March 28, 2020 | 4:23 pm
ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
শেরপুর: করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে জারি করা সরকারি বিধিনিষেধ মানছেন না শেরপুরের প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষ। জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশ দিনে রাতে আপ্রাণ চেষ্টা করেও নিষেধ মানাতে পারছেন না। সকালে বাজারে মানুষ কিছুটা কম হলেও বিকাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই গ্রামের হাট-বাজারে লোক সমাগম হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশ প্রশাসন ওইসব বাজারে সচেতনেতা অভিযান পরিচালনা করলেও প্রশাসনের লোক ফিরে যাওয়া মাত্রই ফিরে আসে পূর্বের অবস্থা। এতে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
সরকারিভাবে ছুটি ঘোষণা হওয়ার পর ২৬ তারিখ থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস ও ওষুধের দোকান খোলা রাখার সিদ্ধান্ত হয়। ফলে শেরপুরে অঘোষিত লকডাউনে জেলা ও উপজেলা শহর এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো জনশূন্য হলেও প্রান্তিক জনপথ এবং গ্রামের হাট-বাজারে কোনভাবেই জনসমাগম কমানো যাচ্ছেনা।
স্থানীয় প্রশাসনের দাবি, করোনা ইস্যুতে শেরপুরে সেনা ক্যাম্প করার। এছাড়াও ঢাকাসহ সারাদেশ থেকে শেরপুরে আসা জনসাধারণকে হোম কোয়ারেনটাইন নিশ্চিত করার। গত ২৬ মার্চ বৃহস্পতিবার থেকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও গৃহে অবস্থান নিশ্চিত করতে শেরপুরে সেনা সদস্য মোতায়েন করা হলেও তারা ঘাটাইল সেনানিবাস থেকে প্রতিদিন একটি গাড়ি নিয়ে এসে জেলার পাঁচটি থানায় টহল কার্যক্রম শুরু করে।
এদিকে, এখনও জেলার শ্রীবরদী, ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী উপজেলার ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীদের মধ্যে তেমন প্রচারণা লক্ষ্য করা যায়নি। তারা জানেন না করোনা সম্পর্কে কিভাবে সচেতন হবে।
জেলার সদর উপজেলার পাকুরিয়া, কানাশাখোলা, রৌহা, গাজীরখামার, কুসুমহাটিসহ বেশ কিছু গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, করোনাভাইরাস সম্পর্কে তাদের কারও মাথাব্যথা নেই। অনেকেই বলেন, ‘কাজ করে খাই, করোনা-টরোনা বুঝি না। এসব ভাইরাস গ্রামে আসবে না, শহরেই থাকবে।’
ঝিনাইগাতী উপজেলার বাসিন্দা আতিকুর রহমান বলেন, ‘যে হারে লোক বিকালে বাজারে ও বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে আড্ডা দিচ্ছে তাতে যেকোনো সময় আমরা বিপদে পড়তে পারি। এখনই আমাদের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এজন্য সেনাবাহিনীর স্থায়ী ক্যাম্প করার অনুরোধ করছি।’
পাকুরিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হায়দার আলী এ বলেন, ‘কোনভাবেই লোক সমাগম ঠেকাতে পারছিনা। গত কয়েকদিন ইউএনও স্যার, সদর থানার ওসিসহ আমি নিজে জনগণকে বুঝাতে চেষ্টা করেছি। কিন্তু বিকেল হলে শত শত লোক রাস্তায় বের হয়ে আসে।’
শেরপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফিরোজ আল মামুন বলেন, ‘সেনাবাহিনী, পুলিশ ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট টহল অব্যাহত রয়েছে যেখানে লোক সমাগম থাকবে সেখানেই ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশেনা দেওয়া আছে আমাদের প্রতি। আমরা রাত-দিন পরিশ্রম করছি। জনগণকে বুঝানো চেষ্টা করছি কিন্তু জনগণ সচেতন হচ্ছে না।’
তিনি জনসাধারণের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা দয়া করে ঘরে থাকুন, বাইরে বের হবেন না। আপনারা সুস্থ থাকুন, আমাদেরও সুস্থ রাখুন, দেশের মানুষকে সুস্থ রাখুন।’
সারাবাংলা/এমও