বিজ্ঞাপন

‘পদ্মাসেতু নিজেরাই করতে পারি, এই সিদ্ধান্ত সম্মান এনে দিয়েছে’

March 12, 2020 | 11:20 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: পদ্মাসেতুর মতো একটি মেগা প্রকল্প যে নিজেদের অর্থায়নে বাস্তবায়ন করা হবে, এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশকে সারাবিশ্বের সম্মান এনে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, পদ্মাসেতু ইস্যুতে আমরা শুধু বিশ্বব্যাংকের অভিযোগই খণ্ডন করিনি, আমরা নিজেদের অর্থায়নেই এই সেতু নির্মাণ করে যাচ্ছি। পদ্মাসেতু যে আমরা নিজেরা করতে পারি, এই একটি সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে, সারাবিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে সম্মান এনে দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১২ মার্চ) দুপুরে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঢাকা-খুলনা (এন-৮) মহাসড়কের যাত্রাবাড়ী-মাওয়া এবং পাঁচ্চর-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। একইসঙ্গে ওয়েস্টার্ন বাংলাদেশ ব্রিজ ইমপ্রুভমেন্ট প্রকল্পের আওতায় নির্মিত ২৫টি সেতু ও তৃতীয় কর্ণফুলী সেতু (শাহ আমানত সেতু) নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ছয়-লেন বিশিষ্ট অ্যাপ্রোচ সড়ক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

আরও পড়ুন- খুব তাড়াতাড়ি এক্সপ্রেসওয়ে হয়ে টুঙ্গিপাড়া যাব: প্রধানমন্ত্রী

বিজ্ঞাপন

সরকারে থেকে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করার সুযোগ দেওয়ার জন্য জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, যখন তিনি (বঙ্গবন্ধু) এ দেশ স্বাধীন করেন, এই বাংলাদেশকে নিয়ে তার অনেক স্বপ্ন ছিল। এ দেশের ৮২ ভাগ মানুষ দরিদ্র্যসীমার নিচে বাস করত। অনেক মানুষ একবেলা খাবার জোটাতে পারত না। ঘর ছিল না, শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত ছিল, রোগে চিকিৎসা পেত না। তিনি মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য নিজের জীবনকেই উৎসর্গ করেছিলেন। সবসময় চেয়েছেন, বাংলার দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাবেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে আমাদের ওপর সেই দায়িত্ব পড়েছে। যেকোনো দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য একান্তভাবে অপরিহার্য যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করা। যোগাযোগ ব্যবস্থা যদি ভালো হয়, একটি অঞ্চলের উন্নয়ন শুরু হয়ে যায়।

নদীমাতৃক বাংলাদেশে সড়ক নির্মাণ করা বা যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু করা অত্যন্ত কঠিন কাজ ছিল বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। সেই ব্যবস্থার উন্নয়ন করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, শুধু সড়কপথ না, নৌপথ, রেল ও আকাশপথ— সবদিকেই আমাদের নজর আছে। আমরা গোটা বাংলাদেশে যোগাযোগ ব্যবস্থার একটা নেটওয়ার্ক তৈরি করে দিচ্ছি, যা মানুষকে আরও উন্নয়নের সুযোগ দেবে।

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। আমরা ছিলাম সবচেয়ে অবহেলিত। একসময় স্টিমার বা লঞ্চে করে এই ভাঙ্গা পর্যন্ত যেতে হতো। আর স্টিমারে গোপালগঞ্জ যেতে সময় লাগত ২৪ ঘণ্টা। এমনকি ১৯৮১ সালে যখন দেশে ফিরে আসি, তখনো এই অবস্থা ছিল। আজ আর সেই দিন নেই। আমরা ১৯৯৬ সালে সরকারে আসার পর থেকে গোটা দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করতে ব্যাপক পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করেছি। আর দ্বিতীয়বার ২০০৯ সালে সরকার গঠন করে এ পর্যন্ত সরকারে থেকে আমরা আমাদের পরিকল্পনা মাফিক সমগ্র বাংলাদেশে এই যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করে দিয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্মা নদীর মতো একটি খরস্রোতা নদীতে এরকম একটি সেতু নির্মাণ ঝুঁকি ও চ্যালেঞ্জের বিষয় ছিল। কিন্তু আমরা সম্পূর্ণ নিজেদের অর্থায়নে এই সেতু নির্মাণ করছি। আমরা যে নিজস্ব অর্থায়নেও আমাদের অবকাঠামো উন্নয়ন করতে পারি, এই আত্মবিশ্বাসটা আমাদের আছে এবং তার ফলে আমরা এটা নির্মাণ করছি।

এই পদ্মাসেতু নির্মাণ করতে গিয়ে বিশ্বব্যাংক দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিল। পরে কানাডার একটি আদালতে প্রমাণিত হয়, এই প্রকল্পে কোনো দুর্নীতি হয়নি। বিশ্বব্যাংকের সব অভিযোগ ছিল বানোয়াট। সেটি দেশের জন্য সম্মানের বিষয় ছিল বলেও উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। ওই সময় জনগণ পাশে থাকায় তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।

উদ্বোধন ঘোষণা শেষে প্রধানমন্ত্রী বরিশাল, কুষ্টিয়া ও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে সংযুক্ত হয়ে মতবিনিময় করেন। প্রকল্পগুলোর উদ্বোধন শেষে দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলাম প্রকল্প বিষয়ে তথ্য চিত্র তুলে ধরে একটি ভিডিও চিত্র উপস্থাপন করেন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজনসহ অনেকে।

সারাবাংলা/এনআর/টিআর

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন