বিজ্ঞাপন

নিরাপদ সড়ক দিবস: সড়কে দুর্ঘটনা কাঙ্ক্ষিত হারে কমিয়ে আনার প্রত্যয়

October 22, 2019 | 2:22 am

সারাবাংলা ডেস্ক

সড়ক-মহাসড়কে দুর্ঘটনার মাত্রা কাঙ্ক্ষিত হারে কমিয়ে আনার প্রত্যয় নিয়ে আজ মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) সারাদেশে পালিত হবে ‘জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস’।

বিজ্ঞাপন

‘জীবনের আগে জীবিকা নয়, সড়ক দুর্ঘটনা আর নয়’ প্রতিপাদ্য নিয়ে তৃতীয়বারের মতো সারাদেশে পালিত হতে যাচ্ছে দিবসটি।
জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষে স্থানীয় ও জাতীয়ভাবে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ক্রোড়পত্র প্রকাশ, আলোচনা সভা, র‌্যালি ও সড়ক সচেতনতা কার্যক্রম।

দিবসটি উপলক্ষে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭টায় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজা থেকে একটি র‌্যালি বের হবে। সকাল ১০টায় ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনের আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।

এছাড়া বিকেল ৪টায় রাজধানীর বিভিন্ন বাস টার্মিনালসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সড়ক নিরাপত্তা সংক্রান্ত ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হবে। এর পাশাপাশি পরিবহন মালিক, চালক, যাত্রী ও পথচারীদের সচেতন করার লক্ষ্যে লিফলেট, পোস্টার ও স্টিকার বিতরণ করা হবে ।

বিজ্ঞাপন

সকল জেলা ও উপজেলায় এ দিবসে শোভাযাত্রা,আলোচনা সভা ও সড়ক নিরাপত্তা সংক্রান্ত ভিডিও চিত্র প্রদর্শনের কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।

এছাড়া গণসচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে বিটিভিসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ে আলোচনা ও বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

পৃথক পৃথক বাণীতে জাতীয় পর্যায়ে দিবসটি পালনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিজ্ঞাপন

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী সরকার একবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশকে সড়ক দুর্ঘটনা ৫০ শতাংশ কমিয়ে আনার জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ উল্লেখ করে বাণীতে রাষ্ট্রপতি আশাবাদ জানান, এ আয়োজন নিরাপদ সড়ক ব্যবহারে জনগণের মধ্যে ব্যাপক সচেতনতা তৈরি করতে সহায়ক হবে।

আবদুল হামিদ বলেন, টেকসই অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে উন্নত পরিবহন সেবার বিকল্প নেই। একটি সমন্বিত যোগাযোগব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে দেশব্যাপী ব্যাপক অবকাঠামোগত উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এরই মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-ময়মনসিংহ হাইওয়েকে ফোর লেনে উন্নীত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, বাস্তবায়িত হচ্ছে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, মেট্রোরেল, বাস র‍্যাপিড ট্রানজিটের মতো মেগা প্রকল্প। নিজস্ব অর্থায়নে স্বপ্নের পদ্মাসেতু আজ দৃশ্যমান। এছাড়াও অন্যান্য মহাসড়ক চার বা আরও বেশি লেনে উন্নীত করা, ফ্লাইওভার ও ওভারপাস নির্মাণ, ট্রাফিক সাইন ও রোড মার্কিং স্থাপন, মহাসড়কের পাশে বিশ্রামাগার নির্মাণ, চালকদের প্রশিক্ষণসহ নানামুখী উদ্যোগ ও কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, দেশের সড়ক অবকাঠামোর উন্নয়নের পাশাপাশি নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে পরিবহন মালিক, শ্রমিক, যাত্রী, পথচারী নির্বিশেষে সকলের এ সংক্রান্ত আইন ও বিধিবিধান জানা এবং তা মেনে চলা আবশ্যক। এর মাধ্যমে অনাকাঙ্ক্ষিত সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব হবে। তিনি সড়ককে দুর্ঘটনামুক্ত করতে সংশ্লিষ্ট সবার সমন্বিত প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলে প্রত্যাশা জানান।

বিজ্ঞাপন

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে জনসচেতনতা তৈরির পাশাপাশি ট্রাফিক আইন মেনে চলার সংস্কৃতি গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমি আশা করি, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা দেশের সড়কগুলোকে নিরাপদ হিসেবে গড়ে তুলে সড়ক দুর্ঘটনা কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে নামিয়ে আনতে সক্ষম হব।

শেখ হাসিনা বলেন, উন্নত যোগাযোগ অবকাঠামো ও পর্যাপ্ত পরিবহন সেবা অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের পূর্বশর্ত। এ উপলব্ধি থেকে স্বাধীনতার পর সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের বিধ্বস্ত সড়ক ও ধ্বংসপ্রাপ্ত পরিবহনব্যবস্থাকে স্বল্প সময়ের মধ্যে সংস্কার ও পুনঃনির্মাণ করে সুষ্ঠু যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেন।

সড়ক নিরাপদ করতে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে গত ১১ বছরে দেশের উন্নত সড়ক যোগাযোগ অবকাঠামো নির্মাণে ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে। দেশের সব জাতীয় মহাসড়ক পর্যায়ক্রমে চার বা আরও বেশি লেনে উন্নীত করা হয়েছে। মেট্রোরেল, বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি), এলিভেটেড এক্সপ্রেওয়ে, ফ্লাইওভার, ওভারপাস-আন্ডারপাস নির্মাণসহ নতুন নতুন সড়ক, সেতু, কালভার্ট নির্মাণ, পুনঃনির্মাণ করা হচ্ছে।

শেখ হাসিনা বলেন, সরকার সড়ক পরিবহনব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়নের পাশাপাশি নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থা জোরদার করার বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে।

তিনি বলেন, সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ন্যাশনাল রোড সেফটি স্ট্র্যাটেজিক অ্যাকশন প্ল্যান (২০১৭-২০) প্রণয়ন করা হয়েছে এবং সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ জাতীয় সংসদে পাস করা হয়েছে। এ আইনটি প্রয়োগের মাধ্যমে দুর্ঘটনা ন্যূনতম পর্যায়ে নামিয়ে আনার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সড়ক পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা আনতে এবং দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে সুপারিশ প্রণয়নের লক্ষ্যে গঠিত কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়নে আমরা স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। আধুনিক, প্রযুক্তিনির্ভর ও টেকসই নিরাপদ মহাসড়ক নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা করাই আমাদের সরকারের লক্ষ্য।

সড়ক দুর্ঘটনা মানুষের জীবন কেড়ে নিতে পারে, আবার কাউকে পঙ্গু করে দিতে পারে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, একটি দুর্ঘটনা কোনো ব্যক্তি বা তার পরিবারের জন্যও সারাজীবন দুঃসহ কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

অস্বাভাবিক গতিতে গাড়ি চালানোকে সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিয়ন্ত্রিত গতিতে এবং সাবধানে গাড়ি চালানোর বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সচেতন হতে হবে। মনে রাখতে হবে- জীবনের প্রয়োজনে জীবিকা, জীবিকার প্রয়োজনে জীবন নয়। বাসস।

সারাবাংলা/টিআর

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন