বিজ্ঞাপন

‘নারায়ণ চন্দ্র চন্দকে ভোট না দিলে ভাতার কার্ড বাতিলের হুমকি’

January 2, 2024 | 8:10 pm

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

খুলনা: ৭ জানুয়ারি নৌকায় ভোট না দিলে প্রতিবন্ধী, বিধবা, মাতৃত্বকালীন ও বয়স্ক ভাতার কার্ড বাতিলের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে খুলনা-৫ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী নারায়ণ চন্দ্র চন্দের বিরুদ্ধে।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ অভিযোগ করেন একই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী (ঈগল প্রতীক) বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আকরাম হোসেন।

লিখিত বক্তব্য তিনি অভিযোগ করে বলেন, ৪০ দিনের কর্ম সৃজন প্রকল্পের শ্রমিক, রাস্তার নগর কুলি, গ্রাম পুলিশ, গ্রাম্য স্বাস্থ্যকর্মী, সরকারি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একটি সম্প্রদায়ের শিক্ষকরাসহ সরকারি মহিলা বিষয়ক কর্মীসহ বিভিন্ন সরকারি সুবিধাবাদীদের উপরে চাপ প্রয়োগ করে তার পক্ষে নির্বাচনি প্রচারে অংশগ্রহণ করাচ্ছেন। যা সরকারি নির্বাচনে আচরণবিধির সুনির্দিষ্টভাবে লঙ্ঘন।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন সমগ্র জাতিকে একটি সুন্দর, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন উপহার দিতে সব ধরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। ঠিক তখন খুলনা-৫ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ তার কিছু অনুসারী ও আজ্ঞাবহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারিদের দিয়ে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছেন। আমার কর্মীদের প্রচারণায় বিঘ্নের সৃষ্টি করছে নারায়ণ চন্দ্রের লোকজন। নির্বাচনের ফলাফলকে প্রভাবিত করতে নানা ছলাকলার আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন।

বিজ্ঞাপন

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, ডুমুরিয়া উপজেলায় বিগত ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচন, ২০১৯ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ও ২০২১ সালে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বর্তমান সংসদ সদস্য ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থী নারায়াণ চন্দ্র চন্দ ডুমুরিয়া উপজেলার বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে ব্যবহার করে তার ও তার নিজস্ব প্রার্থীকে কারচুপির মাধ্যমে বিজয়ী করার অভিযোগ রয়েছে। ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা এসএম কামরুজ্জামান, শিক্ষা কর্মকর্তা দেবাশিষ বিশ্বাস, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আশরাফ হোসেন সহ বেশ কয়েকজন অফিসারের প্রত্যক্ষ মদদে বিতর্কিত পদ্ধতিতে নারায়ণ চন্দ্র চন্দ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

২০১৯ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে উপরোক্ত অফিসার সহ তার ভাইপো শিক্ষক দিবাশিষ চন্দ সহ তার অনুসারি অনেক শিক্ষককে কাজে লাগিয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোস্তফা সরোয়ারকে কারচুপি করে জোর পূর্বক হারিয়ে দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। অনুরূপভাবে ২০২১ সালেও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বর্তমান উপজেলা নির্বাচন অফিসার কল্লোল বিশ্বাস ও উপরোক্ত অফিসার ও সংসদ সদস্যের আজ্ঞা বাস্তবায়নকারী একটি বিশেষ গোষ্ঠীর শিক্ষকরা পক্ষপাতিত্ব করায় এবং সংসদ সদস্য নারায়ণ চন্দ্র চন্দের নির্দেশনা পালন করায় ১৪টি ইউনিয়নের নৌকার প্রার্থীদের মধ্যে ১২ জনই পরাজিত হন। বিদ্রোহী ও অন্য দলের চেয়ারম্যানদের নিয়ে নিজস্ব বলয় সৃষ্টির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকায় ওই সব নির্বাচনের বিতর্কিত ফলাফল ও নানা অসঙ্গতি নিয়ে আদালতে একাধিক মামলা হয়েছে।

বর্তমানে এসব মামলা আদালতে বিচারাধীন। তাছাড়া গত ১৫ বছর ধরে নারায়ণ চন্দ্র চন্দ সংসদ সদস্য থাকায় এসব অফিসারদের সাথে তার রয়েছে বিশেষ সম্পর্ক। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও এসব কর্মকর্তাদের বিভিন্ন প্রকার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এমনকি তার মিশন বাস্তবায়নে বেশ কয়েকজন অফিসারকে পূর্ণ মেয়াদ শেষ হওয়ায় নিয়ম মাফিক ২/৩ বার অন্যত্র বদলি হয়ে গেলেও পুনরায় ডিও লেটার দিয়ে তাদেরকে ডুমুরিয়া উপজেলায় ফিরিয়ে আনা হয়েছে। শান্তি প্রিয় ভোটাররা আশঙ্কা করছেন এসব কর্মকর্তা নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে থাকলে কোনো ভাবেই নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে না বরং তা প্রশ্নবিদ্ধ হবে।

বিজ্ঞাপন

সংবাদ সম্মেলনে ঈগল প্রতীকের ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ক ও উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তফা কামাল, সদস্য সচিব সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তফা সরোয়ার, আটরা গিলাতলা ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মনিরুল ইসলাম, ডা. এটিএম মঞ্জুর মোর্শেদ, দামোদর ইউপি চেয়ারম্যান শিপলু ভূঁইয়া, ডুমুরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলমগীর শেখ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/এনইউ

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন