বিজ্ঞাপন

কর্ণফুলীর কালুরঘাটে হবে দুই সেতু: ওবায়দুল কাদের

October 28, 2019 | 10:10 am

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: কর্ণফুলী নদীর কালুরঘাট অংশে বিদ্যমাণ জরাজীর্ণ রেলসেতুর জায়গায় দুটি সেতু নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এর মধ্যে একটি রেলসেতু এবং আরেকটি সড়ক সেতু।

বিজ্ঞাপন

রোববার (২৭ অক্টোবর) সকালে চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে সড়ক ভবনে সাতটি প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি একথা জানান। পরে আওয়ামী লীগের এক সাংগঠনিক সভায়ও কালুরঘাটে দুটি সেতু নির্মাণের বিষয়ে কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। এ বিষয়ে কোনো বিভ্রান্তি যেন সৃষ্টি না হয়, এমন প্রত্যাশাও করেছেন মন্ত্রী।

সওজের অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কালুরঘাটে দুটি সেতু হবে। রেলসেতু করবে রেলপথ মন্ত্রণালয়। সড়ক সেতু করবে আমাদের মন্ত্রণালয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে এই ঘোষণা সব বিভ্রান্তির অবসান ঘটাবে। কালুরঘাট সেতুর জন্য জনগণ ও জনপ্রতিনিধিদের দাবি দীর্ঘদিনের। কাজেই আমাদের অংশটার কাজ যাতে দ্রুত শুরু করা যায় সেই নির্দেশ দিয়েছি।’

ব্রিটিশ আমলে ১৯৩০ সালে নির্মিত হয় ৭০০ গজ দীর্ঘ কালুরঘাট রেলসেতু। ১৯৫৮ সালে সেতুটি সবধরনের যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয় তৎকালীন পাকিস্তান সরকার। ৯০ বছর বয়সী সেতুটি এখন অনেকটাই ভাঙাচোরা আর জোড়াতালি দেওয়া। প্রতিদিন এই জীর্ণ সেতুর ওপর দিয়ে চলছে ট্রেন ও যানবাহন। চট্টগ্রাম নগরীর থেকে বোয়ালখালী উপজেলা এবং পটিয়া উপজেলার তিন ইউনিয়নের মানুষের চলাচলের জন্য এটিই একমাত্র সেতু। আর দক্ষিণ চট্টগ্রামমুখী ট্রেন চলাচলের জন্যও এই সেতুই একমাত্র ভরসা।

বিজ্ঞাপন

বোয়ালখালী-কালুরঘাট সেতু বাস্তবায়ন পরিষদসহ স্থানীয় জনসাধারণ সেতুর দাবিতে প্রায় দেড় দশক ধরে আন্দোলন করে আসছে। প্রথমে সড়কসহ রেলসেতু নির্মাণের জন্য সমীক্ষা হলেও সম্প্রতি দ্বিমুখী রেলসেতু করার উদ্যোগ নিয়ে এগোচ্ছে রেল মন্ত্রণালয়। বারবার আশ্বাসের পরও সেতু বাস্তবায়ন করাতে না পেরে সম্প্রতি চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী, চান্দগাঁও-মোহরা) এলাকার সাংসদ মঈন উদ্দীন খান বাদল ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়ে অন্যথায় সংসদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন। এছাড়া বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনও সেতুর দাবিতে ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করে আসছে।

এ অবস্থায় সেতুমন্ত্রীর ঘোষণায় আশ্বস্ত হওয়ার কথা জানিয়েছেন বোয়ালখালী-কালুরঘাট সেতু বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক মো. আব্দুল মোমিন। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘সেতু নির্মাণের বিষয়ে আমরা বারবার আশ্বাস শুনে আসছি। এলাকার সাংসদ, কয়েকজন মন্ত্রীও বারবার আশ্বাস দিয়েছেন। এবার সিনিয়র মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আশ্বাস দিলেন। তিনি যেহেতু সুনির্দিষ্টভাবে নির্দেশনার কথা বলেছেন, আমরা আস্থা রাখতে চাই। দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষ চায়, সেতুর কাজটা যাতে দ্রুত শুরু হয়। মানুষের দুর্ভোগের যেন দ্রুত অবসান হয়।’

এদিকে সওজের অনুষ্ঠানে মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের চট্টগ্রামে মেট্রোরেল বাস্তবায়ন নিয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামে মেট্রোরেলের ফিজিব্যালিটি স্টাডিজের জন্য ইআরডিকে চিঠি দিয়েছি। শিগগির এ ব্যাপারে প্রক্রিয়া শুরু হবে। চট্টগ্রামও মেট্রোরেলের অন্তর্ভুক্ত হবে। এই শহরের জনসংখ্যা বাড়ছে, কানেকটিভিটির খুব দরকার। চট্টগ্রামের অগ্রযাত্রায় নতুন সম্ভাবনা মেট্রোরেল।’

বিজ্ঞাপন

কর্ণফুলীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেলের কাজ এরই মধ্যে প্রায় ৪৮ শতাংশ শেষ হয়েছে বলে তিনি জানান।

মন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়ক চার লেন হবে। মিরেরসরাই থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১৭০ কিলোমিটার মেরিন ড্রাইভ নির্মাণে সম্ভাব্যতার কাজ চলছে।’

চট্টগ্রাম-হাটহাজারী সড়কের হাটহাজারী থেকে রাউজান পর্যন্ত অংশ চার লেনে উন্নীতকরণ, শাহ আমানত সেতুর ইলেকট্রনিক টোল কালেকশন সিস্টেম, চট্টগ্রাম কাপ্তাই আঞ্চলিক সড়কে পিসি গার্ডার সেতুসহ মোট ৫২৭ কোটি টাকা ব্যয়ে সাতটি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন সেতুমন্ত্রী।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন