বিএনপি জনগণের সমর্থন পাবে না: গোলাম দস্তগীর গাজী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) থেকে: কোনো কিছুতেই বিএনপি জনগণের সমর্থন পাবে না বলে মন্তব্য করেছেন নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য এবং বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, বীরপ্রতীক।

বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) বিএনপি-জামাতের ডাকা অবরোধ প্রতিরোধে রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত উন্নয়ন ও শান্তি সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন। রূপগঞ্জের প্রায় প্রতিটি এলাকায় এদিন পথসভা করেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক এবং রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি গোলাম মূর্তজা পাপ্পা।

বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী বলেন, ‘অবরোধে জনগণের সাড়া নেই। বিএনপি-জামাত যাতে কোনো নৈরাজ্য করতে না পারে সেজন্য আমরা রাস্তায় আছি। বিএনপি যাতে আগুন নিয়ে খেলা করতে না পারে সেজন্য আমরা মাঠে আছি। মাঝে-মধ্যে ওরা বিক্ষিপ্তভাবে কোথাও কোথাও নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করছে। তবে জনগণের জানমালের তেমন কোনো ক্ষতি করতে পারছে না। গাড়ি-ঘোড়া সব চলছে।’

তিনি বলেন, ‘যত যাই করুক তারা জনগণের ম্যান্ডেট নিতে পারবে না। জনগণ আওয়ামী লীগের সঙ্গে আছে। আওয়ামী লীগের সঙ্গে থেকে জনগণ কাজ করে যাচ্ছে। অবরোধকারীরা জনগণের যাতে ক্ষতি করতে না পারে সেজন্য আমরা মাঠে আছি।’

এদিকে, অন্য এক পথসভায় বিএনপি-জামায়াতের দেওয়া অবৈধ অবরোধ জনগণ মেনে নেয়নি বলে মন্তব্য করেছেন রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি গোলাম মূর্তজা পাপ্পা। এদিন সকালে রূপগঞ্জের তারাব বিশ্বরোড এলাকায় রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত পথসভায় তিনি এ কথা বলেন।

বিএনপি-জামায়াতের উদ্দেশে গোলাম মূর্তজা পাপ্পা বলেন, ‘রাস্তায় আসুন, দিনের বেলায় আসুন। চোরাগুপ্তা হামলা করে জনগণের সম্পদ নষ্ট করবেন না।’ তিনি বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী জানুয়ারি মাসে নির্বাচন। আপনারা সংবিধানকে অবহেলা করছেন। আপনারা জানেন, আমাদের প্রতিটি ঘরে শিশু আছে। এই পরীক্ষার সময় তাদের স্কুলে যেতে বাধা সৃষ্টি করছেন। পিতা-মাতা চিন্তিত থাকছে। স্কুলের শিশুদের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করে আপনারা কি জনগণের ভালোবাসা পাবেন?’

তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপির যদি কোনো দাবি-দাওয়া থাকে তারা শান্তিপূর্ণভাবে তা উত্থাপন করতে পারতো। কিন্তু বিএনপি তা করেনি। আপনারা (বিএনপি) আগেও করেননি না, এখনও করছেন না। আপনারা জনগণের সম্পদ ধ্বংস করছেন, অবৈধ অবরোধ দিয়েছেন। কিন্তু জনগণ অবরোধ মানে নাই।’

রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বলেন, ‘আপনারা (বিএনপি) পুলিশের গায়ে হাত তুলেছেন। পুলিশকে পিটিয়ে মেরেছেন, সাংবাদিকদের গায়ে হাত তুলেছেন, হাসপাতালে অগ্নিসংযোগ করেছেন। পুলিশের গায়ে যে ইউনিফর্ম সেটি ১৬ কোটি মানুষের দেওয়া ইউনিফর্ম। পুলিশের গায়ে হাত দেওয়া যায় না। আপনাদের এই ভুলের খেসারত দিতে হবে।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘শান্তিকামী মানুষ বিভিন্ন এলাকায় পাহারা দিচ্ছে। তাদের কাজ হচ্ছে কেউ কোথাও অরাজকতা করলে, জনগণের সম্পদ ধ্বংস করতে চাইলে পুলিশ প্রশাসনকে অবহিত করা এবং সম্মিলিতভাবে তাদের রুখে দেওয়া। বিএনপি-জামায়াতের যেকোনো অবৈধ ও ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি জনগণ প্রতিহত করে দেবে।’

এদিকে, সকালে প্রথমে তারাব বিশ্বরোড এলাকায় মিছিল ও সমাবেশ হয়। পরে মুড়াপাড়া বাজার ও মঠের ঘাটে মিছিল ও সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া ভুলতা, গোলাকান্দাইল, কাঞ্চন, ভোলাব ও চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্র এলাকাসহ বিভিন্ন জায়গাায় মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এসব মিছিল ও সমাবেশে স্থানীয় ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। এ সময় তারা ‘গাজী, গাজী’ স্লোগানে পুরো এলাকা মুখরিত করে তোলেন। বিএনপি-জামায়াতকে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেও নানা ধরণের স্লোগান দেন নেতাকর্মীরা।

অবরোধবিরোধী মিছিল ও সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আজিজ, মাহবুর রহমান মেহের, জেলা পরিষদ সদস্য আনছর আলী, মুড়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ আলমাস, ভুলতা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান আরিফ, গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও যুবলীগ সভাপতি কামরুল ইসলাম তুহিন, রূপগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. সালাউদ্দিন ভূঁইয়া, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ইমন হাসান খোকন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হারেস, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, ফিরোজ ভূইয়া ও ইউনিয়ন পরিষদ সাবেক চেয়ারম্যান দাউদ মোল্লা।

সারাবাংলা/ইএইচটি/পিটিএম