July 1, 2018 | 3:17 pm
রেজওয়ান সিদ্দিকী অর্ণ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।
সবকিছু পরিবর্তনশীল। সময়ের সাথে সাথে মানুষও পরিবর্তন হয়ে যায়। কাজের ধরন পরিবর্তন হয়। এটা ঠিক যে, সবখানেই আগের থেকে কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। যে পরিরবর্তন এসেছে সেটা ভালো খারাপ-দুটো মিলিয়ে। এখন ভালো ভালো অনেক কাজ হচ্ছে। অনেক মেধাবী পরিচালক নাটক নির্মাণ করছেন। নতুন নতুন ছেলে মেয়েরা কাজ করছে। এটা আমাদের জন্য খুবই ইতিবাচক। এছাড়া খারাপের দিক যেটা বলতে চাই সেটা হলো, অনেকের মধ্যে কথা দিয়ে কথা রাখার আগ্রহের অভাব রয়েছে। গুছিয়ে কাজ করার প্রবণতা কম।
দেশে থাকার সময়ে আমি খুব ভালো ছিলাম। এখন বিদেশেও খুব ভালো আছি। যেহেতু বাংলাদেশ আমার দেশ সেহেতু এখানে আসলে একধরনের ভালোলাগা অনুভূত হয়। আর নিউইয়র্কে আমি চাকরি করছি। ‘সেফোরা’ কোম্পানির বিউটি অ্যাডভাইজার হিসেবে। সারাক্ষণ ব্যস্ততার মধ্যে থাকতে হয়।
আমি ওখানে যে ক্যারিয়ার বেছে নিয়েছি সেটা সম্পর্কে অনেকে জানে না। জানলেও বিদেশে এই পেশার চাহিদা সম্পর্কে অবগত নয়। কারন আমাদের দেশে এর মূল্যায়ন নেই। আমি যখন প্রথম ‘ম্যাক’-এর সিনিয়র মেক-আপ আর্টিস্ট হিসেবে চাকরি আরম্ভ করেছিলাম তখন গণমাধ্যম আমাকে নিয়ে অনেক হেয় করে লেখালেখি করেছিল। আমি নাকি সেলস গার্ল! এসব পড়ে আমার খুব হাসি পেতো। যদিও আমি এসব পাত্তা না দিয়ে আমার কাজ করে গেছি, এখনও করছি। এটা নিয়ে প্রতিবাদ করিনি, করার প্রযোজনীয়তা অনুভব করিনি। যারা এই বিষয়ে বোঝেই না তাদের সাথে এটা নিয়ে কথা বলা মানে সময় নষ্ট।
একান্তই ব্যক্তিগত কারনে আমি সেখানে যাই। পরবর্তীতে স্থায়ীভাবে বসবাস আরম্ভ করি। তবে এখানে একটা কথা বলতে চাই, জনপ্রিয়তা কিন্তু একদিনে তৈরী হয়না। এটা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। আমি আগে যেসব কাজ করেছি সেসব কাজ দর্শকের ভালো লেগেছিলো বিধায় তাদের মনে জায়গা পেয়েছি। দর্শকের মনে যে জায়গাটা তৈরী হয় সেটা সারাজীবনই থেকে যায়। আমি মনে করি আমি যেসব কাজ করেছি সেসব কাজ সারাজীবন দর্শকদের মনে থেকে যাবে।
এবার দেশে আসার পর বিশ থেকে পঁচিশটি নাটকে কাজ করার প্রস্তাব পেয়েছি। সবার সাথে কাজ করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। এরমধ্যে আমি খুব বাছাই করে দশ থেকে বারোটার মতো নাটকে কাজ করেছি। নাটকে অভিনয় করার ক্ষেত্রে আমি মূলত গল্পটাকে প্রাধান্য দেই। সেই সাথে নির্মাণশৈলী। আমার কাজে যদি মনে হয় এই নির্মাতা ভালো নির্মাণ করতে পারবেন তখন রাজি হই।
প্রায় তিন মাস হলো আমি দেশে এসেছি। আমার আসার খবর জানার পর ভক্তরা অপেক্ষায় ছিলেন আমার অভিনীত নাটক দেখার জন্য। তারা আমার নাটক দেখে পছন্দ করেছেন। খুব ভালো সাড়া পেয়েছি। ফেসবুক, মোবাইলে মেসেজ করে কিংবা দেখা হলে অনেকে নাটকের প্রশংসা করছেন। আমার খুব ভালো লেগেছে এটা ভেবে যে, মানুষ আমাকে এখনও ভালোবাসে। বিদেশে যাওয়ার পরও তারা আমাকে ভুলে যান নি।
এটা ঠিক, দর্শকদের সাথে কিছুটা দূরত্ব তৈরী হচ্ছে। তারা আমাকে পাচ্ছে না। আমিও তাদের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারছি না। তবে প্রতিনিয়ত পর্দায় আমার উপস্থিতি থাকুক এটা আমি চাই না। মানুষ আমাকে কম কম দেখুক, মিস করুক এটাই আমি চাই।
আমার কাছে মনে হয় চলচ্চিত্র বিশাল বড় একটি জায়গা। এখানে অনেক প্রস্তুতির দরকার। তবে অনেক ভালো ভালো কাজের প্রস্তাব পেয়েছি আমি। কিন্তু ব্যাটে বলে না মেলার কারণে চলচ্চিত্রে অভিনয় করা হয়ে ওঠেনি। আমি যেরমক চাচ্ছিলাম সেরকম হয়নি। যদিও আমার চলচ্চিত্রে খুব একটা আগ্রহ ছিল না। অভিনয় আর বিজ্ঞাপন আমার ভালোলাগার জায়গা।
এখন প্রস্তাব পেলে যদি আমার পছন্দ মতো গল্প পাই, ব্যাটে বলে মিলে যায় তাহলে অবশ্যই আমি কাজ করবো। নায়ক হিসেবে নির্দিষ্ট কাউকে চাইনা। গল্প যে নায়ককে ডিমান্ড করবে সেই নায়কের সাথে অভিনয় করবো।
আমাকে কোনভাবেই প্রভাব ফেলেনি। যদি বিষয়টি নিয়ে আমি বেশি বেশি ভাবতাম তাহলে প্রভাব ফেলার সম্ভাবনা ছিল। কাজকে নিয়ে আমি এতোটাই ব্যস্ত থাকি যে, আমি এটা নিয়ে ভাবার সময় পাইনি। আমার কাছে মনে হয়েছে এটা আমার জন্য ইতিবাচক।
এটি নিয়ে এখন চিন্তা করছি আবার করছি না। এখন আমি ভীষণ ব্যস্ত আমার কাজ নিয়ে। তবে এরমধ্যে যদি কাউকে ভালো লেগে যায়, পছন্দের সেই মানুষকে পেয়ে যাই তাহলে পুনরায় সংসার জীবনে পা রাখার পরিকল্পনা আছে।
আমি ব্রাজিলের ডাই-হার্ট ফ্যান। ব্রজিলের সবাই আমার প্রিয় খেলোয়াড় তবে নেইমার আমার অনেক পছন্দের। নেইমার অনেক পাগলাটে খেলোয়াড়। ওর খেলার কৌশল মনোমুগ্ধকর। ওর এই ক্রীড়াশৈলী দেখতে আমার ভালো লাগে। আর অবশ্যই ব্রাজিল এবার চ্যাম্পিয়ন হবে।
ছবি: আব্দুল্লাহ আল মামুন এরিন
সারাবাংলা/আরএসও/পিএ