বিজ্ঞাপন

রংপুরের ২ উপজেলা নির্বাচনে আ.লীগের প্রতিদ্বন্দ্বি আ.লীগ

May 7, 2024 | 12:50 pm

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

রংপুর: ৪ ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে ১৫২ উপজেলায় ভোট হবে আগামীকাল ৮ মে। এরই ধারাবাহিকতায় রংপুরের কাউনিয়া এবং পীরগাছা উপজেলায় চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও সংরক্ষিত ভাইস চেয়ারম্যান পদে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ব্যালট পেপারে ভোটগ্রহণ হবে। এই দুই উপজেলায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রচার এখন জমজমাট।

বিজ্ঞাপন

এদিকে আইনে দলীয় প্রতীকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে ভোট করার সুযোগ থাকলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবার স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনে দলীয় প্রতীক বা মনোনয়ন না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ নেতারা নির্বাচন করছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে। তবে উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি না অংশ না নেওয়ায় আওয়ামী লীগের মূল প্রতিদ্বন্দ্বি  এখন আওয়ামী লীগ। এতে দলের নেতাকর্মীরা দ্বিধাদ্বন্দ্বের মধ্যে আছেন। তাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে বিভক্তি। তবে নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের প্রার্থীরা তাদের নিজেদের পক্ষে কাজ করানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছেন।

কাউনিয়ায় এবার চেয়ারম্যান পদে বর্তমান চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম মায়ার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছেন বর্তমান পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক। গতবারের নির্বাচনের দু’জনের সম্পর্ক ভালো থাকলেও এবার তারা ভোটের মাঠে একে অপরের কঠিন প্রতিপক্ষ।

নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও মাঠ জরিপে মায়ার মূল প্রতিদ্বন্দ্বি রাজ্জাক। কাউনিয়ায় প্রভাব বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আওয়ামী লীগ কর্মী সোনা মিয়া নিহত হওয়ার পর থেকে তাদের সম্পর্কের তিক্ততা প্রকট আকার ধারণ করেছে। তবে কাউনিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম মায়ার সঙ্গে লড়াই করা জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য রাজ্জাককে নির্বাচনে জয়ের জন্য বেশ বেগ পেতে হবে বলে মনে করছেন ভোটাররা।

বিজ্ঞাপন

নির্বাচন প্রসঙ্গে আনোয়ারুল ইসলাম মায়া বলেন, ‘যেহেতু কোনো দলীয় প্রতীক ছাড়াই এবারের নির্বাচন তাই দলের যে কেউই নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন।’ এবারও তিনি জয়ী হবেন এমনটাই প্রত্যাশা উপজেলা আওয়ামী লীগ ও বর্তমান চেয়ারম্যানের।

আর আরেক প্রার্থী আব্দুর রাজ্জাক বলছেন, ভোটাররা এবার তাকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করবেন।

অন্যদিকে আরেক উপজেলা পীরগাছায় চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন পীরগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি তছলিম উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মাহমুদ ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের সহসম্পাদক মনোয়ারুল ইসলাম মাসুদ। আর জাতীয় পার্টি থেকে অংশ নিয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি আবু নাসের মো. মাহবুবার রহমান।

বিজ্ঞাপন

এখানেও নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভক্তি দেখা দিয়েছে। এতে সুবিধাজনক অবস্থায় আছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থীর প্রার্থী।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ২ উপজেলার আওয়ামী লীগের বেশ কয়েজন শীর্ষ নেতা জানিয়েছেন, বিভিন্ন সময় একসঙ্গে দলীয় কার্যক্রম করলেও এখন আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে এসে দলের মধ্যে নেতাকর্মীদের বিভক্তি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। ফলে দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে রূপ নিতে পারে বলে নেতাকর্মীরা আশঙ্কা করছেন।

নির্বাচনে দলের একাধিক প্রার্থী হওয়ায় নেতাকর্মীরা বিভক্ত হয়ে পড়ায় নির্বাচন কোনো প্রভাব পড়বে কি না, জানতে চাইলে চেয়ারম্যান প্রার্থী ও পীরগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি তছলিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘দলের সমর্থক ও নেতাকর্মীরা বিভক্ত হলেও এটি আমার জন্য কোনো বিষয় নয়। আমার পক্ষেই অধিকাংশ নেতা-কর্মী তার পক্ষে কাজ করছেন।’

অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী পীরগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, ‘যেহেতু কোনো দলীয় প্রতীক নেই। জনগণ যাকে বেশি ভালোবাসে, তিনিই নির্বাচিত হবেন।’

বিজ্ঞাপন

পীরগাছা জাতীয় পার্টির প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান আবু নাসের মো. মাহবুবার রহমান বলেন, ‘এ অঞ্চলে এখনো জাতীয় পার্টির প্রতি মানুষের ভালোবাসা রয়েছে। দলের পক্ষ থেকে সর্বশক্তি দিয়ে কাজ করছে। আমি আশা করছি, এবারও জনগণ জাতীয় পার্টির প্রার্থীকে নির্বাচিত করবেন।’

আর পীরগাছা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হঠাৎ মাসখানেক আগে জামায়াতের নেতারা ভোটের মাঠে নামলেও নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছে। রংপুর মহানগর জামায়াতের আমীর এ টি এম আজম খান চেয়ারম্যান পদে, পীরগাছা উপজেলা জামায়াতের আমীর মোস্তাক আহমদ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ও উপজেলা জামায়াতের সাবেক আমীর মোত্তালেব হোসেনের স্ত্রী মুনঝুরী বেগম মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করতে পোস্টার, লিফলেট, গণসংযোগ করলেও নির্বাচনে আর থাকবেন বলে জানান তারা।

রংপুর মহানগর জামায়াতের আমীর এ টি এম আজম খান জানান, দলের হাইকমান্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী তারা আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন না।

একটি পৌরসভা, ৬টি ইউনিয়ন নিয়ে কাউনিয়া উপজেলায় দুই হিজড়াসহ মোট ভোটার ২ লাখ ৪ হাজার ৫৪৩ জন এবং ৯টি ইউনিয়ন নিয়ে পীরগাছা উপজেলায় তিন হিজড়াসহ ২ লাখ ৮১ হাজার ৬৯৮ জন ভোটার রয়েছে।

সারাবাংলা/এমও

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন