বিজ্ঞাপন

কায়সার কামালকে বিএনপি থেকে বহিষ্কারের দাবি খোকনের

April 22, 2024 | 6:26 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামালকে বিএনপি থেকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নবনির্বাচিত সভাপতি ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন।

বিজ্ঞাপন

মাহবুব উদ্দিন খোকন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আর ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বিএনপির আইন সম্পাদক পদে রয়েছেন।

সোমবার (২২ এপ্রিল) সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করেন।

সংবাদ সম্মেলনে ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামালকে বালক, সরকারের এজেন্ট এবং নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধে অপরাধী বলে অভিহিত করেন।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘তারেক রহমানের নির্দেশে আমরা সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির (বার) নির্বাচনে অংশ নিই। সেই নির্বাচনে আমরা ১৪টি পদের মধ্যে ১২টিতে জয়ী হতাম। কিন্তু কায়সার কামাল তিন বার সরকারের প্যানেলের পক্ষে কাজ করায় আমরা সভাপতিসহ চারটি পদে জয়ী হয়েছি। নির্বাচনের পর ভোট গণনা থেকে আমাদের এজেন্টদের কেন সরিয়ে নেওয়া হলো। এজেন্টদের সরিয়ে নেওয়ার একমাত্র উদ্দেশ্য আওয়ামী লীগকে ওয়াকওভার দেওয়া। অর্থাৎ বার নির্বাচনে সরকারকে জেতানোর জন্য ষড়যন্ত্র করেছেন কায়সার কামাল। এই ষড়যন্ত্রের মূলে ছিল ভোট গণনার সময় এজেন্টদের সরিয়ে নেওয়া। যদি এজেন্টদের সরিয়ে নেওয়া না হতো তাহলে আমরা ১২ পদে জয়ী হতাম।’

সংবাদ সম্মেলনে ব্যারিস্টার খোকন আরও বলেন, ‘তারেক রহমান আমাদের প্যানেল ঘোষণা করেছেন। বিএনপির পার্টি অফিসে সবার উপস্থিতিতে এই ঘোষণা দেওয়া হয়। তারেক রহমান তো বলেননি, তোমরা ভোট গণনায় যেও না, সভাপতির দায়িত্ব নিও না। তাহলে দায়িত্ব নিও না— এ কথা বলার কায়সার কামাল কে?’

তিনি বলেন, ‘যদি আমরা ১২ পদে জয়ী হতাম তাহলে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকারের আন্দোলন শক্তিশালী করতে পারতাম। সরকারি দলের সঙ্গে আঁতাত করে কায়সার কামাল তাদের পূর্ণ প্যানেলে জয়ী করার পেছনে কাজ করেছিল। তার উদ্দেশ্য ছিল সরকারকে ওয়াকওভার দেওয়া।’

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘বার নির্বাচনে আমরা সরকারের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি। কিন্তু কায়সার কামালের ষড়যন্ত্রের কারণে সেই যুদ্ধে পুরোপুরি জয়ী হতে পারিনি। তিনি নির্বাচনের সময় উপস্থিত না থেকে বিভিন্ন জেলায় ঘুরে বেরিয়েছেন। তারেক রহমানের ঘোষিত প্যানেলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন।’

কায়সার কামালকে অর্বাচীন বালক হিসেবে উল্লেখ করে ব্যারিস্টার খোকন বলেন, ‘তিনি একজন আত্মস্বীকৃত অপরাধী। সে কিভাবে আইনজীবীদের নেতা হন? নৈতিক স্থলনের কারণে আইনজীবী ফোরাম থেকে তার সদস্যপদ থাকা উচিত নয়। সরকারের এই এজেন্টকে দল থেকে বহিষ্কার করা উচিত। আমি মনে করি কায়সার কামালের ভূমিকা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদের তদন্ত করা উচিত।’

ব্যারিসটার খোকন বলেন, ‘আমাকে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম থেকে বহিষ্কার করার কোনো ভিত্তি নেই। আমি মেজর জিয়াউর রহমানের সময় সেই ১৭-১৮ বছর বয়স থেকে বিএনপির ছাত্র রাজনীতিতে ছিলাম। এখনো আছি, ভবিষ্যতেও থাকব। আমি বিচারপতি টিএইচ খানের জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম করি।’

সংবাদ সম্মেলনে মাহবুব উদ্দিন খোকন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব কায়সার কামালের উদ্দেশে বলেন, ‘জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের তো গঠনতন্ত্রই নেই। সে (কায়সার কামাল) কিভাবে বহিষ্কার করে? তার তো ক্ষমতাই নেই। যতক্ষণ পর্যন্ত গঠনতন্ত্র না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত কাউকে বহিষ্কার যাবে না। এটা আইনগত কার্যকর নয়। আমি বিএনপি করছি, বিএনপি করব। কুলাঙ্গাররা শহিদ জিয়ার বিএনপিতে থাকুক- এটা আমি চাই না।’

বিজ্ঞাপন

এর আগে, গতকাল (২০ এপ্রিল) জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম থেকে মাহবুব উদ্দিন খোকনকে অব্যাহতির দেওয়া হয়। জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতির পদে দায়িত্ব নেওয়ায় মাহবুব উদ্দিন খোকনের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়। খোকন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে ছিলেন।

এবারের সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ১৪টি পদের মধ্যে সভাপতিসহ চারটি পদে বিজয়ী হয়েছিল বিএনপি সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেল। অপরদিকে সম্পাদকসহ ১০টি পদে বিজয়ী হয়েছে সরকার সমর্থিত বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ। গত ৬ ও ৭ মার্চ নির্বাচন শেষে ৯ মার্চ রাতে ভোট গণনা শেষে ফলাফল ঘোষণা করেন নির্বাচন পরিচালনা উপ-কমিটির আহ্বায়ক জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আবুল খায়ের।

এরপর বিএনপি সমর্থিত বিজয়ী সভাপতি ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকনসহ চারজনকে দায়িত্ব গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে গত ২৭ মার্চ চিঠি দিয়েছিল জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। কিন্তু জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতির দায়িত্ব নেন মাহবুব উদ্দিন খোকন। সেজন্য জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

সারাবাংলা/কেআইএফ/পিটিএম

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন