বিজ্ঞাপন

পরীক্ষায় বসতে চবি ভিসি’র সই জাল!

September 13, 2023 | 10:17 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. শিরীণ আখতারের সই জাল করা সুপারিশসহ প্রাণীবিদ্যা বিভাগের পাঁচ শিক্ষার্থীর একটি আবেদন নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। আবার এর মধ্যে এক শিক্ষার্থী দায় এড়াতে প্রক্টর বরাবর আরেকটি চিঠি দিয়ে আরেকদফা জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

বিজ্ঞাপন

সার্বিক ঘটনা তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এক সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে। তবে একমাসেও তদন্ত শেষ হয়নি।

জানা গেছে, গত ১২ আগস্ট প্রাণীবিদ্যা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়ার কাছে ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষের ‍তৃতীয় বর্ষের পাঁচ শিক্ষার্থীর যৌথ সইয়ে একটি আবেদন জমা পড়ে। ৮ আগস্ট তারিখ উল্লেখ থাকা উপাচার্য বরাবরে লেখা ওই আবেদনে নিয়মিত ক্লাসে অনুপস্থিত এসব শিক্ষার্থী ‘মাতৃত্বকালীন ও অসুস্থতাজনিত’ কারণে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের আরজি জানান।

সবুজ কালিতে ‘সভাপতি, প্রাণীবিদ্যা বিভাগ’ লিখে উপাচার্যের সইও আছে আবেদনে। অর্থাৎ উপাচার্য আবেদনটি প্রাণীবিদ্যা বিভাগের সভাপতির কাছে প্রেরণ করেছেন এমন প্রতীয়মান হয়। পাঁচ শিক্ষার্থীর মধ্যে একজন সেটি প্রাণীবিদ্যা বিভাগের সভাপতির কার্যালয়ে জমা দেন।

বিজ্ঞাপন

জানতে চাইলে অধ্যাপক মনজুরুল কিবরিয়া সারাবাংলাকে বলেন, ‘আবেদনটি দেখেই আমাদের সন্দেহ হয়। কারণ, উপাচার্য মহোদয় যদি কোনো চিঠি পাঠান সেটি উনার অফিসের মাধ্যমে আসার কথা। কোনো ছাত্র সেটি এনে জমা দেওয়ার তো সুযোগ নেই। তখন আমরা বিষয়টি উপাচার্যের দফতরে মৌখিকভাবে জানাই। উনারা খোঁজ নিয়ে জানালেন, এমন কোনো চিঠি প্রাণীবিদ্যা বিভাগে পাঠানো হয়নি।’

‘এরপর প্রথমে হোয়াটস অ্যাপে এবং পরে অফিসিয়ালি চিঠির কপি উপাচার্যের দফতরে পাঠানো হয়। উনারা যাচাইবাছাই করে জানালেন, ভিসি ম্যাডামের সইটিও জাল। তখন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা আমাদের অফিসিয়ালি জানানো হয়।’

এর মধ্যে ১৭ আগস্ট পাঁচ শিক্ষার্থীর মধ্যে আনোয়ার হোসেন নামে এক ছাত্র প্রক্টর বরাবর একটি আবেদন করেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন, উপাচার্যের নকল সইসহ আবেদনের বিষয়ে তিনি অবগত নন, এর সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। প্রক্টর সেই আবেদন যাচাই-বাছাইপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রাণীবিদ্যা বিভাগের সভাপতির কাছে পাঠান।

বিজ্ঞাপন

জানতে চাইলে অধ্যাপক মনজুরুল কিবরিয়া সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রক্টরের চিঠি পাবার পর আমরা দ্রুত আমাদের অফিসের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ চেক করি। দেখা গেছে, শিক্ষার্থী আনোয়ার হোসেনই সশরীরে গিয়ে আবেদনটি আমার কার্যালয়ে জমা দিয়েছিলেন। প্রক্টরের কাছে মিথ্যাচার করার বিষয়টি তথ্যপ্রমাণসহ আমরা পাঠাই এবং তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অফিসিয়ালি চিঠি দিই। সামগ্রিক বিষয়ে তদন্ত চলছে বলে শুনেছি। উপাচার্য, রেজিস্ট্রার ও প্রক্টরের কার্যালয় থেকে আমাদের আর কোনো আপডেট জানানো হয়নি।’

জানা গেছে, আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. নির্মল কুমার সাহা উপাচার্যের নকল সইসহ জালিয়াতির বিষয় তদন্ত করছেন।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. নুরুল আজিম শিকদার সারাবাংলাকে বলেন, ‘ভিসি ম্যামের সই জালিয়াতির একটি ঘটনা ঘটেছে। তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল হয়েছে কি না সেটা রেজিস্ট্রারের কার্যালয় জানবে।’

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কে এম নুর আহমদকে একাধিকবার ফোন করেও সাড়া পাওয়া যায়নি।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন