বিজ্ঞাপন

বইয়ের ভালোবাসায় মিশলো বসন্ত

February 14, 2020 | 9:11 pm

পার্থ সনজয়

একটা রক্ত চন্দন টিপ পরাতে হবে। বলতে হবে, তুমি সুন্দর। আমি ভালোবাসি। তারপর শুধু মলয় বাতাসে ভেসে যাওয়া। কবিতা করবে বীজন, প্রেম করবে স্বপ্ন সৃজন। বসন্তের প্রথম দিনের বইমেলা এর সব কিছুর মিশেল।

বিজ্ঞাপন

পলাশের নেশা মেখে এদিন মেলায় এসেছিল অষ্টাদশী তরুণী। এক হাত ছিলো প্রিয়তমর হাতে। হেলাল হাফিজের কবিতার বই ‘যে জলে আগুন জ্বলে’ সেই অষ্টাদশীর আরেক হাতে। কথা বলতে চাইলে, হাসির আড়ালে মুখ লুকিয়ে পালালো। জানা হয়নি, মলয় বাতাসে তারা কতটুকু স্বপ্ন বুনেছে।

তবে রুমন-স্বর্ণা দম্পতি কথা বললো আগ্রহ নিয়েই। তাদের দুজনের পরনেই হলুদ। রাজ্যের ট্রাফিক পেরিয়ে ভিড় ঠেলে মেলায় ঢুকতে দেরি হয়ে গেলেও জয়ী হাসি স্বর্ণার চোখে। দুজনের জন্যই আজ বিশেষ। ছয়বছর আগে এই বইমেলাতেই রুমন কবিতার বই হাতে তুলে দিয়ে বলেছিল, ভালোবাসি। আজ কি আবারও কবিতার বই পাওয়া হবে? হেসে স্বর্ণা বললেন, আজ রোমান্টিক উপন্যাস কিনবো। রুমনকে উপহার দেব।

বিজ্ঞাপন

ওদের শুভকামনা জানিয়ে অনন্যা প্রকাশনীর প্যাভিলিয়নে আসতেই পাওয়া হলো কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলনকে। অটোগ্রাফ দিচ্ছিলেন ১৯৯৩ সালে বইমেলায় বেস্টসেলার তার ‘ভালোবাসার সুখ-দুঃখ’ বইয়ে। এখনো এই বই বিক্রি হয়? জানতে চাইলে মিলন বললেন, এ এক রহস্য। বসন্ত আর ভালোবাসার দিনগুলোতে এই বই এখনো খোঁজে পাঠক।

খোঁপায় হলুদ আর লাল শাড়িতে এদিন মেলায় এলেন কণ্ঠশিল্পী পুতুল। বললেন, দুটো দিনকেই গায়ে জড়িয়েছি। তার পুতুলকাব্যিক বইটিও ভালো বিক্রি হচ্ছে জানালেন।

বিজ্ঞাপন

এমনিতে মেলা দুভাগে বিভক্ত। হলুদ আর লাল। তবে হলুদের প্রাধাণ্যই ছিল বেশি। বাংলা একাডেমি আর সোহরাওয়ার্দী-দুই প্রান্তই লাল-হলুদে মাখামাখি।

বিকেল থেকেই দুই প্রান্তের প্রবেশপথে দীর্ঘ লাইন। টিএসসি, বাংলা একাডেমি, রমনা মন্দির-প্রবেশপথের ভিড় ঠেলে মেলায় প্রবেশে ঝক্কি ছিল বেশ। ভিড়, ঝক্কি সব কিছুকে উড়িয়ে দিয়ে সন্ধ্যার মেলা পাঠক ভিড়ে গমগম করেছে।  এদিন বইও এসেছে এবারের মেলার সর্বোচ্চ। ১৩তম দিনে বই এসেছে ৩৬৯টি। আর ১৩ দিনে মোট বই ১৯৯১টি। এর মধ্যে ভাষাচিত্র প্রকাশ করেছে আবু হাসান শাহরিয়ারের ‘শৈশবের সিঁড়িগুলো ১৯৬৯ থেকে ১৯৭১’। ভাষাপ্রকাশ এনেছে জীবনী গ্রন্থমালা ‘আহমদ ছফা’। গ্রন্থ কুটির প্রকাশ করেছে ঝর্ণা দাশ পুরকায়স্থ’র ‘অন্যরকম ক্যারল’।

বিজ্ঞাপন

মূলমঞ্চে আলোচনার বিষয় ছিল বাংলা একাডেমি প্রকাশিত আসাদ চৌধুরীর লেখা ‘সংগ্রামী নায়ক বঙ্গবন্ধু’। মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শোয়াইব জিবরান। সভাপতিত্বে ছিলেন খুরশীদা বেগম।

সকালটায় ছিল শিশুপ্রহর। মা-বাবার হাত ধরে গুটিগুটি পায়ে শিশুচত্বরে সকাল ১১টা থেকে ঘুরেছে শিশুরা। শনিবার সকালেও থাকছে শিশুপ্রহর।

সারাবাংলা/এমআই

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন