তৈরি হতে যাচ্ছে।’

সাংবাদিকদের ঐক্য জরুরি

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখানে সাংবাদিকদের বিভিন্ন সমস্যার কথা আসছে। এগুলো কিন্তু থাকবে। যুদ্ধ যখন হয়, সংগ্রাম যখন হয়, তখন সেখানে দালাল থাকে। তখন সেখানে বিভিন্ন রকমের মানুষ থাকে- যারা বিভিন্ন রকমের ফায়দা নিতে চায়। এগুলোকে কাটিয়ে কিন্তু আমাদের এগুতে হবে। এগুলোকে কাটিয়ে আমাদের ঐক্য সৃষ্টি করতে হবে। আর সেটা হতে হবে ইস্পাত দৃঢ় ঐক্য।’

তিনি বলেন, ‘সেই ঐক্যের মধ্য দিয়ে আমরা বাংলাদেশকে মুক্ত করব। আমরা সাংবাদিকদের লেখার স্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করব। এটা আমাদের করতে হবে, এটা আমাদের দায়িত্ব। আসুন সেই লক্ষ্যে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করি। অবশ্যই আমরা জয়লাভ করব। সূর্যোদয় হবেই, হতেই হবে। অন্যায়কে ন্যায়ের কাছে পরাজিত হতে হবে।’

সংগঠনের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন আলমগীরের সভাপতিত্বে এবং সাংবাদিক আবদুল হাই শিকদার ও শহীদুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আনোয়ারুল্লাহ চৌধুরী, অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, অধ্যাপক লুৎফুর রহমান, সাংবাদিক কামাল উদ্দিন সবুজ, এলাহী নেওয়াজ খান, হাসান হাফিজ, সৈয়দ আবদাল আহমেদ, আমিরুল ইসলাম কাগজী, সর্দার ফরিদ, কাদের গনি চৌধুরী, বাছির জামাল, খোরশেদ আলম, ইলিয়াস হোসেন, রফিকুল ইসলাম, মোরসালিন নোমানী প্রমুখ বক্তব্য দেন।

সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন