বিজ্ঞাপন

কোভিড থেকে প্রাপ্তি দেশপ্রেম-ঐক্য: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

December 30, 2020 | 10:45 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) অনেক কিছু কেড়ে নিলেও অনেক কিছুই দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, কোভিড আমাদের কাছ থেকে অনেক কিছু নিয়েছে, আবার অনেক কিছু দিয়েছেও। যেমন আমাদের মধ্যে ঐক্য সৃষ্টি করেছে। সব বড় ধরনের কাজ করতে আমরা শিখেছি। আমাদের মধ্যে সাহস সৃষ্টি করেছে। আমাদের মধ্যে কর্মস্পৃহা বৃদ্ধি করেছে। কাজেই এগুলোও আমরা পেয়েছি।

বুধবার (৩০ ডিসেম্বর) বিসিপিএস অডিটরিয়াম হলে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রখ্যাত ডাটা মিডিয়া ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের সম্মানসূচক স্বীকৃতি অর্জন উদযাপন উপলক্ষে অনুষ্ঠানটির আয়োজক ছিল স্বাস্থ্য অধিদফতর।

জাহিদ মালেক বলেন, ‘ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন আনতে গত ৫ নভেম্বর সরকার চুক্তি করছিল। আজ যুক্তরাজ্য সরকার সেই অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন রাষ্ট্রীয়ভাবে অনুমোদন দিয়েছে। এটি অবশ্যই আমাদের জন্য সুখবর। এরপর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন হওয়া মাত্রই সেটি ভারতের পাশাপাশি আমরাও পেয়ে যাবো। এরপর আগামী জুন মাসের মধ্যেই গ্যাভি ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক আরও পাঁচ থেকে ছয় কোটি ডোজ ভ্যাকসিন দেশে চলে আসবে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘ভ্যাকসিন ট্রায়ালে অংশ না নেওয়ায় ১৮ বছরের নিচে দেশের প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষকে ও গর্ভবতী প্রায় ৩৫ লাখ মায়েদেরকে ভ্যাকসিন দেওয়া না লাগলে ৫-৬ কোটি ভ্যাকসিন প্রয়োগেই দেশ অনেকটা নিরাপদ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘করোনা সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্য বিভাগ সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে। অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছে। করোনার কারণে সারাদেশ লকডাউনে চলে গেছে। সব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ছুটি। কিন্তু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কোনো লকডাউন ছিল না। কারও কোনো ছুটি ছিল না।’

ব্লুমবার্গের স্বীকৃতি বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এ স্বীকৃতিকে ছোট করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। ব্লুমবার্গ কেবল দেশের অর্থনৈতিক সফলতা দেখেই রিপোর্টটি করেনি। প্রতিষ্ঠানটি করোনা মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় জনবল, অবকাঠামো, টিকাদান সক্ষমতা, চলাফেরা নিয়ন্ত্রণের মতো গুরুত্বপূর্ণ অন্তত ১০টি মেট্রিক্স বিবেচনা করে এই ফলাফল ঘোষণা করেছে। কাজেই এই ফলাফল আমাদের জন্য এক বিরাট অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘এই বিজয়ের মাসে এটি আমাদের আরেকটি বিজয়। এ বিজয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিজয়, এই বিজয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিজয়। তবে এই ফলাফলে আত্মতুষ্টিতে না ভুগে আরও গতিশীলভাবে কাজে নেমে পড়তে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘অনেকে সমালোচনা করে ঘরের ভেতরে বসে। ঘরের ভেতরে বসে নিরাপদে অনেক সমালোচনা করা যায়। কিন্তু যারা মাঠে কাজ করে, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে তাদের প্রশংসা করা ও সম্মান করা একটা দায়িত্ব। আমরা প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা পেয়েছি, রাষ্ট্রপতির প্রশংসা পেয়েছি, বিশ্বের প্রশংসা পেয়েছি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিটি ব্যক্তি এই প্রশংসার দাবিদার। সর্বোপরি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ প্রশংসার দাবিদার। কাজেই আমরা প্রশংসা পেয়ে বসে থাকবো না।’

সবাইকে স্বাস্থ্য বিধি মানার আহ্বান জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, ‘মানুষের মনে অনেক সাহস, আটকে রাখা যায় না ঘরে কারণ কোভিড নিয়ন্ত্রণে আছে। কিন্তু মনে রাখতে হবে কোভিড কিন্তু এখনো চলে যায়নি।’

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নান বলেন, ‘করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবেলায় বাংলাদেশ যে পরিশ্রম করেছে তার ফল ব্লুমবার্গের এ গবেষণা জরিপ। দেশে অনেকেই সমালোচনা করেছে। তবে বিশ্ব বাংলাদেশের অর্জনের ঠিকই স্বীকৃতি দিয়েছে। বিশ্ব গণমাধ্যমে এসব অর্জনের কথা বলা হয়। ব্লুমবার্গের এই তথ্য তারই প্রমাণ। আমাদের যে পরিশ্রম করেছি তার স্বীকৃতি পেয়েছি। এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের। এটি সরকারের পরিশ্রমের ফল।’

বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম। অনুষ্টানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলী নূর, বিসিপিএসের সভাপতি অধ্যাপক ডা. কাজী দীন মোহাম্মদ, বিএমএ সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, বেসরকারি মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মুবিন খান, স্বাচিপের সভাপতি ডা. এম এ আজিজ, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এএইচএম এনায়েত হোসেন, ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান বক্তব্য রাখেন।

সারাবাংলা/এসবি/একে

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন