বিজ্ঞাপন

‘মুই কি মরার পরে পাইম সরকারি ঘর’

December 4, 2023 | 9:28 am

আলতাফুর রহমান আলতাফ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

লালমনিরহাট: মুজিব বর্ষে একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই নির্দেশনার পর ভাগ্য বদলায়নি হাছনা বানুর। লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলায় বাস্তবায়ন হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের ‘ক’ শ্রেণির ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমি ও গৃহ প্রদান কার্যক্রমের চতুর্থ পর্যায়ের দ্বিতীয় ধাপ। কিন্তু জরাজীর্ণ ঘরে বসবাস করলেও হাছনা বানুর ভাগ্যে জোটেনি সরকারি বরাদ্দের সেই ঘর। ঘরের আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরেও ঘর পাননি তিনি।

বিজ্ঞাপন

সরেজমিনে উপজেলার তুষভাণ্ডার ইউনিয়নের কাশিরাম গ্রামের হাছনা বানুর জরাজীর্ণ বসবাসের চিত্র দেখা গেছে। হাছনা বানুর স্বামী মারা গেছেন এক যুগ আগের ও বেশি। স্বামীর বসত ভিটা ছিল কাশিরাম গ্রামের নোহালির চরে গ্রামে। সেটিও ধীরে ধীরে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। হাছনার স্বামী মারা যাওয়ার পরই এক ছেলে এক মেয়ে নিয়ে হাসনা ছিন্নমূল হয়ে পড়েন।

ছেলে বড় হয়ে বিয়ে করার মা হাছনার কোনো খবর নেয় না, আর মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন এক দিনমজুর ছেলের কাছে। এরপর থেকেই অন্যদের দয়ায় বেঁচে আছেন হাছনা বানু।

আক্ষেপ করে তিনি বলেন, ‘মানুষের ওটে হাতপাতি টাকা নিয়া ভূমিহীনের কাগজ তুলেছি, ইউএনও স্যারের কাছে কয়বার গেছুং তাও আজইও মোক ঘরের ব্যবস্থা করে দেয় নাই, মুই কি মরার পরে পাইম সরকারি ঘর।’

বিজ্ঞাপন

হাছনা দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ একটি ভাঙ্গা ঝুপড়ি ঘরে বসবাস করছেন। বহুবার স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের কাছে একটা ঘর চেয়ে আবেদন করলেও তিনি পেয়ে আসছেন শুধুই প্রতিশ্রুতি। অথচ, সরকারি ঘর দেওয়ার শুরু থেকেই সরকারিভাবে আবেদন করে আসছে।

হাছনার স্বপ্ন ছিল সন্তানেরা বড় হলে তার কষ্টের অবসান হবে। কিন্তু সে স্বপ্ন, স্বপ্নই থেকে গেছে। তার কোনো দায়িত্বই নেয়নি সন্তানেরা। বয়সকালে হাছনা পরিশ্রম করতে পারলেও এখন আর আগের মতো কাজকর্ম করতে পারে না। বয়সের কারণে এখন ঠিকমতো চলাফেরাও করতে পারেন না তিনি।

বিজ্ঞাপন

স্থানীয়রা জানান, হাছনার স্বামীর কোনো ভিটেমাটি নেই। এখন ৬ শতক খাস জমির ওপর থাকেন। পুরনো ঢেউটিন বেড়া আর চালের ঘরে বর্ষাকালে বৃষ্টির পানি পড়ে আর ঝড় তুফানে হাওয়ায় দোল খায়। খেয়ে না খেয়ে, অনাহারে-অর্ধহারে মানবেতর জীবন যাপন করেন তিনি। তাই অসহায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপের মাধ্যমে তার একটি সরকারি ঘরের ব্যবস্থার দাবি এলাকাবাসীরও।

তুষভান্ডার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুর ইসলাম আহমেদ বলেন, ‘আমি সুপারিশ করেছি এবং ইউএনও’র কাছেও হাছনা বানুকে পাঠিয়েছিলাম। তিনি আশ্বাস দিয়েছে, শিগগিরই তার ঘর হবে।’

সারাবাংলা/এমও

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন