বিজ্ঞাপন

যেমন হলো বাংলাদেশের বিশ্বকাপ স্কোয়াড

September 26, 2023 | 10:01 pm

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট

সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটল। সাকিব আল হাসানকে নেতৃত্বে রেখে ঘোষণা করা হলো ভারতে অনুষ্ঠেয় আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপের বাংলাদেশ দল। তাতে স্থান হয়নি অভিজ্ঞ ওপেনার তামিম ইকবাল খানের। তবে দলে রয়েছেন আরেক অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিশ্বকাপের দলগুলোর মধ্যে শেষ দল হিসেবে স্কোয়াড ঘোষণা করে বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত কেমন হলো দলটি? দলে ব্যাটার, বোলার বা অলরাউন্ডার থাকলেন কয়জন?

তামিমকে ছাড়াই বিশ্বকাপ দল, আছেন রিয়াদ

বিশ্বকাপের স্কোয়াড বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, দলে ওপেনার রয়েছেন মাত্র দুজন— তানজিদ হাসান তামিম ও লিটন দাস। এর মধ্যে লিটন দাসের সাম্প্রতিক ফর্ম খুব একটা ভালো না গেলেও ওপেনার হিসেবে তিনি অনেকটাই অটো চয়েজ। আরেক ওপেনার তানজিদ তামিম একেবারেই নতুন। মাত্র চারটি ওয়ানডে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার ঝুলিতে।

দীর্ঘ দেড় মাসের বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বের ৯টি ম্যাচ খেলতেই হবে দলকে। সেখানে বিকল্প কোনো ওপেনার না থাকার বিষয়টি দলকে ভোগাতে পারে। তামিম ইকবালের স্কোয়াডে না থাকা এমনিতেই বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। তার সঙ্গে বিকল্প ওপেনার না থাকার ইস্যুটিও বিশ্বকাপে দলের জন্য নেতিবাচক হতে পারে। এ ক্ষেত্রে এশিয়া কাপে মেহেদি হাসান মিরাজকে মেকশিফট ওপেনার হিসেবে ব্যবহার করার অভিজ্ঞতা হয়তো টিম ম্যানেজমেন্টকে আশ্বস্ত করে থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে প্রয়োজন পড়লে সম্ভবত মিরাজকেই বিকল্প ওপেনার হিসেবে দেখা যাবে।

বিজ্ঞাপন

দুই ওপেনারকে বাদ দিলে দলে বিশেষজ্ঞ ব্যাটার রয়েছেন চারজন— নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহিদ হৃদয়, মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। শান্ত সাম্প্রতিক সময়ে রয়েছেন দুর্দান্ত ফর্মে। তাওহিদ হৃদয় ১৬ ম্যাচের ক্যারিয়ারে ৩৮ গড় রেখে মোটামুটি পারফরম্যান্স দিয়ে যাচ্ছেন। মুশফিকুর রহিমের অভিজ্ঞতা দলের বড় সম্পদ। রিয়াদ মাঝে বেশ কিছুদিন দলে ব্রাত্য হয়ে থাকলেও অভিজ্ঞতার জোরেই স্থান করে নিয়েছেন দলে। এই চারজনের সঙ্গে কাপ্তান সাকিব আল হাসানকে নিয়ে ব্যাটিং লাইনআপের টপ ও মিডল অর্ডার গঠন করা হবে। দলে সাতজন স্পেশালিস্ট ব্যাটার খেলাতে চাইলে এই পাঁচজনের সবাইকেই রাখতে হবে একাদশে। সেক্ষেত্রেও কেউ রান না পেলে বা ইনজুরিতে পড়লে কাউকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে নেওয়ার ‍সুযোগ থাকছে না টাইগার টিম ম্যানেজমেন্টের কাছে।

দলে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান তো আছেনই। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বোলিংয়েও তিনি দলের সবচেয়ে বড় ভরসার জায়গা। তার সঙ্গে রয়েছেন মেহেদি হাসান মিরাজ এবং শেখ মাহেদি হাসান। অলরাউন্ডার হিসেবে মিরাজের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন নেই। ৭ বা ৮ নম্বর পজিশনে ব্যাটিংয়ে নেমে সেঞ্চুরি এবং দলকে জেতানোর মতো পারফরম্যান্স রয়েছে তার ঝুলিতে। ওপেনিংয়ে নেমেও খুব একটা হতাশ করেননি। বোলিংয়েও তিনি ধারাবাহিক। রান চেপে ধরার পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ব্রেকথ্রু এনে দিয়ে থাকেন নিয়মিতই। তবে শেখ মাহেদির ব্যাটিং পারফরম্যান্সে বলার মতো কিছু নেই। অলরাউন্ডার মনে করা হলেও স্পেশালিস্ট স্পিনার হিসেবেই মূলত ভূমিকা রেখে থাকেন তিনি।

স্কোয়াডের তিন অলরাউন্ডারের তিনজনই স্পিনার। এর বাইরে স্পেশালিস্ট স্পিনার হিসেবে রয়েছেন বাঁহাতি নাসুম। একাদশে অধিনায়ক সাকিবের পাশপাশি ব্যাটিং গভীরতা বিবেচনায় মিরাজের স্থান সম্ভবত বেশিরভাগ ম্যাচেই নিশ্চিত থাকবে। কন্ডিশন বিবেচনায় আরও একজন স্পিনার নিতে হলে প্রতিপক্ষ অনুযায়ী সেটি হতে পারেন নাসুম কিংবা শেখ মাহেদি।

বিজ্ঞাপন

দলের সম্ভবত সবচেয়ে শক্তিশালী দিক পেস ইউনিট। পাঁচ পাঁচজন পেসার রাখা হয়েছে স্কোয়াডে। রয়েছেন অভিজ্ঞ মোস্তাফিজুর রহমান ও তাসকিন আহমেদ। তাদের সঙ্গে রয়েছেন আধা-অভিজ্ঞ শরিফুল ইসলাম ও হাসান মাহমুদ। এই চারজনই গত বছরখানেকের বেশি সময় ধরে দলের পেস ইউনিটে নিয়মিত মুখ।

এক নজরে বিশ্বকাপের দলগুলো

তাদের সঙ্গে ইবাদত হোসেন ছিলেন অটো চয়েজ। তবে ইনজুরির কারণে তিনি ছিটকে গেছেন বিশ্বকাপ থেকে। তার বিকল্প হিসেবে দলে এসেছেন এশিয়া কাপে সুযোগ পেয়েই দৃষ্টি কাড়া করা তানজিম হাসান সাকিব। আনকোরা হলেও তার বোলিংয়ের লাইন-লেন্থ এবং শারীরিক আগ্রাসন বাকি পেসারদের সঙ্গে দারুণ ইউনিটে সঙ্গ দেওয়ার যোগ্য বলেই সবাই বিবেচনা করছেন।

দীর্ঘ টুর্নামেন্ট বলে পেসারদের ইনজুরি ও ফিটনেস নিয়ে বাড়তি সতর্ক থাকতে হবে দলকে। এই বিবেচনাতেই গত কিছুদিন ধরেই পেসারদের রোটেশনের ভিত্তিতে খেলানোর প্রবণতা তৈরি হয়েছে দলে। পাঁচ পেসারের ইউনিট থাকায় একাদশে তিনজন তো বটেই, চারজন পেসারকেও খেলানো সহজ হবে। কোনো পেসার ইনজুরিতে পড়লে বা পারফরম্যান্স করতে না পারলেও স্কোয়াডে থাকা বাকিরা সেই ঘাটতি পূরণ করতে সক্ষম হবেন।

গত কিছুদিন ধরেই দলের প্রধান মাথাব্যথার নাম ব্যাটিং। বোলিং ইউনিট সে তুলনায় যথেষ্ট ধারাবাহিকতা দেখিয়ে আসছে। এই বিশ্বকাপেও ব্যাটিং লাইনআপের ওপরই চ্যালেঞ্জ থাকবে নিজেদের প্রমাণ করার। আর সেখানেই ব্যাটিংয়ের বিকল্প কম থাকাটা ভোগাতে পারে দলকে। তারপরও নিশ্চয় সবার প্রত্যাশা থাকবে— সব চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করেই বিশ্বকাপে সেরা পারফরম্যান্সটাই দেখাবে টাইগাররা।

বিজ্ঞাপন

ওয়ানডে বিশ্বকাপের সবকটি ম্যাচ সরাসরি সম্প্রচার করছে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় স্যাটেলাইট টেলিভিশন জিটিভি। অনলাইন প্ল্যাটফর্ম র‍্যাবিটহোলবিডি‘তেও দেখা যাবে এবারের বিশ্বকাপ।

সারাবাংলা/টিআর/এসএস

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন