আধুনিক সিলেট গড়ার অঙ্গীকার জাপার প্রার্থী বাবুলের

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

সিলেট: সিলেট সিটি নির্বাচনে জাপার মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল ইশতেহার ঘোষণা অনুষ্ঠানে বলেন, ‘উড়ে এসে জুড়ে বসা কেউ এই নগরের সমস্যার সমাধান করতে পারবে না। যে নগরের অলিগলিই চেনে না তার পক্ষে নগরবাসীর প্রত্যাশা পূরণ কতটুকু সম্ভব সেই বিচারের ভার নগরবাসীর ওপর ছেড়ে দিলাম।’

আধুনিক সিলেট গড়ার অঙ্গীকারে ২১ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেছেন সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল।

রোববার (১৮ জুন) বিকেলে নগরের কুমারপাড়ায় নিজের প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে তিনি এই ইশতেহার ঘোষণা করেন। এ সময় দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

নির্বাচিত হলে সিলেটকে নাগরিক-বান্ধব, শিল্পবান্ধব, যানজটমুক্ত, পরিবেশ-বান্ধব, জলাবদ্ধতামুক্ত, সুপরিকল্পিত আবাসনের নগর হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়ার কথা ইশতেহারে তুলে ধরেছেন লাঙ্গলের এই প্রার্থী।

ইশতেহারে বাবুল বলেন, ‘সিলেট সিটি করপোরেশনকে সর্বজনীন ও দায়িত্বশীল একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলবে। নগরের উন্নয়নে করপোরেশনের সঙ্গে নাগরিকদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হবে।

‘নগর উন্নয়নে স্থায়ী কমিটিগুলোর সঙ্গে স্ব স্ব ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ নাগরিকদের সম্পৃক্ত করা হবে। আমি মেয়র নির্বাচিত হলে নগর ভবনকে আধুনিক ও ঐতিহ্যের মিশেলে একটি দৃষ্টিনন্দন নগর ভবনে রূপান্তর করব।

‘ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং ওয়ার্ডের বিশিষ্ট নাগরিকদের সমন্বয়ে ওয়ার্ডভিত্তিক উন্নয়ন ও সন্ত্রাসবিরোধী নাগরিক কমিটি গঠন করা হবে। যে কমিটি এলাকার উন্নয়ন ও শান্তি-শৃঙ্খলা নিশ্চিতে কাজ করবে।’

নগরের সেবামূলক খাতগুলোকে আরও শক্তিশালী করা হবে জানিয়ে ইশতেহারে বাবুল বলেন, ‘এজন্য স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেওয়া হবে। একজন মেয়র ৫ বছরের জন্য নির্বাচিত হন। তবে তাকে অন্তত সামনের ১০০ বছর মাথায় রেখে পরিকল্পনা নিতে হয়। যাতে নগরবাসী কাঙ্ক্ষিত সুফল পেতে পারেন। আমি সেটিই করতে চাই।’

‘সিলেট একটি ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা। ভূমিকম্পের মতো দুর্যোগ থেকে রক্ষা পেতে সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ভবন নির্মাণের অনুমতি প্রদানে যথাযথভাবে তৈরি করা হচ্ছে কি-না সেটা কঠোরভাবে নিশ্চিত করা হবে।’

তিনি বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তা তুলে ধরার জন্য জাদুঘর ও আর্ট গ্যালারি স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হবে। একটি সুপরিকল্পিত সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স গড়ে তুলব। সেখানে নাট্যমঞ্চ, সিনেপ্লেক্সসহ সাংস্কৃতিক চর্চার সব ধরণের সুবিধা থাকবে। পাশাপাশি পর্যটনের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি এবং পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণার আগে নজরুল ইসলাম বাবুল বলেন, ‘একটি পরিকল্পিত নগরের ক্যানভাস অনেক বড়। শুধু রাস্তাঘাট আর ড্রেন করলেই নগরটি পরিকল্পিত হয়ে ওঠে না। সিলেট নগরের এখনও অনেক সমস্যা রয়েছে। যানজট, জলাবদ্ধতা ছাড়াও অনেক কিছু করার বাকি আছে।

‘এছাড়া বর্তমানে সিটি করপোরেশনের আয়তন অনেক বেড়েছে। ২৭টি ওয়ার্ড থেকে হয়েছে ৪২টি ওয়ার্ড। বর্ধিত এলাকায় অনেক সমস্যা রয়েছে। অনেক পিছিয়ে রয়েছে নতুন এলাকাগুলো। সুতরাং এই নগরকে যে বা যারা ভালোভাবে জানে-বোঝে তার বা তাদের হাতেই নগর উন্নয়নের দায়িত্ব দেওয়া উচিত।’

এ সময় বাবুল বলেন, ‘আমি কথা দিচ্ছি, আপনারা আমাকে ভোট দিয়ে মেয়র নির্বাচিত করলে সিলেটকে একটি আধুনিক মহানগর হিসেবে গড়ে তুলব। নগরবাসীর নিরাপত্তা, যোগাযোগের উপযোগী নতুন নতুন রাস্তা, ফুটপাত নির্মাণসহ যানজট নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ নেব।’

এর আগে শনিবার সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ২১ দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন। ইশতেহারে তিনি গ্রিন-ক্লিন-স্মার্ট সিলেট গড়ার অঙ্গীকার করেন।

সারাবাংলা/একে