বিজ্ঞাপন

মাঠে খেলছিল শিশুটি, ধরে পায়ুপথে লাঠি ঢুকিয়ে নির্যাতন

November 12, 2020 | 3:38 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে ১১ বছর বয়সী এক শিশুকে পেটানোর পর পায়ুপথে লাঠি ঢুকিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে এক আনসার সদস্যের বিরুদ্ধে। গুরুতর আহত অবস্থায় শিশুটিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আর অভিযুক্ত আনসার সদস্যকে পুলিশ তাদের হেফাজতে নিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (১২ নভেম্বর) সকালে নগরীর কোতোয়ালী থানার পাথরঘাটা জলিলগঞ্জ আবাসিক এলাকায় এই ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন।

নির্যাতনের শিকার শিশু আপন দাশ (১১) স্থানীয় সাবিত্রীসুধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র। তার বাবা মৃত রূপন দাশ। মা নগরীর একটি ক্লিনিকে আয়া হিসেবে চাকরি করেন। তারা দুই ভাই বলে পুলিশ জানিয়েছে। আর অভিযুক্ত আনসার সদস্য মো. রুবেল সরদারের (২৫) বাড়ি বরিশালে।

আপনের চাচা তপন দাশ সারাবাংলাকে জানান, সকাল সাড়ে ১১টার দিকে জলিলগঞ্জ এলাকার একটি মাঠে আপনসহ কয়েকজন শিশু খেলছিল। মাঠের নিরাপত্তায় নিয়োজিত আনসার সদস্যরা তাদের দেখে ধাওয়া দেয়। এ সময় অন্য শিশুরা পালিয়ে যেতে পারলেও আপন পড়ে যায়। তাকে ধরে ফেলেন আনসার সদস্য রুবেল। প্রথমে তাকে লাঠি দিয়ে পেটানো হয়। এরপর লাঠি ঢুকিয়ে দেওয়া হয় তার পায়ুপথে। শিশুটির কান্না ও চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন সেখানে জড়ো হয় এবং প্রতিবাদ জানাতে থাকে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।

বিজ্ঞাপন

কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন সারাবাংলাকে বলেন, ‘খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। সেখান থেকে আহত শিশুটিকে দ্রুত চমেক হাসপাতালে এনে ভর্তি করি। অভিযুক্ত রুবেল সরদারকেও আমরা হেফাজতে নিয়ে থানায় রেখেছি। শিশুটির অভিভাবকের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পাবার পর পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

নির্যাতনে অভিযুক্ত আনসার সদস্য

কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামরুজ্জামান সারাবাংলাকে বলেন, ‘পাথরঘাটার গঙ্গাবাড়ি মোড়ে জলিলগঞ্জ আবাসিক এলাকার ভেতরে একটি খালি মাঠ আছে। সেখানে সীমানা প্রাচীর টপকে ঢুকে স্থানীয় শিশু-কিশোররা খেলাধুলা করে। আবাসিক এলাকায় নিরাপত্তার দায়িত্বে আছেন কয়েকজন আনসার সদস্য। তাদের মধ্যে একজন সদস্য রুবেল সরদারই এই ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ পেয়ে আমরা তাকে থানায় নিয়ে গেছি।’

এদিকে হাসপাতালে পৌঁছে ছেলের ওপর এমন নৃশংসতা দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তার মা। বারবার শিশুটিকে বাঁচানোর আকুতি জানাচ্ছিলেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

শিশু আপন দাশকে চমেক হাসপাতালের নতুন ভবনে ৮৪ নম্বর ওয়ার্ডে প্রথমে ভর্তি করা হয়। দুপুর ২টার দিকে অস্ত্রোপচারের জন্য তাকে অপারেশন থিয়েটারে ঢোকানো হয়েছে।

চিকিৎসকের বরাত দিয়ে তপন দাশ সারাবাংলাকে বলেন, ‘লাঠি ঢোকার ফলে মলদ্বার ছিঁড়ে গেছে। প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছে এবং মলও বের হচ্ছে। ডাক্তার বলেছেন, অপারেশনের পর বিস্তারিত বলবেন।’

চমেক হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের আবাসিক চিকিৎসক আফরুজুল হক সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, শিশু আপন দাশের পায়ুপথে অস্ত্রোপচার চলছে। সে আশঙ্কামুক্ত নয়।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন