বিজ্ঞাপন

পথে হারানো সোনার অলংকার ৬ দিন পর ফিরে পেলেন প্রবাসী

July 17, 2022 | 11:05 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: মুন্সীগঞ্জের মো. রিপন। ১৭ বছর ধরে থাকেন প্রবাসে। পরিবারের সঙ্গে ইদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে গত ১০ জুলাই ইদুল আযহার দিন দুবাই থেকে দেশে ফেরেন তিনি। সকাল ১০টায় শাহজালাল বিমানবন্দরে সালাম এয়ারের বিমানটি অবতরণের পর খুশিতে আত্মহারা ছিলেন রিপন। তবে এই খুশি বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। কারণ বিমানবন্দর থেকে বাড়ি যাওয়ার পথে যাত্রাবাড়ীর সাইনবোর্ড এলাকায় হারিয়ে ফেলেন তিল তিল পরিশ্রমের টাকায় কেনা ১০০ গ্রাম ওজনের সোনার অলংকার ও দু’টি পাসপোর্ট। এগুলো হারিয়ে আনন্দ উপভোগের বদলে দিশেহারা হয়ে যান রিপন।

বিজ্ঞাপন

প্রবাসী রিপনের সোনার অলংকার এবং পাসপোর্ট হারানোর ঘটনা এখানেই শেষ হতে পারতো। কিন্তু না; সব নাটকীয়তার শেষ হয় শনিবার (১৬ ‍জুলাই) বিকেলে। এদিন তিনি হারানো সোনার অলংকার এবং দুটি পাসপোর্ট ফিরে পেয়েছেন। বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) চৌকস কর্মকর্তাদের তদারকিতে রিপন তার হারানো সামগ্রী ফিরে পান।

বিমানবন্দরেই সারাবাংলার এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় রিপনের। তিনি বলেন, ‘১৫ বছর সৌদি আরবে ছিলাম। আর গত দুই বছর ধরে দুবাইয়ের একটি কোম্পানিতে চাকরি করছি। ইদ উপলক্ষে ১০ জুলাই বাংলাদেশে আসি। বিমানবন্দরের ভেতরের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে বিমানবন্দর থেকেই একটি সিএনজি ভাড়া করে সাইনবোর্ড পর্যন্ত যাই। এরপর সাইনবোর্ড থেকে অন্য একটি সিএনজিতে করে গ্রামের বাড়ি মুন্সীগঞ্জের উদ্দেশে রওনা হই। কিন্তু মাঝপথে গিয়ে মনে পড়ে সিএনজিতে নিজের জ্যাকেটটি ফেলে গিয়েছি। যার মধ্যে রয়েছে ১০০ গ্রাম সোনার অলংকার (যার দাম প্রায় ছয় লাখ টাকা) এবং নিজের দুটি পাসপোর্ট। তখন দিশেহারা হয়ে সাইনবোর্ড গিয়ে অনেক খোঁজাখুঁজি করলেও সিএনজি চালকের দেখা পাইনি। পরে বিমানবন্দরে এসে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন অফিসে অভিযোগ করি।’

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘ইদের দিন ছিল। কিন্তু সবাই আমার কথাগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনে আমাকে আশ্বস্ত করেন, আমি আমার হারানো সামগ্রী ফিরে পাব। কিন্তু কখনো চিন্তা করিনি বাংলাদেশের পুলিশ তথা বিমানবন্দর এপিবিএন এতটা আন্তরিকভাবে আমার সামগ্রী এক সপ্তাহ না যেতেই উদ্ধার করে দেবে। আমাকে শুক্রবার বিকেলে ফোন করে বলা হয় আমার সোনার অলংকার এবং পাসপোর্ট পাওয়া গেছে। সেগুলো নিতেই আজ এখানে এসেছি এবং বুঝে নিয়েছি। আমি বিমানবন্দর এপিবিএন’র সকল কর্মকর্তা এবং সদস্যদের স্যালুট জানাচ্ছি। কারণ, সোনার অলংকারের চেয়ে পাসপোর্ট আমার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এখন দুবাই ভিসা বন্ধ। পাসপোর্ট না পেলে আমার সব কিছু শেষ হয়ে যেত। আমি সত্যিই অভিভূত।’

কীভাবে প্রবাসী রিপনের সোনার অলংকার এবং পাসপোর্ট উদ্ধার করা হলো?— এমন প্রশ্ন করতেই বিমানবন্দর আর্মড পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিয়াউল হক জিয়া সারাবাংলাকে বলেন, ‘গত ১০ জুলাই রিপন সোনার অলংকার এবং পাসপোর্ট সিএনজিতে রেখে নেমে যান সাইনবোর্ডে। পরে তিনি বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়ে মাঝ পথে গেলে মনে পড়ে যে, তিনি সিনএনজিতে সবকিছু ফেলে এসেছেন। এর পর আমাদের কাছে এলে আমরা অভিযোগ লিপিবদ্ধ করি। প্রথমে বিমানবন্দর থেকে ভাড়া করা সিএনজির নাম্বার শনাক্ত করা হয়। এরপর সিএনজির মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করে চালকের নাম্বার সংগ্রহ করা হয়। এরপর সিএনজি চালকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। ওই সিএনজি চালক প্রথমে সাড়া না দিলেও পরে যখন আমরা তাকে আশ্বস্ত করি যে, প্রকৃত মালিককে হারানো সামগ্রী বুঝিয়ে দেওয়া হবে। তখন তিনি সাড়া দেন।’

জিয়াউল হক বলতে থাকেন, ‘সিএনজি চালক বুদু মিয়া জানান, প্রবাসী রিপনের সোনার অলংকার এবং পাসপোর্ট তার গ্রামের বাড়ি জামালপুরে রয়েছে। যদিও বুদু মিয়া রাজধানীর কুড়িলে থাকতেন। এরপর তিনি গ্রামের বাড়ি থেকে প্রবাসী রিপনের সোনার অলংকার এবং দুটি পাসপোর্ট নিয়ে বিমানবন্দরে এসে বুঝিয়ে দেন।’

বিজ্ঞাপন

সিএনজি চালকের প্রতি প্রবাসী রিপনের কোনো অভিযোগ না থাকায় তাকে সসম্মানে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানান এপিবিএন’র এই কর্মকর্তা।

সারাবাংলা/এসজে/পিটিএম

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন