বিজ্ঞাপন

বিদ্যালয়ের সভাপতি নির্বাচন: ২ ভোটারকে পেটালেন এমপি’র অনুসারীরা

July 24, 2022 | 10:50 pm

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

মানিকগঞ্জ: মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে ঝিটকা আনন্দমোহন উচ্চ বিদ্যালয়ে সভাপতি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমের পক্ষে স্লোগান দিয়ে উপজেলা ও জেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা দু’জন অভিভাবক সদস্যকে মারধর করেছেন।

বিজ্ঞাপন

রোববার (২৪ জুলাই) পুলিশ ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সামনেই এই ঘটনা ঘটে। পরে দুই পক্ষের উত্তেজনাকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন সিংগাইর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রিয়াজুল হকসহ র‌্যাবের সদস্যরা।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটায় প্রিজাইডিং অফিসার উপজেলা শিক্ষা অফিসের সুপারভাইজার কামরুল ইসলাম পরে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পদের নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেন।

এর আগে, গত ১৮ জুলাই ঝিটকা আনন্দ মোহন উচ্চ বিদ্যালয়ে অভিভাবক সদস্য পদে ভোটের মধ্য দিয়ে চার জন অভিভাবক সদস্য নির্বাচিত হন।

বিজ্ঞাপন

স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পদে নির্বাচন ঘিরে কয়েক দিন ধরেই হরিরামপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক দেওয়ান সাইদুর রহমানের সমর্থকদের সঙ্গে সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমের সমর্থকদের উত্তেজনা চলছিল। আজ রোববার ছিলো সভাপতি পদে নির্বাচন।

এই নির্বাচনে সভাপতি পদে প্রার্থী হন দেওয়ান সাইদুর রহমান ও সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম। তবে এদের কেউই সশরীরে উপস্থিত না থাকলেও একটি পক্ষ সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমের নাম ঘোষণা করেন। অপরপক্ষ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক দেওয়ান সাইদুর রহমানের নাম প্রস্তাব করেন।

এই নির্বাচনকে ঘিরে রোববার দুপুরর পর পর দুই পক্ষের লোকজন বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে জড়ো হতে থাকে। পুলিশ দুই পক্ষের লোকজনকে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে বের করে দেওয়ার সময় পুলিশের সঙ্গে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীতের বাগবিতণ্ডা সৃষ্টি হয়। এরপর বেলা তিনটার দিকে ৯ জন সদস্যের মধ্যে ৭ জনের উপস্থিতিতে উপজেলা শিক্ষা অফিসের সুপারভাইজার প্রিজাইডিং অফিসার কামরুল ইসলাম ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচনের জন্য সভা শুরু করেন।

বিজ্ঞাপন

এসময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইশতিয়াক আহমেদ অভিভাবক সদস্য মহিউদ্দিন মঞ্জু ও মিজানুর রহমানকে বিদ্যালয়ে তৃতীয় তলা থেকে নিচ তলার সভা কক্ষে নিয়ে আসার সময় জেলা ও উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা স্লোগান দিয়ে দুই অভিভাবক সদস্যকে ছিনিয়ে নিয়ে ব্যাপক মারধর করেন। পরে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে বিদ্যালয়ে একটি কক্ষে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যান।

আধাঘণ্টা পর হরিরামপুর উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা তপসী রাবেয়া বিদ্যালয়ে এসে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীসহ বহিরাগতদের বাইরে বের করে দেন। পরবর্তীতে প্রিজাইডিং অফিসার সভা শুরু করলেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার কারণে নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেন।

এদিকে ছাত্রলীগের হাতে দু’জন অভিভাবক সদস্যের মারধরের শিকার হওয়ার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাজিদুল ইসলাম।

হরিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান সাইদুর রহমান বলেন, ‘কয়েকদিন ধরেই সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমের পক্ষের লোকজন ও পুলিশ ম্যানেজিং কমিটির ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিয়ে আসছে। নির্বাচনের দিন ম্যাজিস্ট্রেটে ও পুলিশের উপস্থিতিতে সংসদ সদস্যের লোকজন দুইজন অভিভাবক সদস্যকে মারধর করেন। নির্বাচনের পরিবেশ না থাকায় প্রিজাইডিং অফিসার নির্বাচন স্থগিত করেছেন।’

বিজ্ঞাপন

সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম জানান, স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও নির্বাচিত সদস্যরা তাকে প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব দেন। কিন্তু তিনি নিজে ওই বিদ্যালয়ে সভাপতি পদে প্রার্থিতা ঘোষণা করেননি। বিদ্যালয়ে দুর্নীতি ঢেকাতে হয়তো তার নাম অন্য কেউ প্রস্তাব করতে পারে বলেও আশঙ্কা জানান তিনি।

সারাবাংলা/এমও

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন