বিজ্ঞাপন

শহিদ মিনার: প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাবেন মেয়র রেজাউল

February 19, 2024 | 9:09 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের সমস্যা সমাধান করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর স্মারকলিপি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন চট্টগ্রামের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার ব্যক্তিরা।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে নগরীর টাইগারপাসে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সভায় বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাংস্কৃতিক ব্যক্তি ও সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার প্রতিনিধিরা শহিদ মিনার প্রসঙ্গে তাদের মতামত তুলে ধরার পর সম্মিলিতভাবে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সভার সভাপতিত্ব করেন চসিক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। সভায় একুশে ফেব্রুয়ারি শহিদ দিবসে এবারও মিউনিসিপ্যাল মডেল স্কুল ও কলেজ মাঠে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সভায় মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘নির্মাণাধীন শহীদ মিনার দৃশ্যমান না হওয়া এবং সিঁড়ি সংকীর্ণ ও বয়স্কদের উপযোগী না হওয়া নিয়ে অনেকের অভিযোগ ছিল। কিছুদিন আগেও আমরা সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের নিয়ে বসেছি। প্রকৌশলী ও বিশেষজ্ঞরা গিয়ে শহিদ মিনার পর্যবেক্ষণ করে এসেছেন। তারা কিছু প্রস্তাবনা দিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

‘চট্টগ্রাম থেকে একুশে ও স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্তদের সইসহ আমাদের কবি, সাহিত্যক, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সবার সই নিয়ে একটি স্মারকলিপি এবং ওই প্রস্তাবনাগুলো আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে গিয়ে দেবো। কারণ আমরা শহিদ মিনার নিয়ে যে এখানে আন্দোলন-সংগ্রাম করছি, এর খবর তার কাছে না-ও পৌঁছাতে পারে,’— বলেন মেয়র রেজাউল।

চট্টগ্রামে ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে সবাইকে এক হওয়ার আহ্বানন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামে এখন অনেক কিছুর অভাব। শিল্প-সংস্কৃতি সব উধাও হয়ে গেছে বলে আমার মনে হয়। আমাদের সবকিছু আছে। মেধাবী লোকজনও আছে। কিন্তু কোনো সুযোগ হচ্ছে না। আমি সবাইকে এক জায়গায় আসার আহ্বান জানাব। আমরা চট্টগ্রামের ঐতিহ্যকে ফিরে আনতে চাই। চট্টগ্রাম সবসময় এগিয়ে ছিল সব ক্ষেত্রে। এখনো যেন এগিয়ে যায়, সেই কষ্টটা আমাদের করতে হবে।’

ডিসি হিলে অনুষ্ঠান করতে না দেওয়ায় সংস্কৃতি অঙ্গনের ক্ষতি হচ্ছে— এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘ডিসি হিলে যদি প্রোগ্রাম করতে না দেওয়া হয়, এখানে মঞ্চ কেন করতে দেওয়া হলো? এখানে গ্যালারি কেন করা হলো? এটি আসলে ডিসি হিল না, এটি নজরুল স্কয়ার। এ নজরুল স্কয়ারে আমাদের সাংস্কৃতিক কর্মীরা গানের চর্চা করবে, কবিতার চর্চা করবে। কত সুন্দর পরিবেশ! এটাও কিন্তু আমাদের হাতছাড়া হয়েছে। শহিদ মিনারও হাতছাড়া হয়েছে, বিজয় মেলাও হাতছাড়া হয়েছে। শুধু বইমেলা রক্ষা পেয়েছে। এটাও যাওয়ার পথে ছিল।’

বিজ্ঞাপন

সভায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ইন্দুনন্দন দত্ত বলেন, ‘এখন যে শহিদ মিনার হয়েছে সেটি কমপ্লেক্সের আওতায়। এর স্বাতন্ত্র্য আর নেই। যাই বলুন না কেন, আমাদের শহিদ মিনারের স্বাতন্ত্র্য আর ফিরবে না। একে স্বতন্ত্র রুপ দিতে হলে অন্য জায়গায় করতে হবে। কাজির দেউড়িতে শিশু পার্ক ভাঙা হয়েছে, সেখানেও হতে পারে অথব অন্য কোনো জায়গাতেও হতে পারে।’

চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাসান ফেরদৌস বলেন, ‘শহিদ মিনার বাঙালি জাতির আবেগের জায়গা। আমাদের ভাষা, সাংস্কৃতিক আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধ সবকিছুর সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে যুক্ত। ফলে চট্টগ্রামের যে শহিদ মিনার, সেটি নতুন প্রজম্মের জন্য জাদুঘরে পরিণত হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘যেহেতু এ শহিদ মিনারে চট্টগ্রামবাসী ফুল দেবে না, তাই এটাকে জাদুঘর হিসেবে রাখা হোক। এখানে বাস্তবতা হচ্ছে— আমরা আমাদের শহিদ মিনার হারিয়েছি। সার্কিট হাউজের পাশে যে শিশু পার্ক ভাঙা হয়েছে, সেখানে শহিদ মিনার বা স্মৃতিস্তম্ভ করা গেলে সেখানে বইমেলাও করা যাবে। তাই ওই জায়গাকে বিকল্প হিসেবে ভাবলে আগামী প্রজম্মের জন্য কাজে আসবে।’

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ গবেষক মাহফুজুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মোজাফফর আহমদ, ডেপুটি কমান্ডার মো. নুরউদ্দিন, কালাম চৌধুরী, একুশে পদকপ্রাপ্ত নাট্যজন আহমেদ ইকবাল হায়দার, সাংস্কৃতিক সংগঠক দেওয়ান মাকসুদ আহমেদ, চট্টগ্রামের প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি আবু সুফিয়ান, কলিম সরওয়ার, সভাপতি সালাহ উদ্দিন মো. রেজা, সহসভাপতি চৌধুরী ফরিদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ শাহরিয়ার, সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি তপন চক্রবর্তী, আবৃত্তিকার রাশেদ হাসান ও প্রণব চৌধুরী।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আইসি/টিআর

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন