বিজ্ঞাপন

‘শাকিব ভালো বন্ধু, জয়া বিরল অভিনেত্রী’

September 27, 2018 | 6:06 pm

রেজওয়ান সিদ্দিকী অর্ণ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

রুদ্রনীল ঘোষকে অতিমানবীয় অভিনেতা বললে ভুল বলা হবে না। কখনো তিনি কমেডি করে মানুষ হাসান, কখনো আবার খলনায়ক হয়ে ভয় ধরিয়ে দেন দর্শক মনে। পর্দায় তিনি বরাবরই চরিত্র নিয়ে খেলতে ভালোবাসেন। তাই প্রতি সিনেমায় ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে ধরা দেন। তার কাছে সব চরিত্রই সমান গুরুত্বপূর্ণ। তিনি সবসময় নিজেকে অভিনয়ের ছাত্র মনে করেন।

সম্প্রতি রুদ্রনীল ঘোষ অভিনয় করেছেন ‘নাকাব’ সিনেমায়। এই সিনেমায় তিনি সহশিল্পী হিসেবে বাংলাদেশের সুপারস্টার শাকিব খানের সঙ্গে পর্দা ভাগাভাগি করেছেন। চলতি সপ্তাহে সিনেমাটি পশ্চিম বাংলায় মুক্তি পেয়েছে। এছাড়া তিনি বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসানে সঙ্গে অভিনয় করেছেন দুটি সিনেমায়। তিনি মনে করেন জয়া আহসান উচ্চমানের অভিনেত্রী। তাই তিনি দুই বাংলায় সমান জনপ্রিয়।

শাকিব খান ও জয়া আহসানের সঙ্গে অভিনয়ের অভিজ্ঞতা নিয়ে রুদ্রনীল ঘোষ কথা বলেছেন সারাবাংলার সঙ্গে। তাদের সম্পর্কে খোলাখুলি মতামত দিয়েছেন। সেই সঙ্গে গল্প করেছেন নিজের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে।  


  • ‘নাকাব’ সিনেমায় অভিনয় করেছেন। চলতি সপ্তাহে পশ্চিম বাংলায় মুক্তি পেয়েছে। কেমন সাড়া পাচ্ছেন ?

বলা যায় বেশ ভালোই সাড়া পাচ্ছি। টলিউডে শাকিব খান নতুন। বাংলাদেশে তো সে সুপারস্টার। কলকাতায় তার কেবল যাত্রা শুরু হলো। সামনে নিশ্চয়ই তার সিনেমা আরও ভালো চলবে।

  • প্রথমবারের মতো শাকিব খানের সঙ্গে অভিনয় করেছেন। তাকে কিভাবে মূল্যায়ন করবেন ?

কাজের ব্যাপারে শাকিব খান খুব সচেতন মানুষ। ব্যক্তিগতভাবে ও আমার খুব ভালো বন্ধু। প্রথমবার একসঙ্গে কাজ করেই আমাদের পেশাদার এবং ব্যক্তিগত সম্পর্ক খুব ভালো হয়েছে। অনেক ব্যক্তিগত অনুভূতি লেনদেন করেছি আমরা।

  • এই সিনেমার মাধ্যমে শাকিব খান পশ্চিম বাংলার স্থানীয় সিনেমায় অভিনয় শুরু করলেন। সেখানে তার সমসাময়িক দেব, জিৎ রয়েছেন। এই তিন নায়কের মধ্যে কাকে এগিয়ে রাখবেন?

এই মুহূর্তে এপার বাংলার দর্শক ভালো অভিনয় আর ভালো গল্পের দিকে বেশি জোর দিচ্ছেন। তাই স্টারডমের সঙ্গে যিনি বাকি দুটোকে সাথে রাখবেন তিনি এগিয়ে থাকবেন। সবটাই দর্শকের ইচ্ছা।

বিজ্ঞাপন

তিনজনই পরিশ্রমী। মুম্বাইয়ে যেমন শাহরুখ, সালমান এবং আমিরের তুলনা চলে না। তেমনি বাংলায় এদেরও। তিনজন তিন রকম স্টাইল নিয়ে কাজ করেন।

  • জয়া আহসানের সঙ্গেও আপনি অভিনয় করেছেন। তার সম্পর্কে কি বলবেন?

বিরল অভিনেত্রী। তিনি এপার বাংলাতে অভিনয়গুণে স্বল্প সময়ে প্রথম সারির অভিনেত্রী হিসেবে নিজের জায়গা তৈরী করে নিয়েছেন। দর্শকের মন তো জয় করেছেেই। সেই সঙ্গে সমালোচকদের মন ভরিয়েছেন। এক কথায় বুদ্ধি আর যোগ্যতার ভারসাম্য বজায় রেখে চলা এক আধুনিক মানুষ জয়া।

বিজ্ঞাপন
  • সিনেমাভেদে আপনি ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায়। সেইসব চরিত্রগুলোর বেশিরভাগে কমেডির ছোঁয়া থাকে। এ ধরনের চরিত্রে অভিনয় কি একঘেয়েমি মনে হয় না?

না। নায়করা যেমন সব ছবিতে ফাইট, নাচ আর প্রেম করতে করতে একঘেয়েমিতা অনুভব করেন না। আমার ব্যাপারটি ঠিক তেমন।

  • চরিত্রাভিনেতা হিসেবে আপনাকে অভিনয় করতে দেখা যায়। কখনও নায়ক হওয়ার ইচ্ছা জাগেনি ?

অভিনেতা মানে যিনি নানান ধরনের চরিত্রে অভিনয় করতে করতে জানেন। তাই আলাদা করে ‌‌‌‌‘চরিত্রাভিনেতা’ শব্দটি বলা ভুল। সব কটিই চরিত্র। আর আমি নানান ধরণের চরিত্র করি। সাধারণত মানুষের কাছে ভাইরাল হয় অ্যাকশান, যৌনতা, কমেডি দৃশ্য। তার মানে এটা নয় যে সেই অভিনতা-অভিনেত্রী শুধু সেই নির্দিষ্ট চরিত্রই করছেন। আজও আমার অভিনীত ‌’চ্যাপলিন’ সিনেমাটি দেশে বিদেশে সমাদৃত। সেটা মূল চরিত্র ছিল।

আমি অভিনেতা। সব রকমের চরিত্র করা আমার দায়িত্ব। পরিচালক-প্রযোজক যে চরিত্র আমায় দেন সেটা জীবন্ত করাটাই আমার লক্ষ্য। সেটা মূল, না কমেডি না ভিলেন সেটা নিয়ে ভাবিনা। সারা পৃথিবী যে ভাবে চলছে অভিনয় নিয়ে আমি তেমন ভাবেই চলতে চাই। বাংলাদেশের মোশাররফ করিম, চঞ্চল চৌধুরীর মতো শক্তিশালী অভিনেতাদের বাংলা সিনেমায় ব্যবহার না করাটা যতটা দুঃখের, তার থেকে বেশি ক্ষতি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির।

বিজ্ঞাপন
  • মোশাররফ করিম, চঞ্চল চৌধুরী মাঝে মাঝে কিছু সেমি কমার্শিয়াল সিনেমায় অভিনয় করছেন।

আমি সেসব দেখেছি। আমার কথাও হয়েছে দুজনের সাথে। আমি চাই এই দুজন কলকাতার সিনেমায় কাজ করুক।

  • সৃজিতের ‌‘এক যে ছিল রাজা’ সিনেমায় অভিনয় করেছেন। এই ছবিতেও জয়া রয়েছেন। সাফটা চুক্তির আওতায় এটি বাংলাদেশে মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ঐতিহাসিক পটভূমির ওপর নির্মিত সিনেমাটি নিয়ে কি বলবেন?

সৃজিতের লক্ষ্য সৃজনশীল সিনেমা নির্মাণ করা। যে সিনেমায় ভাবনা বা বোধের জায়গা থাকবে। খুব সচেতনভাবে বিষয়বস্তু নির্বাচন করে সৃজিত। তাই হয়তো ভাওয়াল রাজার ঘটনা নিয়ে অন্যভাবে ‘এক যে ছিল রাজা’ তৈরী করেছেন। যা আমার কাছে ক্লাসিক পর্যায়ে পড়ে। চিত্রনাট্য, অভিনয়, মিউজিক, সিনেমাটোগ্রাফি দিয়ে সেই সময়টাকে মুড়ে ফেলেছেন সৃজিত।

  • টলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে যে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে তাতে  কি সৃজিত মুখার্জির বড় অবদান বলা যেতে পারে?

সৃজিত এবং কৌশিক গাঙ্গুলি।এই দুজনই আবার আন্তর্জাতিকভাবে বাংলা সিনেমাকে সম্মান এনে দিচ্ছেন। আগের গুণী পরিচালকরা শুধু গুণগত মানের ভালো সিনেমা বানাতেন। সাধারণ দর্শককে টানতে পারতেন না। পুরস্কার আসত। কিন্তু প্রযোজকের টাকা উঠত না, সিনেমা হলে দর্শক আসত না বলে। কিন্তু আজ সৃজিত, কৌশিক গাঙ্গুলি, শিবপ্রসাদ, অরিন্দম শীলরা পুরস্কারের সাথে সাথে দর্শককে আবার সিনেমা হলে ফিরিয়ে আনছেন। হাউসফুল দিচ্ছেন।

  • তাদের সিনেমাগুলো সাধারণত সেমি কমার্শিয়াল।  সেক্ষেত্রে হার্ডকোর কমার্শিয়াল সিনেমাগুলো কি হাউজফুল হচ্ছে?

না। এদেশে উল্টো  হচ্ছে। ভালো গল্প, ভালো অভিনয় না থাকলে দর্শক সেই সব ফিল্ম ছুঁড়ে ফেলে দিচ্ছেন। স্টারডম দেখছেন না। গ্রাম বা শহর যেখানেই হোক। বরং সেমি কয়ার্শিয়াল ফিল্মগুলোই এখন লগ্নিকৃত টাকা ফেরত দিচ্ছে বেশি বেশি। নাচ, গান, ফাইটের মেইনস্ট্রিম ফিল্ম গত দুই বছর ধরে ব্যবসা খুব খারাপ করছে।

  • অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষের নিজস্বতা কি? 

আমি সাধারণ মানুষ। সাধারণ মানের অভিনেতা। আজও অভিনয়ের ছাত্র। আজীবন অভিনয় শিখে যেতে চাই।

সারাবাংলা/আরএসও/পিএ


আরো দেখুন :

লুবনা মারিয়ামের সাক্ষাৎকার: নাচের মানুষ, কাছের মানুষ

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন