বিজ্ঞাপন

ফখরুলের কাছে ২ প্রশ্নের জবাব দাবি ওবায়দুল কাদেরের

August 24, 2020 | 2:35 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশ্যে দুইটি প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে তার জবাব চাইলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (২৪ আগস্ট) সকালে বনানী করবস্থানে শহীদ আইভি রহমানের ১৬তম মৃত্যুবাষির্কী উপলক্ষে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের পরে এই প্রশ্ন উত্থাপন করেন তিনি।

প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের সহধর্মিনী ও আওয়ামী লীগের সাবেক মহিলা বিষয়ক সম্পাদক নারী নেত্রী শহীদ আইভি রহমানের আজ ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বিএনপি-জামায়াত চার দলীয় জোট সরকারের আমলে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ আয়োজিত সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে বর্বরতম ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় আইভি রহমান গুরুতর আহত হন। সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চারদিন পর ২৪ আগস্ট শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

সেই গ্রেনেড হামলায় আওয়ামী লীগের ২৪ নেতাকর্মীর মৃত্যু হয়। আহত হন কয়েক ৫ শতাধিক নেতাকর্মী। হামলার সময় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে মানবঢাল তৈরি করে রক্ষা করেন নেতারা। তারপরও গ্রেনেডের বিকট শব্দে একটি কানের শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।

বিজ্ঞাপন

ওবায়দুল কাদের বলেন, ৭৫’র ১৫ আগস্ট এবং ২০০৪ সালের ২১ শে আগস্ট; এ দুটি হত্যাকাণ্ডই একই সূত্রে গাঁথা। একই ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতা। ১৫ আগস্টে প্রাইম টার্গেট ছিলেন বঙ্গবন্ধু, ২১ আগস্ট প্রাইম টার্গেট ছিলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘আজকে একটা বিষয় বলতে চাই, ৭৫ সালে জিয়াউর রহমান যদি বঙ্গবন্ধুর খুনিদের প্রশয় না দিত, আশ্রয় না দিত, বিদেশী দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত না করত এবং মোশতাকের ইনডেমনিটিকে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীতে সেটা অন্তর্ভুক্ত করে খুনিদের বিচারের পথ যদি তিনি রুদ্ধ করতেন, খন্দকার মোশতাকের যদি বেনিফিশিয়ারি হিসাবে প্রধান সেনাপতি না হতেন; তাহলে হয়ত ইতিহাসকে ভিন্নভাবে দেখা যেতে পারত!’

‘এখানে আজ খুন যে করে আর খুনের যে প্রশ্রয় দেয়; খুনিকে যারা পুরস্কৃত করে, খুনির বিচারের পথ যারা রুদ্ধ করে, তারাও একই অপরাধে অপরাধী। আর একথা সত্য আজ অনেকে রাজনৈতিক সম্পর্কের কথা বলেন, দলে দলে সম্পর্ক; এ ব্যাপারে শেখ হাসিনাই হচ্ছে সর্বশ্রেষ্ঠ উদাহরণ।’

বিজ্ঞাপন

কাদের বলেন, ‘কারণ তার গোটা পরিবারকে যারা হত্যা করেছিল কেউ মঞ্চে, কেউ নেপথ্যে; আজকে এই ঘটনা থেকে কি হলো বাংলাদেশের রাজনীতিতে; যে অলঙ্ঘনীয় দেয়াল পারস্পরিক সম্পর্কের সৃষ্টি করা হলো ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু কন্যাকে টার্গেট করে সেই অলঙ্ঘনীয় দেয়াল আরও উঁচু করা হলো। সম্পর্ক কারা নষ্ট করল? শেখ হাসিনা ওয়ার্কিং আন্ডারস্টাডিং গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। বেগম জিয়াকে ২০১৪ সালে তিনি আমন্ত্রণ করেছিলেন গণভবনে। সেদিন কি অশ্রাব্য ভাষায় শেখ হাসিনার সঙ্গে ব্যবহার করা হয়েছে, আপনাদের বোধহয় মনে আছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘শুধু এটাই নয়, সেই হত্যাকাণ্ড ধামাচাপা দিতে সেদিন জজ মিয়া নাটক সাজানো হয়েছে। আলামত নষ্ট করে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডকে আসতে দেয়নি, এফবিআইকে তদন্ত করতে দেয়নি এবং এই হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড ছিলেন সেদিন হাওয়া ভবন। হরকাতুল জিহাদের মুফতি হান্নান বলেছিল; বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে যা কিছু ঘটেছিল সেটার পরিচালনা করেছে হাওয়া ভবন থেকে তারেক রহমান।’

‘ইতিহাসের এ সত্যকে অস্বীকার করবেন কিভাবে? আজকে ফখরুল সাহেব শেখ হাসিনাকে টার্গেট করে বারবার কথা বলছেন, তাদের নেতাকে নাকি ছোট করা হয়েছে? মির্জা ফখরুল সাহেবকে জিজ্ঞাসা করতে চাই, আপনারা কি জিয়া হত্যার বিচার করেছেন? একাধিকবার ক্ষমতায় থেকেও? আমি আরও প্রশ্ন করতে চাই? বিচার তো করেননি; এই হত্যাকাণ্ডের বিচার একবারও আপনারা দাবি করেননি?’

‘আরেকটা প্রশ্ন তাকে করতে চাই, চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে নিহত জিয়াউর রহমান, ১৫ আগস্টের আগে-পরে এবং ওই সময়ে তাকে নিয়ে আমাদের অনেক প্রশ্ন ছিল? তারপরও কিন্তু আমাদের নেত্রী, আমাদের পার্টি; সেদিন জিয়াউর রহমান হত্যাকাণ্ডের আমরা নিন্দা করেছিলাম। আমরা খুনকে কোনদিনও জিয়াউর রহমানের এভাবে হত্যাকাণ্ড হোক, এটা আমরা চাইনি। কিন্তু মির্জা ফখরুলকে জিজ্ঞাসা করতে চাই, সেই চট্টগ্রামের সার্কিট হাউস রাঙ্গুনিয়ার পাহাড় হয়ে জিয়াউর রহমানের লাশ ঢাকায় এলো, জানাজা হলো, চন্দ্রিমা উদ্যানে সমাহিত করা হলো? আমি প্রশ্ন রাখতে চাই, একটা ছবি জিয়াউর রহমানের নিহত হওয়ার পর আপনি দেখাতে পারবেন? এই প্রশ্নটির আমি জবাব চাই’ উল্লেখ করেন ওবায়দুল কাদের।

বিজ্ঞাপন

শহীদ আইভী রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, এস এম কামাল হোসেন, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকিসহ আরও অনেকে। আওয়ামী লীগের শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সহযোগী ও অঙ্গসংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

সারাবাংলা/এনআর/একে

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন