বিজ্ঞাপন

শিশু নিনাদ হত্যা: ‘ময়নাতদন্ত রিপোর্টে মিলবে অনেক প্রশ্নের উত্তর’

June 17, 2018 | 4:11 pm

।। উজ্জল জিসান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা : রাজধানীর বনশ্রী ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুলের প্রথম শ্রেণির ছাত্র সাফওয়ান নিনাদের (৮) ময়নাতদন্ত হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে রোববার (১৭ জুন) ময়নাতদন্ত করেন ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ।

নিনাদের পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। রোববার হত্যার ঘটনায় মামলা হলেও এখনও হত্যার রহস্য পায়নি পুলিশ। তবে হত্যার রহস্য অনুসন্ধানে পুলিশের গোয়েন্দা শাখার পাশাপাশি র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখাও মাঠে কাজ করছে।

এদিকে ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ডা. সোহেল মাহমুদ এ বিষয়ে বেশি মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বলেছেন, ‘ময়নাতদন্ত শেষ হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে এলে অনেক প্রশ্নের উত্তর মিলবে। তখন বিষয়টি সবাইকে জানানো হবে।’

বিজ্ঞাপন

খিলগাঁওয়ের মেরাদিয়ার ভূঁইয়াপাড়া এলাকায় তাদের বাসার পাশেই খালি প্লটের একটি রিকশা-ভ্যান গ্যারেজ থেকে ঈদের দিন নিনাদের লাশ পায় পরিবার সদস্যরা।

নিনাদ গত শুক্রবার (১৫ জুন) রাত ১০ টা থেকেই নিখোঁজ ছিল বলে জানান তার বাবা স্বপন ব্যাপারী।

নিনাদ হত্যাকাণ্ডের তদন্তের বিষয়ে পুলিশের খিলগাঁও জোনের সহকারী কমিশনার নাদিয়া আক্তার জুই রোববার সারাবাংলাকে বলেন, ‘লাশ উদ্ধারের পর খিলগাঁও থানায় অজ্ঞাতনামাদের নামে একটি হত্যা মামলা হয়েছে। এখনও কাউকে আটক করা যায়নি। ভূঁইয়াপাড়ার আশেপাশে সকল লোককে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রেখেছি। এমনকি নিনাদের বাবা-মা যাদের সন্দেহ করছেন তাদেরকেও জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় আনা হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘তদন্ত চলছে। পুলিশ মাঠে কাজ করছে। আশা করি, খুব শিগগিরই হত্যার রহস্য উম্মোচন হবে।’

পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশ এবং র‌্যাবের গোয়েন্দারাও শিশু নিনাদ হত্যা রহস্য উদঘাটনে মাঠে নেমেছে।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (পূর্ব) উপ কমিশনার নুরুন্নবী চৌধুরী বলেন, ‘শিশু নিনাদ হত্যার ঘটনায় মাঠে নেমেছে গোয়েন্দা পুলিশ। অনেককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আশা করি এর রহস্য উম্মোচন করা যাবে।’

র‌্যাবের গণমাধ্যম শাখার সহকারী পরিচালক মেজর মেহেদি হাসান সারাবাংলাকে বলেন, ‘র‌্যাব-৩ শিশু নিনাদ হত্যার ঘটনাটি ছায়া তদন্ত করছে। অবশ্যই র‌্যাব হত্যাকারীদের খুঁজে বের করতে পারবে।’

বিজ্ঞাপন

নিনাদের মরদেহ মেরাদিয়া কবরস্থানে নানার কবরে দাফন করা হবে বলে জানিয়েছেন তার মামা সাংবাদিক এস এম মুন্না মিয়া।

মুন্না মিয়া বলেন, ‘জমি নিয়ে একই এলাকার সালাউদ্দিন, জহিরুল, কুলুমিয়াসহ ১০/১৫ জনের সঙ্গে নিনাদের বাবার বিরোধ চলছিল।’

সেই বিরোধের জের ধরেই তার ভাগ্নেকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

মামা এস এম মুন্না আরও জানান, শুক্রবার রাত ১০ টায় ২১৫/৫ মেরাদিয়া ভুইয়াপাড়ার বাসা থেকে নিখোঁজ হয় নিনাদ। নিনাদের সন্ধানে থানা পুলিশকে জানানো হয়। পাশাপাশি আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে খোঁজ করা হয়। কিন্তু খোঁজ মেলেনি। ঈদের দিন সকালে বাসার পাশে নর্দমায় রাখা ব্যাটারিচালিত একটি ভ্যানের ওপরে নিনাদের মৃতদেহ পাওয়া যায়। মরদেহের শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। গলায় ফাঁসের চিহ্ন, পায়ে ও হাতে মারধরের দাগ দেখা গেছে।

খিলগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মশিউর রহমান জানান, প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হচ্ছে- পারিবারিক সম্পদ দখলে বিরোধের জের ধরে নিনাদকে হত্যা করা হতে পারে। নিনাদের মুখমণ্ডলে পলিথিন গুঁজে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার ধরন দেখে মনে হচ্ছে এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। তবে তদন্ত চলছে, আশা করি খুব শীঘ্রই হত্যার রহস্য উদঘাটন করা যাবে।

সারাবাংলা/ইউজে/একে

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন