‘সাবধান, বন্দুকের নল ঘুরেও যেতে পারে’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: হরতালের সমর্থনে এক সমাবেশে বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেছেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার ‘জনগণের পকেট কেটে সরকার সামরিক-বেসামরিক আমলা পুষছে। আমলার গাড়ির তেলের টাকা কমায়নি, পুলিশের খরচ কমায়নি, বাহিনীর খরচ কমায়নি, অথচ তেলের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে, সারের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। লাথিটা মারল জনগণের পিঠে। আবার জনগণ ক্ষুব্ধ হয়ে রাস্তায়ও নামতে পারবে না। সরকার যাদের খরচ না কমিয়ে পুষছে, তাদের বন্দুকের নল জনগণের দিকে তাক করা। সরকারকে বলতে চাই- সাবধান, বন্দুকের নল যেকোন সময় ঘুরেও যেতে পারে।’

সোমবার (২২ আগস্ট) বিকেলে চট্টগ্রাম নগরীর সিনেমা প্যালেস মোড়ে হরতালের সমর্থনে জেলা বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমাবেশ ও প্রচারণায় অংশ নেন রুহিন হোসেন প্রিন্স।

সমাবেশে বামনেতা প্রিন্স বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে কর্মঘণ্টা কমিয়ে অফিসের সময় নির্ধারণে সরকারের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত অফিস চলবে। রাত ৮টার মধ্যে দোকানপাট বন্ধ করতে হবে। রাত ১০টার মধ্যে খাবারের দোকান বন্ধ করে দিতে হবে। ১১টার মধ্যে সবাইকে ঘরে ফিরে যেতে হবে। আমরা বামপন্থীরা ২৫ আগস্ট সকাল ৬টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত হরতাল আহ্বান করেছি। এখন দেখি, সরকারও হরতাল ডেকে দিয়েছে। আমরা হরতাল ডাকলাম ১২টা পর্যন্ত আর সরকার ডেকে দিল বিকেল তিনটার পর থেকে।’

লুটপাট বন্ধ হলে দেশের দূরবস্থা থাকবে না মন্তব্য করে প্রিন্স বলেন, ‘আমরা যখন মানুষের পক্ষে সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলি, তখন সরকারের লোকজন উপহাস করে বলে- আপানারা এত কথা বলেন, জনগণ তো আপনাদের সঙ্গে নাই। আমরা যে কথাগুলো বলছি এগুলো কি মিথ্যা? জনগণ হয়ত সবসময় মিছিল-মিটিংয়ে আসতে পারে না। কারণ এই হাসিনা সরকার জনগণের ওপর জরুরি অবস্থা চাপিয়ে দিয়েছে। তাদের নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা, মিছিল-মিটিং করবে কখন?’

অধিকার আদায়ে জনগণকে রাজপথে নামার আহ্বান জানিয়ে বামনেতা প্রিন্স বলেন, ‘আসুন রুখে দাঁড়াই, হা-হুতাশ করে লাভ নাই। ওরা আমাদের হা-হুতাশকে পাত্তা দেবে না, বরং দুর্বলতা মনে করবে। গর্জে উঠতে হবে। দেশকে মুক্তিযুদ্ধের ধারায় ফিরিয়ে নিতে হবে।’

সমাবেশ শেষে ট্রাক মিছিল নিয়ে নগরীর লালদিঘীর পাড়, আন্দরকিল্লা, জামালখান, চকবাজারসহ দশটি পয়েন্টে হরতালের প্রচারণা চালান বামজোটের নেতারা। এসময় হরতালের প্রচারপত্র বিলির পাশাপাশি পথসভা অনুষ্ঠিত হয়।

চট্টগ্রামের বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বাসদ (মার্কসবাদী) নেতা সফি উদ্দিন কবির আবিদের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন- সিপিবি চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি অশোক সাহা, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর ও সহকারী সাধারণ সম্পাদক নুরুচ্ছাফা ভূঁইয়া, বাসদ নেতা মাহিন উদ্দিন এবং বাসদ (মার্কসবাদী) চট্টগ্রাম জেলার সদস্য জাহেদুন্নবী কনক।

সারাবাংলা/আরডি/এমও