বিজ্ঞাপন

‘তফসিলের পর অরাজকতা করলে ব্যবস্থা নেবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী’

November 7, 2018 | 6:31 pm

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: তফসিল ঘোষণার পর কেউ অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ। তফসিলকে কেন্দ্র করে বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

বুধবার (৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংলাপ শেষে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

আরও পড়ুন- ‘৮ নভেম্বর তফসিল ঘোষণায় আ.লীগের সমর্থন আছে’

বিজ্ঞাপন

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের সঙ্গে দুই দফা সংলাপের পর জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট জানিয়েছে, তাদের দাবি তারা জানিয়েছেন। এরপর সংলাপ ব্যর্থ হলে সেই দায় সরকারের। সরকারি দাবি মেনে না নিলে আন্দোলন করে দাবি আদায় করা হবে। এর আগেই ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন এই জোটটি তফসিল পেছানোর দাবি জানিয়ে রেখেছে। আজ বুধবার দ্বিতীয় দফা সংলাপের পর আগামীকাল রাজশাহীতে রোড মার্চের কর্মসূচি দিয়েছে এই জোট।

ঐক্যফ্রন্টের রোড মার্চ ঘোষণায় তফসিলের পরে জনগণের অসুবিধা হয়, এমন কোনো কর্মসূচি হলে কী করা হবে— জানতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে পরিস্থিতি মোকাবিলায় নির্দেশনা দেবো। ঐক্যফ্রন্টের কর্মসূচি অবহিত না হলেও কেউ যদি তফসিল ঘোষণায় বাধা দেয়, তাহলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, আমরা এখনও (তাদের কর্মসূচির বিষয়ে) অবহিত নই। যখন জানব, তখন আলোচনা করব। তফসিল ঘোষণার পরই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ইসির অধীনে থাকবে। তখন এ ধরনের কোনো পরিস্থিতি হলে (পরিস্থিতি মোকাবিলায়) আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া হবে।

বিজ্ঞাপন

আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে তফসিলের তারিখ না পেছাতে এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে তফসিল পেছানোর আহ্বান জানানো হয়েছে। দু’টিই দেশের বড় দুইটি রাজনৈতিক শক্তি। এ ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন কার আহ্বানে সাড়া দিচ্ছে— এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, তারা তাদের মতো পরামর্শ দিয়েছে বা আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু এটা অন্য কারও সিদ্ধান্ত নয়। এটা কমিশনের নিজস্ব সিদ্ধান্ত।

আরও পড়ুন- ইসির সঙ্গে আওয়ামী লীগের সংলাপ চলছে

ব্রিফিংয়ে সকালে জাতীয় পার্টি ও বিকেলে আওয়ামী লীগের সঙ্গে ইসির বৈঠকের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন হেলালুদ্দীন আহমেদ। ইসি বৃহস্পতিবার তফসিল ঘোষণায় শতভাগ প্রস্তুত জানিয়ে তিনি বলেন, ইসি আশা করছে, সব দল অংশ নেবে। নির্বাচনে সব দলের জন্য ক্ষেত্রও প্রস্তুত রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আমাদের এ তারিখের বিষয়ে অনড় থাকতে বলা হয়েছে। তারা বলেছে, নির্বাচন কমিশন যেন কোনো চাপের কাছে মাথা নত না করে। আওয়ামী লীগ বলেছে, বিতর্কিত প্রতিষ্ঠানের বিতর্কিত কর্মকর্তাদের যেন ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া না হয়।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ইসি যেন সংবিধান ও আইন মেনে কাজ করতে পারে, সে ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে বলে জানানো হয়েছে। নির্বাচনের সময় আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীরা আচরণ বিধিমালা মেনেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন বলেও জানিয়েছেন তারা।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপে নাগরিক ঐক্যের ‘বাকবিতণ্ডা’কে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ অনিবন্ধিত দলের সঙ্গে সংলাপ না করার পরামর্শ দিয়েছে বলে জানান ইসি সচিব হেলালুদ্দীন। তিনি বলেন, অনিবন্ধিত দলের সঙ্গে সংলাপ না করার পরামর্শ দিয়েছে আওয়ামী লীগ। বিষয়টি আপনাদের অবহিত করলাম। কমিশন সংলাপ করছে, উনারা (আওয়ামী লীগ) পরামর্শ দিয়েছে। কার সঙ্গে সংলাপ হবে বা হবে না, সে সিদ্ধান্ত নেবে কমিশনই।

ইসির সঙ্গে সংলাপে জাতীয় পার্টি স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের কথা বলেছে বলে উল্লেখ করে ইসি সচিব। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অভিযান চালাতেও বলেছে দলটি। জাতীয় পার্টি দেশের একটি বড় রাজনৈতিক দল। তাদের এসব কথা আমরা আমলে নিয়েছি।

এর আগের সংসদ নির্বাচনগুলোতে তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকেই বিভিন্ন জেলায় প্রশাসন ও পুলিশের পদস্থ ব্যক্তিদের রদবদল করা হয়েছে। এবারও একই ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না— জানতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, আগে তফসিল ঘোষণা হোক, তারপর আমরা দেখব।

এখন পর্যন্ত সীমিতসংখ্যক কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের সিদ্ধান্ত আছে বলেও জানান তিনি।

আরও পড়ুন-

৮ তারিখেই তফসিল চায় যুক্তফ্রন্ট

৮ নভেম্বরই তফসিল চায় জাতীয় পার্টি

ইসিকে ঐক্যফ্রন্ট, ‘আপনাদের দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন কীভাবে হবে?’

সারাবাংলা/জিএস/টিআর

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন