বিজ্ঞাপন

উত্তেজনায় ঠাসা বায়ার্ন-রিয়াল ম্যাচ ড্র

May 1, 2024 | 2:58 am

স্পোর্টস ডেস্ক

উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে হাইভোল্টেজ ইউরোপিয়ান ক্লাসিকো। আর সেখানেই উত্তেজনায় ঠাসা ম্যাচের উপহার দিল দুই দল। বায়ার্ন মিউনিখের ঘরের মাঠে শুরুতে এগিয়ে গেলেও দ্বিতীয়ার্ধে অল্প সময়ের ব্যবধানে দুই গোল করে এগিয়ে যায় বায়ার্ন। আর শেষ দিকে এসে গোল করে ম্যাচে সমতায় ফেরে রিয়াল মাদ্রিদ।

বিজ্ঞাপন

অ্যালিয়েঞ্জ অ্যারেনায় ম্যাচের শুরুর দিকে ভিনিসিয়াস জুনিয়রের গোলে লিড নেয় রিয়াল। এরপর দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই লেরয় সানের গোলে প্রথমে সমতায় ফেরে বায়ার্ন। এরপর পেনাল্টি থেকে করা হ্যারি কেইনের গোলে নেয় লিড। তবে শেষ দিকে এসে ভিনিসিয়াস জুনিয়রও পেনাল্টি কিক থেকে গোল করে রিয়ালকে সমতায় ফেরায়। তাতেই ম্যাচ শেষ হয় ২-২ গোলের সমতায়।

সেমিফাইনালের মীমাংসা হবে দ্বিতীয় লেগে রিয়াল মাদ্রিদের ঘরের মাঠ এস্তাদিও সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে। আগামী ৮ মে রিয়ালের ঘরের মাঠে আতিথ্য নেবে বায়ার্ন মিউনিখ।

গোটা ম্যাচে বল দখলে সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে ছিল আসরের ছয়বারের শিরোপাজয়ী বায়ার্ন। ৫২ শতাংশ সময় তারা পায়ে রাখে বল। গোলমুখে তাদের নেওয়া ১৪টি শটের মধ্যে পাঁচটি ছিল লক্ষ্যে। অন্যদিকে, প্রতিযোগিতার রেকর্ড ১৪ বারের চ্যাম্পিয়ন রিয়াল দশটি শট নিয়ে লক্ষ্যে রাখতে পারে চারটি।

বিজ্ঞাপন

অ্যালিয়েঞ্জ অ্যারেনায় ম্যাচের শুরু থেকেই চাপ সৃষ্টি করেছিল স্বাগতিক বায়ার্ন। কিন্তু জালের দেখা পায়নি শুরু আক্রমণ থেকে। প্রথম মিনিটের ৪০তম সেকেন্ডেই বায়ার্ন গোল পেতে পারতো। হ্যারি কেইনের থ্রু বল থেকে বাম প্রান্তের দুরূহ কোণ থেকে লেরয় সানে শট নিয়েছিলেন। পা দিয়ে বলটি রুখে স্বাগতিকদের গোল বঞ্চিত করেন রিয়াল মাদ্রিদের গোলকিপার আন্দ্রে লুনিন। ৬ মিনিটে একইভাবে কেইনকেও হতাশ করেন তিনি। এক মিনিট পর আবারও আক্রমণে যান সানে। এবার বক্সের অনেক ওপর দিয়ে মেরে সুযোগ নষ্ট করেন তিনি।

বায়ার্নের একের পর এক আক্রমণ ঠেকাতে ব্যতিব্যস্ত থাকে রিয়াল। পাল্টা আক্রমণ করার সুযোগই করে উঠতে পারছিল না। তবে ২৪ মিনিটে প্রথম গোলটি পেয়েই নিজেদের গুছিয়ে নিতে পারে তারা। টনি ক্রুসের মহনীয় এক থ্রু বল ধরে বক্সের কাছে দৌড়াতে থাকা ভিনিসিয়াস জুনিয়র ডান পায়ের শটে ম্যানুয়েল নয়্যারকে পরাস্ত করে প্রথম গোলটি করেছেন।

টনি ক্রুস তখন মাঝমাঠে বল ধরে রেখেছেন পায়ে। একটু ঈশারা করে ভিনিসিয়াস জুনিয়রকে যেন দৌড় দিতে বললেন। আর তখনই বায়ার্নের চার ডিফেন্ডারের ফাঁদ এড়িয়ে দুর্দান্ত এক থ্রু বল বাড়ান টনি ক্রুস। সেখান থেকে বল দখলে নিয়ে দুর্দান্ত ফিনিশিং ভিনিসিয়াসের। আর এই গোলের মধ্য দিয়েই ইতিহাসে নাম লেখালেন ভিনিসিয়াস জুনিয়র। এই নিয়ে টানা তৃতীয় চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে গোল করলেন ভিনি। এই তালিকায় ভিনি চতুর্থ খেলোয়াড়। তার এই কীর্তি গড়েছেন জারি লিটমানেন, ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো এবং কেভিন ডি ব্রুইন।

বিজ্ঞাপন

গোল করার পর অ্যালিয়েঞ্জ অ্যারেনায় রিয়ালের আধিপত্য। বায়ার্ন বলের দখল রাখলেও ম্যাচের দখল ছিল রিয়ালের হাতেই। বল পায়ে রেখে চেষ্টা করে আক্রমণাত্মও হয়ে ওঠে রিয়াল। এ সময় বায়ার্ন রক্ষণে কয়েকবার হানা দেওয়া চেষ্টাও করে তারা। যদিও তা দ্বিতীয় গোল আদায়ের জন্য সেসব যথেষ্ট ছিল না। এরপরও প্রতিপক্ষের মাঠে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় রিয়াল।

বিরতি থেকে ফিরে ভিন্ন এক বায়ার্নের দেখা মেলে। বিরতিতে থমাস টুখেল গোরেতজাকে তুলে নিয়ে মাঠে নামান রাফায়েল গুয়েররোকে। আর সেখান থেকেই বদলে যায় ম্যাচের চিত্র। ম্যাচের ৫৩ মিনিটে দারুণ এক গোলে বায়ার্নকে এগিয়ে দেন সানে। ডান প্রান্তে বল পেয়ে দারুণ এক শটে কাছের পোস্ট দিয়ে বল জালে জড়ান এ জার্মান তারকা। আর তাতেই সমতয়ায় ফেরে বায়ার্ন।

এর আগে যদিও ৫১ মিনিটে গোলের প্রথম সুযোগটি পায় রিয়াল মাদ্রিদ। জুড বেলিংহামের অ্যাসিস্টে বক্সের বাম প্রান্ত থেকে শট নিয়েছিলেন টনি ক্রুস। সেটি দারুণ দক্ষতায় রুখে দেন বায়ার্ন গোলরক্ষক। সমতায় ফেরার পর বায়ার্ন আরও মরিয়া হয়ে ওঠে। বাঁ দিক থেক দারুণ এক আক্রমণে বল নিয়ে ডি বক্সে ঢুকে পড়েন জামাল মুসিয়ালা। তাকে রুখতে না পেরে ফাউল করেন লুকাস ভাস্কেজ। রেফারি সরাসরি পেনাল্টির বাঁশি বাজান। ৫৭ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে নেন হ্যারি কেইন। চ্যাম্পিয়নস লিগের চলমান মৌসুমে এমবাপের সমান ৮ গোল হয়ে গেছে ইংলিশ তারকার। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আট গোল করা প্রথম ইংলিশ ফুটবলার এখন তিনি। পেছনে ফেলেছেন সাত গোল করা স্টিভেন জেরার্ডকে।

দারুণ আক্রমণে ৬৮তম মিনিটে লিড বাড়ানোর কাছে চলে গিয়েছিলেন কেইন। তবে রুডিগারের দারুণ এক ট্যাকেলে নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি কেইন। তাতেই বেঁচে যায় রিয়াল। ম্যাচে পিছিয়ে পড়লেও হাল ছাড়েনি রিয়াল। আক্রমণের ধার শেষ দিকে কিছুটা বাড়িয়েছিল লস ব্ল্যাঙ্কোসরা। বায়ার্নের দাপটে সুযোগ তৈরি করতে কষ্ট হচ্ছিল রিয়ালের। তবে রিয়ালের ‘চ্যাম্পিয়নস লিগ সৌভাগ্য’ ঠিকই ম্যাচে ফিরিয়ে আনে তাদের। ম্যাচের রূপ ফের বদলে যায় ম্যাচের ৮৩ মিনিটে রিয়াল পেনাল্টি পেলে। স্পট কিক থেকে নিজের দ্বিতীয় গোল করে রিয়ালকে সমতায় ফেরান ভিনি। রদ্রিগোকে বক্সের মধ্যে ফেলে দেন কিম মিন জায়ে। তাকে হলুদ কার্ড দেখিয়ে স্পট কিকের বাঁশি বাজাতে দেরি হয়নি রেফারির।

বিজ্ঞাপন

এর আগে ৮০ মিনিটে সমতা ফেরানোর সুর্বণ সুযোগ আসে রিয়ালের। লুকা মদ্রিচের বাড়ানো বল দৌড়ে বুক দিয়ে নামিয়ে শট নেন ভিনিসিয়াস। দৃঢ়ভাবে দাঁড়ানো ম্যানুয়েল নয়্যার সহজেই রুখে দেন তার শট। তাতে রিয়ালের পিছিয়ে পড়ার সম্ভাবনা দেখা দিলেও শেষ পর্যন্ত ভিনিসিয়াসের জোড়া গোলে ২-২ গোলের ড্র নিয়েই অ্যালিয়েঞ্জ অ্যারেনা ছাড়ে রিয়াল মাদ্রিদ।

সারাবাংলা/এসএস

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন