বিজ্ঞাপন

হলফনামা: মানিকগঞ্জে অর্থবিত্তে এগিয়ে ছাত্রলীগ নেতা সাদ্দাম

May 7, 2024 | 4:32 pm

রিপন আনসারী, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

মানিকগঞ্জ: রাত পোহালেই (৮ মে) মানিকগঞ্জের হরিরামপুর ও সিংগাইর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। দুই উপজেলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ক্ষমতাসীন দলে কয়েকজন প্রভাবশালী চেয়ারম্যান প্রার্থী। অর্থবিত্ত আর ক্ষমতায় কারও চেয়ে কেউ কম নয়। তবে নির্বাচন কমিশনের কাছে দেওয়া হলফনামায় অনেকের বাসৎরিক আয়ের কোনো উৎস দেখাননি। প্রার্থীদের হলফনামা ঘেঁটে দেখা গেছে, হরিরামপুর উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান প্রার্থী ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি সাদ্দাম হোসেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে বেশি টাকার মালিক।

বিজ্ঞাপন

হরিরামপুর উপজেলা: এখানে দুই বারের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও দুর্যোগবিষয়ক সম্পাদক দেওয়ান সাইদুর রহমান তার হলফনামায় উল্লেখ করেছেন তার কোনো আয়ই নেই। তবে তার হাতে নগদ ৫ লাখ টাকা, ব্যাংকে জমা আছে আরও ৫ লাখ। এ ছাড়া ২০ হাজার টাকার প্রাইজবন্ডসহ স্ত্রীর নামে ২৫ তোলা স্বর্ণ রয়েছে। প্রার্থীর বিরুদ্ধে দুটি মামলা থাকলেও একটি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে আরেকটি মানিকগঞ্জ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১নং আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।

আরেক প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সাদ্দাম হোসেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি। হলফনামা অনুযায়ী তিনি সবচেয়ে বেশি টাকার মালিক। প্রতিদ্বন্দ্বী আরও চার প্রার্থীর হলফনামার মধ্যে তার ব্যবসা খাত থেকে ২২ লাখ ৬০ হাজার ৫৫৬ টাকা আয় দেখিয়েছেন। তার ব্যাংকে জমা দেখানো হয়েছে ৩২ লাখ ৮৯ হাজার ২৫৬ টাকা। এ ছাড়া শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ আছে আড়াই লাখ টাকার বেশি। হাতে নগদ আছে ১ লাখ টাকা। এছাড়া তার উপহার হিসেবে পাওয়া স্বর্ণের পরিমাণ ৩০ ভরি উল্লেখ করেছেন। তার বিরুদ্ধে কোনো আদালতে মামলা নেই বলে হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে।

উপজেলা যুবদলের বহিষ্কৃত নেতা ও বয়রা ইউনিয়নের তিন বারের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর রহমান তুষার। ব্যবসা খাত থেকে বছরে তিনি ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকার আয় দেখিয়েছেন। আর হাতে নগদ রয়েছে ১ লাখ টাকা। স্ত্রীর নামে ২২ ভরি স্বর্ণ রয়েছে বলে জানান দিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে রয়েছে পৃথক চারটি মামলা।সবগুলো আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

আরেক প্রার্থী আজিম খাঁন। সদ্য পদত্যাগী ভাইস চেয়ারম্যান। তার হলফনামায় দেখা গেছে, তার বছরের কোনো আয়ের খাত নেই। শুধু সম্মানীভাতা বছরে ৩ লাখ ২৪ হাজার টাকা পেতেন। তার হাতে নগদ টাকার আছে মাত্র ২০ হাজার টাকা। ব্যাংকে জমা আছে আট লাখ ৩০ হাজার টাকা। এছাড়া স্ত্রীর নামে স্বর্ণ আছে ১৫ ভরি। ২ শতাংশ অকৃষি জমি,পৈত্রিক একটি দালান ও ২০ লাখ টাকার মূল্যের অ্যাপাটমেন্ট।

এ ছাড়া প্রবাসী সামছুল ইসলাম নামের চেয়ারম্যান প্রার্থীর হলফনামা থেকে জানা গেছে, বাৎসরিক কৃষি খাত থেকে আয় ১৮ হাজার টাকা, ব্যবসা খাত থেকে আয় ৩ লাখ ৬২ হাজার। এ ছাড়া ব্যাংকে জমা আছে ১ লাখ টাকা। হাতে নগদ আছে আরও এক লাখ টাকা। স্ত্রীর নামে ৩ ভরি স্বর্ণ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে নেই কোনো মামলা। শিক্ষাগত যোগ্যতা এ লেভেল। তিনি আয়ারল্যান্ডের ডাবলিন শহর আওয়ামী লীগের একজন উপদেষ্টা ।

সিংগাইর উপজেলা: সিংগাইর উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থীর সংখ্যা তিনজন। তার মধ্যে দুজনই আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা। এরমধ্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সাইদুল ইসলাম। নির্বাচনি হলফনামা ঘেঁটে দেখা গেছে, ব্যবসা থেকে বাৎসরিক আয় করেন ১৬ লাখ ৮৬ হাজার ৫৫৬ টাকা। হাতে নগদ আছে ১৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা। ব্যাংকে জমা আছে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। আর স্ত্রীর নামে ২০ ভরি স্বর্ণ। হলফনামার তার একক নামে কৃষি জমি ২০৬ শতাংশ কৃষি জমি। এছাড়া স্ত্রী ও তার যৌথ নামে আরও ১ শত শতাংশ কৃষি জমি উল্লেখ করলেও নেই কৃষি খাত থেকে বাৎসরিক কোনো আয়! এদিকে তার নামে স্থানীয় ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে ৫০ লাখ টাকা ঋণ আছে বলে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন। তার নামে একটি মামলা ছিল সেটি থেকে তিনি খালাস পেয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

আরেক প্রার্থী আব্দুল মাজেদ খান। জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও এবং বলধারা ইউনিয়নের একাধিকবারের চেয়ারম্যান। হলফনামা থেকে জানা গেছে, ‍কৃষিখাত থকে বাৎসরিক আয় ৩৩ হাজার ৮১৪ টাকা। সম্মানী ভাতা থেকে বাৎসরিক আয় দেখান ১ লাখ ৪০ হাজার ও ১ লাখ ৮৬ হাজার ১০৮ টাকা। তিনি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান থেকে অব্যাহতি দিয়ে উপজেলা নির্বাচন করছেন। তার হাতে নগদ আছ ১ লাখ টাকা। স্ত্রীর নামে উপহার হিসেবে ৫০ ভরি স্বর্ণ আছে। এ ছাড়া স্থানীয় সিংগাইর কৃষি ব্যাংক থেকে ৭৫ হাজার টাকার কৃণি ঋন রয়েছে। তার নামের মামলা ছিল সেটি থেকে তিনি খালাসপ্রাপ্ত হয়েছে।

একই উপজেলার আরেক চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল লতিফের হলফনামা থেকে জানা গেছে, কৃষি খাত থেকে বাসৎরিক আয় করেন ৫০ হাজার টাকা। ব্যবসা থেকে আরও বাৎসরিক আয় হয় তিন লাখ টাকা। তার হাতে নগদ আছে ২ লাখ টাকা। স্থানীয় জনতা ব্যাংকে তার একক নামে এক কোটি টাকা ঋণ থাকলেও তার নেই কোনো স্বর্ণালংকার। তার নামে আদালতে কোনো মামলা নেই।

সারাবাংলা/একে

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন