বিজ্ঞাপন

সাকরাইনে মেতেছে পুরান ঢাকা

January 14, 2024 | 6:36 pm

জবি করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: শুধুমাত্র পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী উৎসব সাকরাইন। বাংলা বর্ষপঞ্জির পৌষ মাসের শেষ দিন ‘সাকরাইন’ পালন করা হয়। ছোট বড় সবাই মিলে মেতে ওঠে এ উৎসব। সাকরাইনকে কেন্দ্র করে ঘুড়িতে ছেয়ে গেছে পুরান ঢাকার আকাশ। উৎসবকে কেন্দ্র করে ঘুড়ি-নাটাই বিক্রির ধুম পড়েছে।

বিজ্ঞাপন

উৎসবটি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের হলেও বহু বছর ধরে পুরান ঢাকায় ধুমধামের সঙ্গে সবাই উদযাপন করছেন সাকরাইন উৎসব। পৌষ মাসের শেষ দিনে আয়োজিত বলে ঐতিহ্যবাহী সাকরাইন পৌষ সংক্রান্তি নামেও পরিচিত। আর ঘুড়িকেন্দ্রিক উচ্ছ্বাসের কারণে একে ঘুড়ি উৎসবও বলা হয়ে থাকে।

সাকরাইনের প্রধান আকর্ষণ ঘুড়ি খেলা। নাটাইয়ে সুতো পেঁচিয়ে হাতে ঘুড়ি নিয়ে আজ প্রতিটি বাড়ির ছাদ থেকে শত শত ঘুড়ি উড়তে থাকে। শুধু ঘুড়ি ওড়ানোই নয়, ঘুড়ি কাটাকুটি খেলাও শুরু হয়ে যায়। রঙ-বেরঙের ঘুড়ি একসঙ্গে উড়ে ঢাকার আকাশকে বর্ণিল করে তুলেছে। ঢাকার অন্য অঞ্চল থেকেও হাজারও মানুষের ভিড় জমায় ঐতিহ্যবাহী এই উৎসবটি উপভোগ করতে।

বর্ণিল সব ঘুড়ি বিক্রি হয় সাকরাইনে। ছবি: সিফাত রব্বানী/ সারাবাংলা

রোববার (১৪ জানুয়ারি) পৌষের শেষ দিনে পুরা ঢাকা ঘুরে দেখা যায়, পুরান ঢাকার শাঁখারি বাজারের বেশিরভাগ দোকানে ঘুড়ি-নাটাই বিক্রির হিড়িক। বিক্রেতারা জানালেন, গতকাল সকাল থেকেই ঘুড়ি, নাটাই ও সুতা বিক্রিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। আজও বিক্রি অব্যাহত আছে। চলবে রাত পর্যন্ত।

বিজ্ঞাপন

সাকরাইনকে কেন্দ্র করে শাঁখারিবাজার ছাড়াও পুরান ঢাকার অলিগলি-ফুটপাতে বসেছে ভ্রাম্যমাণ ঘুড়ি, নাটাই ও সুতার দোকান। সব বয়সী মানুষই ভিড় জমাচ্ছেন এসব ঘুড়ি, নাটাই, সুতা কিনতে।

ঘুড়ির দোকানগুলো সাকরাইনে জমজমাট হয়ে ওঠে বেচাবিক্রিতে। ছবি: সিফাত রব্বানী/ সারাবাংলা

সাকরাইন উৎসব বর্তমান আর ঘুড়ি ওড়ানোতে সীমাবদ্ধ নেই। বিশাল সাউন্ডবক্স, ডিজে, রঙ-বেরঙের সজ্জায় সজ্জিত হয়েছে। আগের দিন বিকেল থেকে শুরু করে সারাদিন ও রাতের উপভোগের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন সবাই। সন্ধ্যা নামলে খেলা শেষে আতশবাজি, শত শত ফানুসে প্রস্তুতি নিয়ে সাজিয়ে আছেন তরুণরা।

বর্তমান সাকরাইন উৎসব নিয়ে পুরান ঢাকায় বাসিন্দা সাকিব বলেন, ‘সাকরাইন মানে যে ঘুড়ি ওড়ানো, এখন আর শুধু সেটিই বলার উপায় নেই। এখন সাকরাইন ডিজে সাকরাইনেও পরিণত হয়েছে। উচ্চ শব্দে সাউন্ড বক্স ও ডিজে না বাজিয়ে আগের মতো উৎসবমুখর থাকলে সাকরাইন আরো উৎসবমুখর হয়ে উঠত। আতশবাজি, পটকা, সাউন্ড বক্সের তীব্র শব্দে অতীষ্ঠ হয়ে আছি। এমন সাকরাইন অনেকটাই কাম্য নয়।’

বিজ্ঞাপন

সারাদিন চলে ঘুড়ির ওড়াউড়ির সঙ্গে প্রতিযোগিতাও। ছবি: সিফাত রব্বানী/ সারাবাংলা

আগেই বলা হয়েছে, পৌষের শেষ দিন বলে সাকরাইন মূলত পৌষ সংক্রান্তির আয়োজন। পৌষ ও মাঘ মাসের সন্ধিক্ষণে, পৌষ মাসের শেষ দিনটি সারা ভারতবর্ষেই সংক্রান্তি হিসেবে উদযাপিত হয়। বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন, সংস্কৃত শব্দ সংক্রান্তিই রূপ বদল করে পুরার ঢাকার ঢাকাইয়া ঢাকায় সাকরাইন রূপ নিয়েছে। পুরান ঢাকাযর এই উৎসব এখন সর্বজনীন ঢাকাইয়া উৎসবে রূপ নিয়েছে।

সারাবাংলা/একে

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন