‘তথ্য গোপন ও ভুল পদক্ষেপে দেশ কঠিন পরিস্থিতিতে পড়েছে’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: করোনা সংকটের মধ্যে প্রকৃত তথ্য গোপন ও ভুল সিদ্ধান্তের কারণে দেশ কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

শনিবার (১৬ মে) বিকেলে ‘বিএনপি কমিউনিকেশন সেল’ থেকে ফেসবুক লাইভে ‘প্রাসঙ্গিক সংলাপ’ এর প্রথম পর্বে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন ‘বিএনপি কমিউনিকেশন সেল’র প্রধান সম্পাদক জহির উদ্দিন স্বপন।

ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘সরকার যে তথ্য দিচ্ছে, তা রোগ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য নয়, রোগীকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য। তারা একদিকে তথ্য গোপন করছে, অন্যদিকে করোনা মোকাবিলায় ভুল পদক্ষেপ নিচ্ছে। ফলে দেশ কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে।’

তিনি বলেন, ‘যাই ঘটুক না কেন, তথ্যটা সঠিক প্রকাশ করতে হবে। তথ্য সঠিকভাবে প্রকাশ করা না গেলে আমাদের স্বাস্থ্যকর্মী, চিকিৎসক ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান সঠিকভাবে প্রস্তুতি নিতে পারে না। প্রথম থেকে সঠিকভাবে তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।’

ড. মোশাররফ বলেন, ‘করোনাভাইরাস সারাবিশ্বকে কাবু করে ফেলেছে। ডিসেম্বরের শেষে চীনে এ ভাইরাসের কথা প্রথম জানা যায়। আর বাংলাদেশে মার্চে এই ভাইরাসের সংক্রমণের ঘোষণা দেওয়া হয়। মাঝে এত সময় পাওয়ার পরও প্রস্তুতিতে বড় ঘাটতি ছিল। এ সময় সারাবিশ্ব থেকে যে প্রবাসীরা এসেছেন, বিমানবন্দরে তাদের কার্যকর কোনো পরীক্ষা ছাড়াই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ওই সময়ে সতর্কতা অবলম্বন করা হলে এ অবস্থা হতো না।’

সরকারের ব্যবস্থাপনায় গাফিলতি ছিল অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘ছুটি ঘোষণার পরও মানুষ নিজ নিজ এলাকায় ফিরেছে। এতে ভাইরাস সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এই সময়টায় আরও সতর্ক হওয়া দরকার ছিল।’

গার্মেন্টস খুলে দেওয়ার সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন দেশে লকডাউন করা হয়েছে। কিন্তু সাধারণ ছুটি আর লকডাউন এক না। লকডাউন ঘোষণা না করে সাধারণ ছুটি দেওয়াতেই এই অবস্থা হয়েছে। এখন আবার শর্ত সাপেক্ষে দোকান-পাট, অফিস খুলে দেওয়ায় কিছুই মানা হচ্ছে না।’

ড. মোশাররফ বলেন, ‘ভাইরাস শনাক্ত করণের পরীক্ষায় আমরা সারা পৃথিবী থেকে পিছিয়ে আছি। প্রথম দিকে খুবই কম পরীক্ষা হয়েছে। মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন আছে। উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়ার খবর আসছে অনেক। উপসর্গ নিয়ে যারা মারা গেছেন, তারা কয়জন আক্রান্ত ছিলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। পরীক্ষায় আমরা অবহেলা করছি। পর্যাপ্ত কিট আমদানি হয়নি।’

‘গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে উদ্ভাবিত কোভিড-১৯ শনাক্তকরণ কিট নিয়েও সরকার গড়িমসি করছে’— বলেন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

তিনি বলেন, ‘মাস্ক-পিপিই নিম্নমানের দেওয়া হয়েছে। বিএনপি থেকে সরকারকে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় বেশ কিছু প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, সেগুলো আমলে নেওয়া হয়নি।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘ভর্তি রোগী পালিয়ে যাচ্ছে। কারণ, হাসপাতালগুলো প্রস্তুত করা হয়নি। প্রয়োজনের তুলনায় নগণ্য ব্যবস্থাপনা।’

যারা ঈদ শপিং করছেন তাদের উদ্দেশে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘বেঁচে থাকলে জীবিকা হবে। তাই জীবন রক্ষা করতে হবে। একটি ঈদে কিছু না কিনলে ক্ষতি হবে না। জীবনের মূল্য অনেক বেশি। জীবন রক্ষার জন্য নিজেকে সাবধান হতে হবে।’

সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম