বিজ্ঞাপন

‘ম্যাজিক না, বাবার কাছে দেশের মানুষকে ভালোবাসতে শিখেছি’

September 2, 2018 | 7:27 pm

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: ‘অনেকেই প্রশ্ন করেন, আপনার ম্যাজিকটা কী। আসলে কোনো ম্যাজিক নয়, মানুষকে ভালোবাসি, মানুষের জন্য কাজ করি। বাবার কাছ থেকে শিখেছি কী করে দেশের মানুষকে ভালোবাসা যায়, কী করলে দেশের মানুষের ভালো হয়। শুধু সেটুকুই করার চেষ্টা করেছি।’

রোববার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জনগণের উন্নয়নই তার জনপ্রিয়তার মূলমন্ত্র— সে প্রসঙ্গেই তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সরকারে থাকলে দেশের জন্য কাজ করেছি, বিরোধী দলে থাকলেও দেশকে নিয়ে, দেশের মানুষকে নিয়ে পরিকল্পনা করেছি। ক্ষমতায় আসার পর থেকে সেভাবেই কাজ করছি। সাধারণ মানুষের উন্নয়ন, দেশের উন্নয়ন ছাড়া আমাদের আর কোনো লক্ষ্য নেই।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘বিশ্বে অনেক নামি-দামি লোক আছে। তারা লাভজনক বিভিন্ন কাজে অংশ নেয়। আর আমি চিন্তা করি মানুষ কতটা লাভবান হবে। তৃণমূলের লোকটার পেটে ভাত আছে কি না, প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষেরা চিকিৎসাটা পাচ্ছে কি না— এগুলো সবসময় ভাবি।’

আগামী জাতীয় নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচন হবে। জনগণ যদি সঙ্গে থাকে, এই নির্বাচন কেউ বানচাল করতে পারবে না। ভোট অবাধ-সুষ্ঠু হবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। আর জনগণ ভোট দিলে আছি, না দিলে নেই— সেটা বারবার বলেছি। তবে মানুষ এখন সচেতন হচ্ছে। তারা দেখতে পাচ্ছে দেশের উন্নয়ন হচ্ছে।’ এ সময় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন রাজনৈতিক জোটকেও স্বাগত জানান তিনি।

যতক্ষণ বেঁচে আছেন, মানুষের জন্য কাজ করে যাবেন— এমন প্রত্যয় জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ষড়যন্ত্র আছে, থাকবে। আমার বাবাকে হত্যা করা হয়েছে। আমাকেও হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। মৃত্যু তো হবেই, সেটা নিয়ে আমার কোনো চিন্তা নেই। আমি একটা মুহূর্তও নষ্ট করতে চাই না। যতক্ষণ বেঁচে থাকব, মানুষের জন্য কাজ করে যাব।’

বিজ্ঞাপন

এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘জনগণের ওপর আমার বিশ্বাস আছে। ষড়যন্ত্রকারীরা যতই সক্রিয় হোক, তাদের মোকাবিলা জনগণ করবে। আমরা যদি আবার ক্ষমতায় আসতে পারি, আর্থসামাজিক উন্নয়নের যে প্রকল্পগুলো শুরু করেছি, সেগুলো শেষ করতে পারব। আমরা খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পেরেছি। অনেক জেলা এখন ভিক্ষুকমুক্ত। এখন মা-বাবারা সন্তানদের স্কুলে পাঠান। যোগাযোগ ও বিদ্যুৎ খাতের যে কাজগুলো এখন হাতে নিয়েছি, আবার সরকারে আসতে পারলে সেসব কাজ শেষ করতে পারব। না আসতে পারলে আগে তারা যা করেছে, তাই করবে। সুদিন আসবে না, দুর্দিন আসবে। জনগণ ভোট দিলে আছি, না দিলে নাই। কোনো আফসোস নাই।’

শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘আমাদের দেশে কিছু পাকিপ্রেমী এখনও রয়ে গেছে। অনেক কিছুতেই তাদের হাত রয়ে গেছে। যে কারণে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে তারা সুবিধাবোধ করে না। কিন্তু আমার প্রশ্ন, চিন্তাশীলরা কেন ভুল করে? তারা তো দেশকে আরেকটা পকিস্তানের দিকে নিয়ে যাচ্ছিল।’

পাকিস্তানের নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়া ইমরান খান সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের সম্পর্কের প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ইমরান খান তো মাঠে অনেক ছক্কা মেরেছেন। এখন দেখি, রাজনীতিতে ছক্কা মারতে পারেন কি না। তবে তারা যদি সহযোগিতা চায়, আমরা সহায়তা করব। সেখানকার মানুষের কথা চিন্তা করতে হবে, কোনো চক্রান্তকারীর কথা নয়।’

এর আগে, আঞ্চলিক জোট বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টিসেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশনের (বিমসটেক) চতুর্থ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে ৩০ আগস্ট নেপাল যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধনী সেশন ও শুক্রবার (৩১ আগস্ট) সকালে সমাপনী অধিবেশনসহ সম্মেলনের বিভিন্ন ইভেন্টে অংশ নেন। সম্মেলনে উদ্বোধনী বক্তব্যও রাখেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

বিমসটেকের চতুর্থ এই শীর্ষ সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, ভুটানের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা দাসো শেরিং ওয়াংচুক, শ্রীলংকান প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা, থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী প্রিয়ুথ চ্যান-ও-চার ও মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট বিমসটেক সম্মেলনে যোগ দেন। সম্মেলনের বিভিন্ন অধিবেশনে যোগ দেওয়া ছাড়াও সাইডলাইনে অন্যান্য দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে সাইডলাইনে বৈঠক করেন শেখ হাসিনা।

শুক্রবার একটি যৌথ ঘোষণার মধ্য দিয়ে এবারের বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলন শেষ হয়। ১৯৯৭ সালের ৬ জুন ব্যাংকক ঘোষণার মধ্য দিয়ে এই উপআঞ্চলিক সংস্থাটি গঠিত হয়। এর সদস্য দেশগুলোর মধ্যে পাঁচটি দক্ষিণ এশিয়ার— বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, নেপাল ও শ্রীলংকা। অন্য দু’টি দেশ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মিয়ানমার ও থাইল্যান্ড।

সারাবাংলা/এটি/একে/টিআর

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন