বিজ্ঞাপন

পাটমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী ৬০ দিনের মজুরি পাচ্ছেন পাটকল শ্রমিকরা

July 21, 2020 | 10:20 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীকের ঘোষণা অনুযায়ী বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশন (বিজেএমসি) পরিচালিত বন্ধ ঘোষিত পাটকলগুলোর শ্রমিকরা সব মজুরি বুঝে পেতে যাচ্ছেন। তারা আগের ঘোষণা অনুযায়ী জুন মাসের এক সপ্তাহের বকেয়া মজুরির পাশাপাশি ৬০ দিনের নোটিশ মেয়াদের মজুরি বুঝে পাবেন। একইসঙ্গে আগে পরিশোধ না করা নববর্ষ ভাতাও পরিশোধ করা হবে।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন- পাটকল শ্রমিকদের জুন মাসের মজুরি চলতি সপ্তাহেই

মঙ্গলবার (২১ জুলাই) বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, এরই মধ্যে এসব মজুরি ও ভাতা পরিশোধ করতে এই মন্ত্রণালয়কে ৮০ কোটি ৭৯ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। বরাদ্দ করা এসব টাকা শ্রমিকদের অ্যাকাউন্টে চেকের মাধ্যমে পরিশোধ করা হবে। ২০২০-২১ অর্থবছরের অর্থ বিভাগের বাজেটে  ‘পরিচালন ঋণ’ খাত থেকে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অধীন বিজেএমসি’র অনুকূলে ‘পরিচালন ঋণ’ হিসেবে এই টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন- আর্থিক সুরক্ষায় অর্ধেক পাওনা সঞ্চয়পত্রে পাবেন পাটকল শ্রমিকরা

বিজ্ঞাপন

অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার ক্ষেত্রে অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই ৮০ কোটি ৭৯ লাখ টাকা থেকে ১০ কোটি ৭৯ লাখ টাকা খরচ করা যাবে কেবল শ্রমিকদের জুন মাসের এক সপ্তাহের বকেয়া মজুরি হিসেবে। বাকি টাকা পরিশোধ করা যাবে কেবল ৬০ দিনের নোটিশ মেয়াদের মজুরি পরিশোধে। তবে ৬০ দিনের নোটিশ মেয়াদের মজুরি হিসেবে বরাদ্দ টাকা শ্রমিকদের প্রাপ্যতার ভিত্তিতে বরাদ্দ করতে হবে। কোনো টাকা উদ্বৃত্ত থাকলে বন্ধঘোষিত মিলগুলোর শ্রমিকদের গ্র্যাচুইটি/পিএফের সঙ্গে সমন্বয়যোগ্য হবে।

আরও পড়ুন- ‘শ্রমিকদের ঠকানো হবে না, ন্যায্য পাওনা পরিশোধ করা হবে’

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পাটকল শ্রমিকরা নোটিশ মেয়াদ, অর্থাৎ জুলাই-আগস্টের ৬০ দিনের মজুরিও যথা নিয়মে পরিশোধ করা হবে। অন্যদিকে পিএফ, গ্র্যাচুইটি ও গোল্ডেন হ্যান্ডশেক সুবিধাসহ অবশিষ্ট সব পাওনার অর্ধেক শ্রমিকদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এবং বাকি অর্ধেক নিজ নিজ নামে সঞ্চয়পত্র আকারে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে পরিশোধ করা হবে। সব ক্ষেত্রেই মজুরি কমিশন-২০১৫-এর ভিত্তিতে পাওনা হিসাব করা হবে। এ ক্ষেত্রে ২০১৪ সাল থেকে অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিকদের (৮ হাজার ৯৫৪ জন) প্রাপ্য সব বকেয়া এবং বর্তমানে কর্মরত শ্রমিকদের (২৪ হাজার ৮৮৬ জন) প্রাপ্য বকেয়া মজুরি, শ্রমিকদের পিএফ, গ্র্যাচুইটি এবং সেই সঙ্গে গ্র্যাচুইটির সর্বোচ্চ ২৭ শতাংশ হারে অবসায়ন সুবিধা শতভাগ পরিশোধ করা হবে। এজন্য সরকারি বাজেট থেকে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হবে।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন- রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোর আধুনিকায়নে উৎপাদন বন্ধের সিদ্ধান্ত

সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অবসায়নের পর মিলগুলো সরকারের নিয়ন্ত্রণে পিপিপি (পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ, যৌথ উদ্যোগ, জি-টু-জি (গভর্নমেন্ট টু গভর্নমেন্ট) বা লিজ মডেলে পরিচালনার উদ্যোগ নেওয়া হবে। নতুন মডেলে মিল চালুর ক্ষেত্রে এখনকার শ্রমিকেরা অগ্রাধিকারভিত্তিতে কাজের সুযোগ পাবে। একইসঙ্গে এসব মিলে নতুন কর্মসংস্থানও তৈরি হবে। সব শ্রমিককে অবশ্যই পুনর্বাসন করা হবে।

এর আগে, গত ২৮ জুন সারাবাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক জানান, বাজেট পাসের পর অর্থছাড় হলেই পাটকল শ্রমিকদের সব ধরনের মজুরি ও বকেয়া পরিশোধ করা হবে। তিনি বলেন, বাজেটের টাকা ছাড় হলে আমরা একবারে ২৬ হাজার শ্রমিকদের পাওয়া দিয়ে দেবো, যেন এই সময়টায় তারা একটা কিছু করে খেতে পারে।

আরও পড়ুন- বাজেটের টাকা ছাড় হলেই পাটকল শ্রমিকরা বকেয়া বুঝে পাবে: পাটমন্ত্রী

বিজ্ঞাপন

পরে গত বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভা থেকে জানানো হয়, রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোর আধুনিকায়ন এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একে আরও সক্ষম করে গড়ে তুলতেই উৎপাদন বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব সাংবাদিকদের বলেন, পটকলগুলো বন্ধ হলেও শ্রমিকদের সব পাওনা এককালীন পরিশোধ করা হবে। বন্ধ মিলগুলো চালু হলে তারাই অগ্রাধিকার পাবেন।

পরদিন শুক্রবার (৩ জুলাই) এক সংবাদ সম্মেলনে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক বলেন, পাটকল শ্রমিকদের প্রত্যেককে তাদের ন্যায্য পাওনা পরিশোধ করা হবে। প্রধানমন্ত্রী নিজেই শ্রমিকদের দায়িত্ব নিয়েছেন বলে এ নিয়ে আর ভাবনার কিছু নেই।

সারাবাংলা/টিআর

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন