November 5, 2018 | 3:35 pm
।। স্পোর্টস ডেস্ক ।।
সিলেট টেস্ট বাঁচাতে লড়ছে বাংলাদেশ। রেকর্ড গড়ে জিততে হবে স্বাগতিকদের। বাংলাদেশে এত রান তাড়া করে জেতেনি কোনো দল। দ্বিতীয় ইনিংসে জিম্বাবুয়ে অলআউট হওয়ার আগে করেছে ১৮১ রান। তাতে বাংলাদেশের জয়ের জন্য দরকার ৩২১ রান। স্বল্প আলোর কারণে নির্ধারিত সময়ের আগে শেষ হয় তৃতীয় দিন। তার আগে স্বাগতিকরা বিনা উইকেটে তুলেছে ২৬ রান। চতুর্থ দিন ব্যাটিংয়ের অপেক্ষায় অপরাজিত লিটন দাস (১৪) এবং ইমরুল কায়েস (১২)। বাংলাদেশ এখনও পিছিয়ে ২৯৫ রান।
এর আগে ১৩৯ রানের বিশাল লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে বিনা উইকেটে ১ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শেষ করে জিম্বাবুয়ে। হাতে ১০ উইকেট রেখে ১৪০ রানের লিড নিয়ে তৃতীয় দিন আবারো ব্যাট শুরু করে হ্যামিলটন মাসাকাদজার দল। এর আগে প্রথম ইনিংসে ২৮২ রান তুলে অলআউট হয় সফরকারী জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশ তাদের প্রথম ইনিংসে ১৪৩ রানে গুটিয়ে যায়। জয়ের জন্য স্বাগতিকদের সামনে টার্গেট ৩২১ রান। সাদা পোশাকে এতো বড় লক্ষ্য তাড়া করে জিততে পারেনি বাংলাদেশ। ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২১৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। ২০০৮ সালে চট্টগ্রামে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৩১৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জিতেছিল নিউজিল্যান্ড।
নিজেদের প্রথম ইনিংসে জিম্বাবুয়ের হয়ে দলপতি হ্যামিলটন মাসাকাদজা ৫২, ব্রায়ান চারি ১৩, বেন্ড্রন টেইলর ৬, শেন উইলিয়ামস ৮৮, সিকান্দার রাজা ১৯, পিটার মুর অপরাজিত ৬৩, রেগিস চাকাভা ২৮ রান করেন। বাংলাদেশের হয়ে তাইজুল ইসলাম ৬টি, নাজমুল ইসলাম অপু দুটি, আবু জায়েদ রাহি একটি আর মাহমুদুল্লাহ একটি করে উইকেট পান। মেহেদি হাসান মিরাজ এবং আরিফুল হক কোনো উইকেট পাননি। বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং ধ্বস নামে। ওপেনার লিটন দাস ৯, ইমরুল কায়েস ৫, মুমিনুল হক ১১, নাজমুল হোসেন শান্ত ৫, মাহমুদুল্লাহ ০, মুশফিকুর রহিম ৩১, আরিফুল হক অপরাজিত ৪১, মেহেদি হাসান মিরাজ ২১, তাইজুল ইসলাম ৮, নাজমুল অপু ৪, আবু জায়েদ রাহি ০ রান করেন। জিম্বাবুয়ের সিকান্দার রাজা তিনটি, তেন্দাই চাতারা তিনটি, কাইল জারভিস দুটি আর শেন উইলিয়ামস একটি করে উইকেট পান।
১৩৯ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে জিম্বাবুয়ে। তৃতীয় দিনের তৃতীয় ওভারের প্রথম বলেই ব্রায়ান চারির ক্যাচ তালুবন্দি করতে পারেননি নাজমুল অপু। আবু জায়েদ রাহির বলে পয়েন্টে ক্যাচ উঠেছিল। অপু ডান দিকে ঝাঁপিয়ে ক্যাচটি লুফে নিতে পারেননি। সে সময় চারির রান ছিল ১। ইনিংসর ১৩তম ওভারে সেই চারিকে বোল্ড করে ফিরিয়ে দেন মেহেদি হাসান মিরাজ। আউট হওয়ার আগে তিনি করেন ৪ রান। দলীয় ১৯ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। দলীয় ৪৭ রানের মাথায় তাইজুল ফিরিয়ে দেন ব্রেন্ডন টেইলরকে (২৪)। ইমরুল কায়েসের দুর্দান্ত এক ক্যাচে সাজঘরের পথ ধরেন টেইলর। প্রথম সেশনে বাংলাদেশের প্রাপ্তি দুই উইকেট। মধ্যাহ্ন বিরতিতে যাওয়ার আগে সফরকারী জিম্বাবুয়ে দুই উইকেটে তোলে ৯১ রান।
ইনিংসের ৩৭তম ওভারে মিরাজ দ্বিতীয় উইকেট পান। এলবির ফাঁদে ফেলে ফিরিয়ে হ্যামিলটন মাসাকাদজাকে (৪৮)। দলীয় ১২১ রানের মাথায় চতুর্থ উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। তাইজুল দিনের দ্বিতীয় উইকেট তুলে নেন শেন উইলিয়ামসকে বোল্ড করে। বিদায়ের আগে উইলিয়ামস করেন ২০ রান। ৪২তম ওভারের পঞ্চম বলে উইলিয়ামসকে ফেরানোর পরের বলেই তাইজুল ফিরিয়ে দেন পিটার মুরকে। নিজের পরের ওভারেই তাইজুল ফিরিয়ে দেন সিকান্দার রাজাকে (২৫)। দ্বিতীয় সেশন শেষে জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৬ উইকেটে ১৬৫ রান, লিড বেড়ে দাঁড়ায় ৩০৪ রান। তৃতীয় সেশনে ফিল্ডিংয়ে নেমে রেগিস চাকাভাকে (২০) ফিরিয়ে দেন নাজমুল অপু। আর ১৭ রান করা ওয়েলিংটন মাসাকাদজাকে বিদায় করেন মিরাজ। ব্রেন্ডন মাভুতা নাজমুল অপুর শিকারে সাজঘরে ফেরেন। শেষ ব্যাটসম্যান তেন্দাই চাতারাকে ফেরান তাইজুল। এই উইকেটের মধ্যদিয়ে ৫ উইকেট তুলে নেন তিনি। মোট ১১ উইকেট দখল করেন তাইজুল।
এই ম্যাচের মধ্যদিয়ে টেস্টে অভিষেক হয় মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যান আরিফুল হক এবং স্পিনার নাজমুল ইসলাম অপুর। এদিকে, অভিষেক হয়েছে জিম্বাবুয়ের বেন্ডন মাভুতার। ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করছে গাজী টিভি। র্যাবিটহোলবিডি তে ক্লিক করেও ম্যাচটি সরাসরি দেখা যাচ্ছে।
সবশেষ আইসিসির প্রকাশিত র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশ ৯ নম্বরে আর জিম্বাবুয়ে ১০ নম্বরে, বাংলাদেশের রেটিং ৬৭ আর জিম্বাবুয়ের ২। এই সিরিজের আগে বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে খেলেছে ১৪টি টেস্ট ম্যাচ। যেখানে জয়ের পাল্লায় এগিয়ে জিম্বাবুয়ে, বাংলাদেশের বিপক্ষে জিতেছে ৬টি ম্যাচ। আর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশ জিতেছে ৫টি ম্যাচ। বাকি তিনটি ম্যাচ ড্র হয়।
সারাবাংলা/এমআরপি