বিজ্ঞাপন

প্রিন্স আশরাফ-এর গল্প ‘কাঁটা’

May 3, 2022 | 8:36 pm

ঘ্যাস করে অফিসের সামনে গাড়ি থামল। জাকের সাহেব নামতে কিছুটা দেরী করলেন। বিজ্ঞানের ভাষায়, কি যেন বলে গতিজড়তা, তাই সামলাতে সময় লাগে। তাছাড়া তিনি অফিসের পদস্থ অফিসার। গাড়ির দরজা খোলার ধকলটুকু সন না। ড্রাইভার দরজা খুলে সালাম টুকে দাড়িয়ে থাকে। তিনি সিনেমার দৃশ্যের মত আয়না চকচকে জুতো পরা পা একপা একপা করে বের করেন। তারপর তার পুরো অবয়ব গোচরীভূত হয়।

বিজ্ঞাপন

দরজা টেনে নিচু হওয়া ড্রাইভারের দিকে ভ্রুক্ষেপ করেন না জাকের সাহেব। নিচু লোকদের দিকে তাকানোর সময় নেই তার। শুধু ড্রাইভারের পরনের নতুন পোশাকটার দিকে নজর যায়। আকাশী নীলের ইউনিফর্ম। মালিকানা চেঞ্জ হওয়া চেয়ারম্যান সাহেবের ভীমরতি। অফিসের নুতন ডেকোরাম। হুঁ। হু টা তিনি ডেকোরামের উপর ঝাড়েন, না ড্রাইভারের সালামের জবাবে ঠিক বোঝা যায় না। গত তিরিশ বছর ধরে নিম্নপদস্থ কর্মচারীদের সালামের উত্তরে ওই জান্তব শব্দটাই ইউজ করছেন। ওদেরকে মানুষ পদবাচ্য ভাবেন না। জন্তু সামলাতে জান্তব শব্দই করতে হয়।

অফিসে ঢোকার সময়ও তিনি কোন দিক তাকান না। দারোয়ান ব্যাটা টুলে বসে ঝিমাচ্ছিল। এরা সারাজীবনই ঝিমায়। তিনি ঢুকতেই তড়াক করে লাফিয়ে উঠল। হাতে কোন একটা বস্তু ছিল। সেটা পায়ের কাছে ছিটকে পড়ল।

‘স্লামালাইকুম স্যার।’ দারোয়ান কুণ্ঠিত স্বরে সালাম দিল।

বিজ্ঞাপন

‘হুঁ।’ জান্তব হু শব্দটি অটোমেটিক গলা থেকে বেরিয়ে এলো। তিরিশ বছর ধরেই আসছে। অ্যালবার্ট সু মচমচিয়ে উঠে গেলেন উপরে। উপরেই তার অফিস। তিনি উপরতলার মানুষ।

চেয়ারটাতে বসতেই ঘচ করে বা পাছায় কাটার খোঁচাটা টের পেলেন জাকের সাহেব। একটু ভুরু কুঁচকাল মাত্র। একটু নড়েচড়ে বসলেন। এখন অভ্যাস হয়ে গেছে। দীর্ঘদিনের অভ্যাস। কোন পাশে পাছাটাকে উঠিয়ে বসলে কাঁটার খোঁচাটা লাগে না এতদিনে জেনে গেছেন। তবুও অফিসে এসে নিজের চেয়ারে বসতেই খোঁচাটা খান। পাছাটাতে একটু হাত বুলালেন। তারপর মনের অজান্তেই গঁদিআটা চেয়ারের গদির ফাকফোকর গলে কাঁটায় হাত চলে গেলো। এ কি রে! অনেকখানি কাঁটাই যে বেরিয়ে গেছে দেখছি!

চেয়ারে ঠিকঠাক হয়ে বসে এয়ারকন্ডিশনটা একটু বাড়িয়ে দিলেন। কমতাপে ছাড়া টিকতে পারেন না। অফিসের এয়ারকন্ডিশনড গাড়ি। অফিসের বাংলোবাড়িতেও এয়ারকন্ডিশনড। তার জীবনটাই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। ছেলেমেয়ে দেশের বাইরে সেটেলড। গিন্নী গেঁয়োভুত। ঘরসংসার সামলায়। পার্টির নীলচে আলোয় অন্যের কোমর জড়িয়ে মাতাল দোলার মজা বোঝে না। সেটা নিয়ে অতৃপ্তি নেই তার। অন্যের স্ত্রীকে নিজের স্ত্রী মনে করতে কখনো দ্বিধা করেনি। উপরের চেয়ারধারীদের ওসব সয়ে গেছে।

বিজ্ঞাপন

চেয়ারের কাঁটাটা আবার একটা খোঁচা দিল। বড্ড বেশি বেয়াড়া হয়ে গেছে। অফিসের আসবাব সাপ্লাইয়ের ডিলটা তারই ছিল। মোটা অংকের ঘুষ খেয়ে এই নচ্ছর কোম্পানিকে ডিলটা পাইয়ে দিয়েছিলেন। ওরাও বাগিয়ে নিযেছে কয়েক লাখ। তোমারও লাভ, আমারও লাভ।

জাকের সাহেব রিসিভার তুলে ডায়াল করলেন, ‘হ্যালো, রিরেল ফার্ণিটেক?

প্রোপাইটার জুয়েল খান আছেন?’

‘বলছি। বলুন স্যার, আপনার জন্য কি করতে পারি?’

বিজ্ঞাপন

জাকের সাহেব চিবিয়ে চিবিয়ে বললেন, ‘আমার জন্য নয়? আমার চেয়ারটার জন্য করলেই হবে।’

জুয়েল খান ব্যাপারটা বুঝতে না পেরে জিজ্ঞেস করল, ‘স্যার, ফার্নিচারের নতুন ডিল এসেছে নাকি? নতুন কোন ব্রাঞ্চ অফিস?’

‘না। আগেরটা নিয়েই কথা বলছি। আমার চেয়ারটায় একটু সমস্যা হচ্ছে।’

‘ঠিক আছে স্যার। লোক পাঠিযে দেব। আর আপনিই বা ও চেয়ারে আর কতদিন আছেন। দুদিনের মেহমান। আপনার তো সময় হয়ে এসেছে। নতুনের সাথে নতুন ডিল হবে স্যার।’

জাকের সাহেব চমকে উঠলেন। নতুন ডিরেক্টর আসার পর থেকে এরকম একটা কানাঘুষা শুনছিলেন। সেটা যে সাপ্লাইয়ারের কানেও গেছে? অবাক ব্যাপার!

জাকের সাহেব ফোন রেখে আরাম করে বসলেন। আরাম হলো না। আবার খোঁচাটা খেলেন। এবার উঠে দাড়িয়ে চেয়ারটার দিকে তাকালেন। অবাক করা ব্যাপার! এতদিন এই চেয়ারটাতে বসেও কখনও এভাবে জড়বস্তুটাকে দেখেননি। এখন মনে হচ্ছে জড়পদার্থটারও প্রাণ আছে। খোঁচা দিয়ে সেটা জানান দিচ্ছে। চেয়ারটার আর কি দোষ। যখন যার, তখন তার। যতদিন এই চেয়ারে, ততদিন চেয়ারের মূল্যায়ন। এতদিন ভেবেছেন, চেয়ারে কি এসে যায়! চেয়ারে যে বসে সেই আসল। চেয়ার স্রেফ জড়ো পদার্থ। আর তাই ভেবে কখনো সামান্য কাঁটাটাকে মেরামত করেননি। সেই কাটা এখন গলার কাটার মত বিধছে।

জাকের সাহেবকে অফিস থেকে রিটায়ারমেন্ট দেয়া হলো। কতকটা জোর করেই। পুরানো মতে, তার আরো কয়েকবছর থাকার কথা। কিন্তু নতুন ডেকোরমে নতুন বস পুরানোদের ছাটাই করতে ব্যস্ত। তার দিয়েই বোধ হয উদ্ধোধন হলো। ভেবেছিলেন তার মত একজন ব্যক্তিত্ব অফিসে থাকাতে মালিকপক্ষ কৃতার্থ হবে। তা হলো না। বিদায় করে দিল। কেউ টু ফা করল না। অধস্থনরা তার পক্ষে কোন সাড়াশব্দই করল না। সবার মধ্যেই কেমন যেন একটা গা ছাড়া ভাব। তিনি নিজে কোন দিন ইউনিয়ন টিউনিয়নের দিকে নজর দেননি। ইউনিয়নও তার কোন খোজ করল না। একটা প্রতিবাদ সভাও হলো না। তার নিচের স্টাফরা কোনরকম স্ট্রাইক টাইক দুরের কথা, একটা লিখিত প্রতিবাদও দাখিল করল না।

দায়সারা গোছের একটা ফেয়ারওয়েল অনুষ্ঠান হলো। সেখানেই তিনি লোকটাকে দেখলেন। লোক না বলে ছেলে বলাই ভাল। তার বড়মেয়ের জামাইও বোধ হয় ছেলেটার বয়সী হবে। পুরো ফেয়ারওয়েল পার্টি সেই সামাল দিল। অথচ তিনি নিজে কখনও অধস্থনদের ফেয়ারওয়েলে গলা কাঁপিয়ে দুটো কথা বলেননি। সে সময় তার ছিল না। নানারকম ঘুষঘাসের গ্রুপিং লবিংয়ে সে সময়টা ব্যস্ত ছিলেন।

ছেলেটাকে ওভাবে তারিয়ে তারিয়ে দেখার কারণ, কাল থেকে এই ছেলেটাই তার চেয়ারে বসবে। সবে জয়েন করেছে, তা না। আগেই ছিল। নিচতলার খুপরির মত ঘরের থেকে নিজের কাজ করে গেছে। নিচে নেমে সেদিকে উঁকি দেয়ার কথা কখনও তার মনে আসেনি।

ফেয়ারওযেল থেকে বের হয়ে আসার সময় ছেলেটা একেবারে তার সাথে অফিসের গেটের বাইর পযর্ন্ত এলো। ‘স্যার, যখন মন চাইবে অফিসে চলে আসবেন। কাজের জন্য ওই চেয়ারটাতে আমি বসছি। আপনি এসে যখন খুশি বসবেন স্যার। এ্যাই ট্যাক্সি যাবে?’ শেষ কথাটা একটা খালি ট্যাক্সিওযারার উদ্দেশ্যে। ট্যাক্সিওয়ালা দাড়াল না।

জাকের সাহেবের টনক নড়লো। আজ আর অফিসের কালো উচু গাড়ি তাকে বাড়ি দিয়ে আসবে না। বাংলোটাও এই মাসে হস্তান্তর করতে হবে। উঠতে হবে ভাড়ার ফ্লাটে। অফিসের গাড়ি, বাড়ি, টেলিফোন, এয়ারকন্ডিশন সব ফেরত নিয়ে নেবে।

তিনি ছেলেটার হাত ধরে নরোম স্বরে বললেন, ‘ঠিক আছে। আমি ট্যাক্সি ঠিক করে নিতে পারব।’ নিজের গলার স্বর শুনে তিনি নিজেই চমকে উঠলেন। কালকের সেই রাশভারী গলা একদিনেই মিনমিনে হয়ে গেছে। এখন মিনমিনে জীবনযাপনের প্রস্তুতি নিতে হবে। চাকরি থেকে ছাটাই না হলে পেনসনের একটা বন্দোবস্থ হয়ে যেতো। কিছু নগদ টাকা মিলেছে। গোল্ডেন হ্যান্ডশেক। কিন্তু সেই সোনা পানি হতে সময় লাগবে না। অফিস থেকে বের হয়ে এসে দুপুরের রোদে ট্যাক্সি খুজতে লাগলেন।

মাসখানেক কেটে গেল। অফিস থেকে তাকে কেউ একটা ফোনও করল না। বড় অস্থির অস্থির লাগতে লাগল। সবাইকে তাকে এভাবে ভুলে যেতে পারে। তিনি কি এই অফিসের জন্য কিছুই করেননি? একদিন কি মনে করে অফিসে গেলেন। ঢোকবার মুখেই প্রথম ধাক্কাটা খেলেন। দারোয়ান টুলে বসে বিড়ি ফুকছিল। তাকে দেখে অন্যমনস্ক ভাব করে বিড়ি ফুকেই যেতে লাগল। সেলাম দেয়া দুরে থাক, উঠে দাড়াল না পর্যন্ত।

জাকের সাহেব ভিতরের দিকে খানিকটা ঢুকে আবার বের হয়ে এলেন। দারোয়ানের দিকে তাকিয়ে মুখের কোণে একটু ব্যঙ্গাত্বক হাসি টেনে বললেন, ‘কি ছগীর মিয়া, কি খবরটবর?’

দারেয়ান এবার বিড়ি ফেলে উঠে দাড়ালো ঠিকই। কিন্তু কোন উত্তর না দিয়ে হুঁ করে একটা জান্তব শব্দ করল। তিনি চমকে উঠলেন! শব্দটা তার এত চেনা!
জাকের সাহেব অফিস থেকে বেরিয়ে এলেন। আর কোনদিন এই অফিসের দিকে পা বাড়াবেন না মনে মনে এরকম একটা প্রতিজ্ঞা করে তৃপ্তি পেলেন।

প্রতিজ্ঞা রাখতে পারলেন না। একদিন নটার দিকে ব্যস্ত অফিস সময়ে একটা ইলেকট্রিক শেভার কেনার জন্য দোকানের সামনে দাড়িয়েছিলেন। ঢুকবেন, এই মুহুর্তে ঘ্যাস করে একটা গাড়ি দাড়াল তার পায়ের পাশে।

গাড়ি দেখে চমকে উঠলেন। এতদিন এই গাড়িতেই চড়েছেন তিনি। ড্রাইভার নামার আগেই পেছন থেকে দরজা খুলে নেমে এলো কামরান। ড্রাইভারও নেমেছে। কামরান ড্রাইভারের হাতে একটা প্যাকেট দিয়ে বলল, ‘রমজান, তুমি চট করে তোমার মেয়েকে হাসপাতাল থেকে দেখো এসো। জোর করে হলেও ফলটল খাইয়ো। আমি স্যারের সাথে কথা বলে গাড়ি নিয়ে অফিসে যাচ্ছি।’

জাকের সাহেব রমজানের চোখ জলে চিকচিক করতে দেখলেন।

কামরান এসে তার হাত জোড় করে ধরে বলল, ‘স্যার, আমার সাথে অফিসে চলেন। গতদিন আপনি অফিসের ভেতরে ঢুকেও আবার বেরিয়ে এসেছেন। দেখে আমার খুব খারাপ লেগেছে স্যার।’

জাকের সাহেব প্রবল আপত্তিতে না না করতে লাগলেন। কামরান শুনল না। গাড়িতে ওঠাল। কামরান নিজেই ড্রাইভিং সিটে বসল। ড্রাইভিং সিটে বসার কথা তিনি কল্পনাও করেননি।

অফিসের সামনে গাড়ি থামল। দারোয়ান ছুটে এসে সেলুট দিয়ে গাড়ির পাশে দাড়াল। কামরান দারোয়ানের সালামের উত্তর দিয়ে হাসিমুখে জিজ্ঞেস করল, ‘তোমার মেয়ের বিয়ের ডেট ঠিক হয়ে গেছে?’

দারোয়ান একগাল হেসে লাজুক মুখে বলল, ‘স্যার, আপনাদের দোয়ায়। ভাল ছেলে পাইছি। দোকান আছে। ড্রাইভিং শিখতাছে।’

‘ঠিক আছে। বিয়েটা হয়ে যাক। পরে পাঠিয়ে দিও। আর শোন, তুমি যে আবেদন করেছিল, সেই বাবদ চেয়ারম্যান স্যারকে বলে আমি সবাইকে রাজি করিয়েছি। মেয়ের বিয়ে নিয়ে তুমি নিশ্চিন্ত থাক।’

জাকের সাহেব দারোয়ানের মুখের দিকে তাকালেন। এরকম আনন্দ উজ্জল মুখ তিনি তার চাকরি জীবনে দেখেননি। এই দারোয়ানের যে মেয়ে আছে বা এদেরও যে ছেলেমেয়ে থাকতে পারে, তাদের বিয়েশাদি দিতে হয়, তা নিয়ে কখনো মাথা ঘামাননি।

কামরানের সাথে হেঁটে হেঁটে তার পুরানো অফিস ঘরের দিকে যেতে লাগলেন। কামরান লিফট ব্যবহার করল না। সবার সাথে দেখা করে যেতে হয় বলে হেটেই ওঠে।

অফিস রুমে হাত ধরে টেনে নিয়ে এসে কামরান সেই চেয়ারটা দেখিয়ে বলল, ‘আপনি আপনার চেয়ারেই বসুন স্যার। যতক্ষণ আপনি এ ঘরে আছেন, এই চেয়ারে আপনিই বসবেন।’

জাকের সাহেব মুখে আপত্তি করলেন, ‘আরে না না, তাই হয় নাকি? তুমি বসো। আমি…; কথা শেষ করতে পারলেন না, বেয়ারা এলো। বেল টিপতে হলো না। কামরান বেয়ারার সাথে বেরিয়ে যেতে যেতে বলল, ‘স্যার একটু বসুন, আমি এই যাব আর আসব।’

কামরান বেরিয়ে যেতেই চেয়ারটার উপর নজর গেল জাকের সাহেবের। সেই চেয়ারটাই। তার মানে সাপ্লাইয়ারের সাথে নতুন কোন ডিল করেনি কামরান। পুরানোটাতে কাজ চালাচ্ছে।

পায়ে পায়ে হেটে গেলেন চেয়ারের দিকে। এদিক ওদিক তাকিয়ে ধপ করে বসে পড়লেন চেয়ারে। আশ্চর্য! এই প্রথমবার কোন কাটার খোচা খেলেন না। পাছাটা উচিয়ে বেশ আয়েশ করে চেপেচেপে বসলেন। নাহ, কোথাও কোন খোচা লাগছে না। পাছাটা উচিয়ে আস্তে আস্তে গদির চারিদিকে হাত বোলালেন। কোথাও কাটার অস্থিত্ব নেই। কোনকালে যে কোথায় ছিল সেটাও মনে হচ্ছে না।

তিনি পেছন দিকে ফিরে হাতড়ে হাতড়ে মরিয়া হয়ে কাটাটা খুজতে লাগলেন।

‘স্যার, কি কিছু খুজছেন?’

কামরানের ডাকে সামনে ফিরে লজ্জিত হলেন। লজ্জিত স্বরেই বললেন, ‘না মানে..চেয়ারটার এই খানে একটা কাটা বের হয়ে থাকত…’

কামরান সরল হাসি হেসে বলল, ‘হ্যা স্যার। প্রথম দিনেই খোচাটা খেয়েছিলাম। নিজ হাতে সারিয়ে নিয়েছি স্যার। ওরকম টুকটাক কাজে অফিসকে পেরেশানিতে রাখার তো কোন মানে হয় না স্যার।’

অফিস থেকে বের হতে হতে জাকের সাহেব গোলমালটা ধরতে পারলেন।

বিশ বছর পরের কথা। জাকের সাহেব মৃত্যুশয্যায়। হাসপাতালের সাদা বিছানায়। কেউ দেখতে আসে না। খোজখবরও করে না। স্ত্রী গত হয়েছে। ছেলেমেয়েরা হাসপাতালের সাথে বন্দোবস্ত করে হাপ ছেড়ে বেচেছে। শুধু মাঝে মধে কামরান দেখতে আসে। কামরান দেখতে এলো। ‘স্যার, শুনেছেন কিনা জানি না, আমি অফিসকে ছেড়ে আসতে চেয়েছিলাম। ওরা আমাকে ছাড়ছে না। আমাকে রাখার জন্য অফিসে হাঙ্গার স্ট্রাইক চলছে। কি যে যন্ত্রণা! আবার বোধ হয় অফিসে ফিরে যেতে হবে!’

সারাবাংলা/এসবিডিই/এএসজি

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন