বিজ্ঞাপন

আজ দশমী, উৎসব শেষে বিসর্জনের বিষাদ

October 24, 2023 | 2:17 am

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: নবমী নিশি কেটে উঁকি দিয়েছে নতুন সূর্যালোক। তবে নিয়ে এসেছে বিষাদের ছায়া। আজ বিজয়া দশমী, পাঁচ দিনব্যাপী শারদীয় দুর্গোৎসবের শেষ দিন। চার দিন আগে ষষ্ঠীতে বোধনের মাধ্যমে যে উৎসবের শুরু, আজ দশমীতে দেবীকে বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে সেই উৎসব। থেকে যাবে কেবল আগামী বছর ফের দেবীতে মর্ত্যলোকে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা আর আশাবাদ।

বিজ্ঞাপন

গত শুক্রবার (২০ অক্টোবর) মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শুরু হয় শারদীয় দুর্গোৎসব তথা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা। তবে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষ সামিল হয়েছিলেন সে উৎসবে। আজ মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) বিসর্জনের মধ্য দিয়ে সেই আনুষ্ঠানিকতার ইতি ঘটবে।

বিজয়া দশমীর দিনের আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে রয়েছে দেবী দুর্গার দশমী বিহিত পূজা সমাপন ও দর্পণ বিসর্জন। সকাল থেকেই শুরু হয় দশমী পূজা। হয়ে যাবে মন্ত্র পাঠ, দেবী দূর্গার উদ্দেশে ফুল নিবেদন ও আশীর্বাদ প্রার্থনা।

দশমী পূজা উদ্‌যাপনের প্রধান আচারের অংশ হিসেবে নারী ভক্তরা বিভিন্ন মণ্ডপ ও মন্দিরে দুর্গার পায়ে সিঁদুর নিবেদন করেন, যা ঐতিহ্যবাহী সিঁদুর খেলার অংশ। এই আচারে দেবী দুর্গার শক্তির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে হিন্দু নারীরা একে অন্যের গায়ে সিঁদুর মাখিয়ে জীবনে সমৃদ্ধি কামনা করেন। এ দিন সন্ধ্যায় প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হবে।

বিজ্ঞাপন

দশমীতে বিসর্জনের মাধ্যমে পাঁচ দিন বাপের বাড়ি অর্থাৎ মর্ত্যলোকে কাটিয়ে দেবী ফিরবেন দেবালয়ের (স্বর্গ) কৈলাসে স্বামীর বাড়িতে। সঙ্গে থাকবে চার সন্তান লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক ও গণেশ। বিভিন্ন এলাকা থেকে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা শঙ্খ, খোল ও ঢাকের মতো বাদ্যযন্ত্রের সুরে দুর্গার স্তূতি গাইতে গাইতে প্রতিমাকে নিয়ে যাবে নদী, সেখানেই হবে বিসর্জন।

শাস্ত্রমতে, বিজয়া দশমীর দুটি তাৎপর্য। একটি দেবী দুর্গার বিজয়। অন্যটি রামচন্দ্রের বিজয়। বিজয়া দশমীর আরও একটি তাৎপর্য রয়েছে— হিমালয় রাজকন্যা দেবী দুর্গা বা পার্বতী কিংবা উমা নিজের ইচ্ছায় বিয়ে করেছিলেন দেবতা শিবকে। শিবের আবাসস্থল কৈলাস পর্বত। সেখান থেকে দেবী দুর্গা বা পার্বতী পিতৃগৃহে আসেন আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষের ষষ্ঠী তিথিতে। সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী— এই তিন দিন পিত্রালয়ে থাকার পর দশমী তিথিতে পতিগৃহ কৈলাসে প্রত্যাবর্তন করেন। কন্যাকে বিদায় জানানোর বেদনায় বিধুর-বিষাদাচ্ছন্ন হয় দশমী তিথি। তাই দশমী তিথি বিষাদের-বেদনার।

এভাবে দেবী দুর্গা হয়ে ওঠেন ঘরের মেয়ে, যে কি না নাইওরে এসে, তিন দিন থেকে চার দিনের দিন স্বামীগৃহে ফিরে যান। এভাবে দুর্গাপূজার মধ্যে বাঙালির সমাজ ও যাপিত জীবনের প্রতিফলন ঘটে।

বিজ্ঞাপন

আবার ত্রেতা যুগে লঙ্কার রাজা রাবণ রামের স্ত্রী সীতা দেবীকে হরণ করে নিয়ে গিয়েছিল। রাবণকে পরাজিত করে রামচন্দ্র পালন করেন বিজয় উৎসব। এ থেকেও পালিত হয় বিজয়া।

আবার মহিষাসুরকে বধ করতে দেবীর যে যুদ্ধ হয়েছিল, তার মধ্যে ভয়ানক যুদ্ধ হয়েছিল চার দিন। তিথির হিসেবে সেগুলো ছিল আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষের সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী ও দশমী। এ শুক্লা দশমী তিথিতে বিজয় হয়েছিল বলে আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষের দশমী তিথিকেই বলা হয় বিজয়া দশমী।

সারাবাংলা/আরএফ/টিআর

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন