বিজ্ঞাপন

লাল জামা পেয়ে খুশি আয়শা, ছোট্ট হাতে রাঙাতে চায় মেহেদি

June 5, 2019 | 4:04 pm

সোহেল রানা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বৃষ্টি উপেক্ষা করে ঈদ আনন্দে মেতেছেন সারাদেশের মানুষ। বরাবরের মতই বড়দের চেয়ে ঈদ আনন্দ ছোটদেরই বেশি।  ঈদে নতুন  জামা পরে ঘোরাঘুরিতেই ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে শহর আর গ্রামের সব শিশু। কিন্তু কেমন কাটছে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে -বসে কাটানো শিশুদের ঈদ? কি করছে তারা? এসব শিশুদের  ঈদ উদযাপনের খোঁজ নিতেই এই প্রতিবেদক ঢুঁ মারেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২০৮ নাম্বার কক্ষের শিশু ওয়ার্ডে। দেখা মেলে  নানা বয়সী শিশুর। তারা জরা-অসুস্থতা উপেক্ষা করেও হাসিমুখে ঈদ আনন্দ উপভোগের চেষ্টা করছে ।

বিজ্ঞাপন

কিছুটা পথ যেতেই চোখ আটকে যায় লাল টুকটুকে জামা পরা বছর চারেকের শিশুটির দিকে। হাসিমুখের ছোট্ট মেয়েটির সামনে  বেশকিছু খেলনা ছড়ানো। তার পাশে বসা সেবিকার কাছে জানো গেল মেয়েটির নাম আয়শা। সে  কথা বলতে ও হাঁটতে পারে না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেই সেবিকা  এই প্রতিবেদককে জানান, গত জানুয়ারি মাসে ঢাকা মেডিকেল কলেজের জরুরি বিভাগের টিকেট কাউন্টারের সামনে কে বা কারা শিশুটিকে কাপড়চোপড়সহ ফেলে যায়। সেই থেকে সবাই তাকে আয়শা নামে  ডাকে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শিশুটিকে ওয়ার্ডে রেখে চিকিৎসা শুরু করে। ওয়ার্ডের চিকিৎসক এবং সেবিকারাই তার দেখাশোনা করেন। একজন চিকিৎসক তাকে একটি হাঁটার স্ট্রেচার কিনে দিয়েছে। কিন্তু সে হাঁটতে গেলেই ব্যথা পায় সে।

বিজ্ঞাপন

গায়ের নতুন লাল জামা, মাথার সাদা ব্যান্ড আর সামনে সাজানো খেলনাগুলো একজন চিকিৎসক তাকে ঈদ উপলক্ষে কিনে দিয়েছেন।

এগুলো পেয়ে  দারুণ খুশি আয়শা। কিন্তু তবুও কিছুটা মন খারাপ তার। অস্পষ্ট বুলিতে বার বার শুধু জানতে চাচ্ছে তার হাতে মেহেদি কেন নাই? কখন দেওয়া হবে। একজনের হাতে মেহেদি দেখার পর থেকে বার বার মেহেদির কথা বলছে আয়শা।

সেবিকা জানান, ফুটফুটে আয়শা হাঁটতে ও কথা বলতে না পারার কারণেই সম্ভবত স্বজনরা তাকে ফেলে রেখে গেছে। স্বজনরা তাকে অবহেলায় ফেলে গেলেও এখন আয়শার অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী। এই ওয়ার্ডের চিকিৎসক ও সেবিকারাই শুধু নয়, এখানে ভর্তি থাকা অন্য শিশু রোগীর স্বজনরাও যেন তার আপনজন। সবাই তাকে  আদর করেন, খোঁজ রাখেন।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ বক্সের ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বলেন, গত বছর কে বা কারা শিশুটিকে জরুরি বিভাগের টিকিট কাউন্টারে ফেলে রেখে যায়। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। সেই থেকেই আয়শার ঘরবাড়ি এই  শিশু ওয়ার্ড। আয়শার বিষয়ে বিভিন্ন জায়গায় মাইকিং করা হলেও তার কোন স্বজন খুঁজে পাওয়া যায়নি বলেও জানান বাচ্চু মিয়া।

সারাবাংলা/এসআর/আরএফ/জেডএফ

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন