বিজ্ঞাপন

জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলাই লক্ষ্য: প্রধানমন্ত্রী

February 7, 2024 | 6:47 pm

স্পেশাল করসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার পর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সরকার এখন কাজ করছে বলে মন্তব্য করেছেন সংসদ নেতা প্রধনমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণই এই সরকারের চূড়ান্ত লক্ষ্য বলেও জানিয়েছেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণের লক্ষ্যে বর্তমান সরকার রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবে রূপ দিতেই ‘রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়ন: বাংলাদেশ প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-২০৪১’ হাতে নিয়েছে।

বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সিরাজগঞ্জ-৬ আসনের সংসদ সদস্য চয়ন ইসলামের এক প্রশ্নের জবাবে সংসদ নেতা এসব কথা বলেন। প্রশ্নকর্তা প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চান, টানা ১৫ বছরসহ মোট ২০ বছর চার মেয়াদে দেশ পরিচালনার পর আগামী পাঁচ বছর দেশ পরিচালনায় সরকারের পরিকল্পনা কী?

জবাবে প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ সরকারের আগের মেয়াদগুলোর সাফল্য তুলে ধরেন। বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের সফল বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণের লক্ষ্যে ২০৪১ সাল নাগাদ স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর উদ্দেশ্য স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট অর্থনীতি ও স্মার্ট সমাজ— এই চারটি স্তম্ভের ওপর ভিত্তি করে টেকসই ডিজিটাল প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও প্রসারের মাধ্যমে অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করে বাংলাদেশ ২০৪১ সাল নাগাদ একটি উন্নত, সমৃদ্ধশালী ও দারিদ্র্যশূন্য রাষ্ট্রে পরিণত করা।

বিজ্ঞাপন

সংসদ নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার গত ১৫ বছরে (২০০৯-২০২৩) অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়েছে। এসিব পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের ফলে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের দরবারে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, রূপকল্প ২০২১ সামনে রেখে দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা হিসেবে ‘বাংলাদেশের প্রথম প্রেক্ষিত পরিকল্পনা (২০১০-২০২১)’ প্রণয়ন করা হয়। এর অন্যতম লক্ষ্য ছিল ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করা। এই ভাবনা বাস্তবে রূপ দিতে সরকার মধ্যমেয়াদি পরিকল্পনা হিসেবে ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (২০১১-২০১৫) ও সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (২০১৬-২০২০) গ্রহণ ও সফলভাবে বাস্তবায়ন করেছে। এর ফলে ২০১৫ সালের ১ জুলাই বাংলাদেশ নিম্ন আয়ের দেশ থেকে নিম্নমধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা মেয়াদে গড়ে ৭ দশমিক ১৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলা করে খাদ্য নিরাপত্তা, উন্নত পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা ও টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে কৃষি, মৎস্য, শিল্প, বনায়ন, জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ ও প্রতিবেশ প্রভৃতি বিবেচনায় নিয়ে একটি সমন্বিত শতবর্ষী মহাপরিকল্পনা ‘বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০’ প্রণয়ন করেছে। অব্যাহত উন্নয়ন অভিযাত্রায় দেশজ এ মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন ও অনুমোদন দেশের উন্নয়ন পরিকল্পনার ইতিহাসে একটি মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। এই পরিকল্পনা এরই মধ্যে বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। এই পরিকল্পনার রূপকল্প হচ্ছে নিরাপদ, জলবায়ু পরিবর্তনে অভিঘাত সহিষ্ণু সমৃদ্ধ ব-দ্বীপ গড়ে তোলা’।

বিজ্ঞাপন

রূপকল্প-২০২১-এর পর রূপকল্প-২০৪১ বাস্তবায়নে ‘বাংলাদে প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-২০৪১’ গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান শেখ হাসিনা। বলেন, এ পরিকল্পনার ভিত্তিমূলে রয়েছে দুটি প্রধান অভীষ্ট— ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশে পরিণত করা, যেখানে মাথাপিছু আয় হবে ১২ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলারেরও বেশি এবং বাংলাদেশ হবে সোনার বাংলা, যেখানে দারিদ্র্য হবে সুদূর অতীতের ঘটনা। এই প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ধারাবাহিক চারটি পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হবে, যার প্রথমটি অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (জুলাই ২০২০-জুন ২০২৫) বর্তমানে বাস্তবায়নাধীন। এ পরিকল্পনা প্রণয়নে রূপকল্প-২০৪১-এর পাশাপাশি বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০-এর মূল লক্ষ্যসমূহ, টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি), চতুর্থ শিল্প বিপ্লব, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের চ্যালেঞ্জগুলো বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।

সংসদ নেতা বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের বিষয়টি মধ্যমেয়াদি উন্নয়ন পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করতে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি) থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে জিইডি নবম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (২০২৬-২০৩০) প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে।

সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন