বিজ্ঞাপন

বকেয়া মাথায় নিয়ে চামড়া কেনার প্রস্তুতি রাজশাহীর ব্যবসায়ীদের

June 16, 2024 | 10:04 am

মাহী ইলাহি, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

রাজশাহী: রাজশাহীর চামড়া ব্যবসায়ীদের বিগত বছরের টাকা বকেয়া আছে। ট্যানারি মালিকরা এই টাকা এখনও পরিশোধ করেনি। যার অধিকাংশ টাকা আটকে আছে নাটোরের ট্যানারি মালিকদের কাছে। বকেয়া টাকা নিয়ে বৈঠকও করেছে মালিকরা। এরইমধ্যে কোরবানির পশুর চামড়া কেনাবেচার আলোচনাও করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজশাহীর এক চামড়া ব্যবসায়ী জানান, চামড়ার ব্যবসায় হয় নাটোরে। ট্যানারি মালিকরা বিগত বছরের চামড়া বিক্রির টাকা এখনও পরিশোধ করেনি। প্রায় পাঁচ কোটি টাকার মতো পাওয়া যাবে। এই টাকাগুলো ফেরত পেলে ব্যবসয়ীরা আরও বেশি পশুর চামড়া কিনতে পারবে। বকেয়া মাথায় নিয়ে এবারও কোরবানির চামড়া কিনতে হবে।

চামড়া ব্যবসায়ীরা জানান, পচনরোধে সাত ঘণ্টার মধ্যে চামড়ায় লবণ দিতে হয়, না হলে চামড়া নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এবছর প্রতি বর্গফুটে বেড়েছে ৫ থেকে ৭ টাকা বাড়িয়ে কোরবানির পশুর চামড়ার নতুন দাম নির্ধারণ করেছে সরকার। চামড়ার দাম বাড়ানোর বিষয়টি ইতিবাচক বলে জানাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, আবহাওয়া গরম থাকার কারণে চামড়া দ্রুত লবণযুক্ত করতে হবে। এ কাজে সর্বোচ্চ ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা সময় পাওয়া যাবে। দেরি হলে চামড়া নষ্ট হয়ে যাবে। একই সাথে চামড়া কাটা ছেড়া থেকে সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। পশুর চামড়ায় কাটা থাকলে সেটা নিতে চায় না ট্যানারি। এবছর বাজারে লবণের সরবরাহ ভালো আছে। লবণের দামে তেমন প্রভাব পড়েনি।

বিজ্ঞাপন

রাজশাহীতে সবচেয়ে বেশি পশুর চামড়া কেনাবেচা হয় বেলপুকুর ও বানেশ্বরে। বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার কোরবানির পশুর চামড়া এখানে কেনাবেচা হয়ে থাকে। এছাড়া রাজশাহী নগরীর সপুরা, আমচত্বর, কাশিয়াডাঙ্গায় ক্ষুদ্রভাবে কেনাবেচা হয় পশুর চামড়া। তবে দিনশেষে সব চামড়া বেলপুকুর ও বানেশ্বরে নিয়ে লবণযুক্ত করা হয়।

পুঠিয়ার বেলপুকুর ও বানেশ্বর হাট ঘুরে দেখা গেছে, কোরবানির পশুর চামড়া কেনাকে কেন্দ্র করে আড়ৎগুলো পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন কারে প্রস্তুত করা হচ্ছে। একইসঙ্গে চামড়া সংরক্ষণের জন্য লবণ কিনে গোডাউনে রাখা হয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, পশুর চামড়া সংরক্ষণের জন্য লবণ প্রয়োজন হয়। সেই জন্য তারা মতো লবণ কিনে রেখেছেন।

নাটোর জেলায় লবণের সরবরাহকারী একতা ট্রেডার্সের সত্ত্বাধিকারী দীলিপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘বর্তমানে জেলায় চাহিদার তুলনায় কাঁচা চামড়া প্রক্রিয়াজাতের লবণের সরবরাহ বেশি আছে। ফলে কোনোরকম ঘাটতি হবে না। দামও বাড়বে না। এছাড়া বর্তমানে লবণের দাম নিম্নমুখী।’

বিজ্ঞাপন

রাজশাহী জেলা চামড়া ব্যবসায়ী গ্রুপের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রুবেল বলেন, ‘গতবছরের তুলনায় এবছর চামড়ার দাম বেড়েছে; এটা ভালো খবর। ঢাকার বাইরে প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম ৫০ থেকে ৫৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এটা সব চামড়া না। দেখা যায়, ৫০০ পিস চামড়ার মধ্যে মাত্র ২০০ পিস চামড়া এমন দামে বিক্রি হয়ে থাকে। বাকিগুলো নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়।’

তিনি বলেন, ‘বিগত বছরগুলোর বকেয়া ট্যানারি মালিকদের কাছে পাবে ব্যবসায়ীরা। এখন পর্যন্ত সেইভাবে টাকা পাওয়া যায়নি। এর মধ্যে কিছু টাকা হলেও পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’ এরপরও চামড়া কেনাকে কেন্দ্র করে তাদের প্রস্তুতি ভালো আছে বলে তিনি জানান।

রাজশাহী জেলা চামড়া ব্যবসায়ী গ্রুপের সভাপতি আসাদুজ্জামান মাসুদ বলেন, ‘প্রস্তুতি ভালো আছে। তবে এবার কোরবানি যে সময় হচ্ছে তাতে গরমের কারণে চামড়া দ্রুত নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই ৬ থেকে ৭ ঘণ্টার মধ্যে চামড়ায় লবণ দিতে হবে। তা না হলে চামড়া নষ্ট হয়ে যাবে। এছাড়া ২০১৪ থেকে প্রতি বছরের ট্যানারির টাকা বকেয়া রয়েছে। বকেয়া টাকার পরিমাণ সঠিকভাবে বলা সম্ভব নয়। তবে ট্যানারি মালিকরাও কিছু কিছু করে বয়েকা টাকা ফেরত দিয়েছেন। বাকিটাও ফেরত দেওয়ার চেষ্টা করছেন।’

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এমও

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন