বিজ্ঞাপন

ভারতের পাঠানো উপহারের ভ্যাকসিন বাংলাদেশে

January 21, 2021 | 11:23 am

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বাংলাদেশে এসে পৌঁছালো ভারত থেকে উপহার হিসেবে পাওয়া নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) ভ্যাকসিনের ২০ লাখ ডোজ। ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্যাটেন্টে তৈরি ‘কোভিশিল্ড’ ব্র্যান্ডের এই ভ্যাকসিন সকালে ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) সকাল ৮টা ২৮ মিনিটে মুম্বাই থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা এয়ার ইন্ডিয়ার এআই১২৩২ নম্বর ফ্লাইটটি সকাল ১১টা ২০ মিনিটে শাহজালালে অবতরণ করে। হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ এইচ এম তৌহিদ উল আহসান সারাবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বিজ্ঞাপন

তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ভারতের পক্ষ থেকে উপহার হিসেবে পাওয়া ভ্যাকসিন এয়ার ইন্ডিয়ার এআই১২৩২ নম্বর ফ্লাইটে মুম্বাই থেকে ঢাকা বিমানবন্দরে এসে পৌঁছেছে। এখানে থেকে ভ্যাকসিন সংরক্ষণের জন্য নির্ধারিত স্থানে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, তেজগাঁওয়ে অবস্থিত সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) জেলা স্টোরে আপাতত এই ভ্যাকসিন সংরক্ষণ করা হবে। বিমানবন্দর থেকে সরাসরি এই স্টোরে চলে আসবে ভ্যাকসিনগুলো।

স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, শাহজালালে এসে পৌঁছালেও ভারত থেকে পাঠানো কোভিড ভ্যাকসিন (কোভিশিল্ড) দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের কাছে ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী এই ভ্যাকসিন হস্তান্তর করবেন।

বিজ্ঞাপন

এর আগে, গতকাল বুধবার (২০ জানুয়ারি) স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নান এক যৌথ ব্রিফিংয়ে বলেন, বৃহস্পতিবার ভারত থেকে উপহার হিসেবে পাওয়া ২০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন বাংলাদেশে পৌঁছাবে। আর ২৫ জানুয়ারি প্রথম ধাপের ৫০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন আসবে বলে জানিয়েছে বেক্সিমকো কর্তৃপক্ষ। উপহার হিসেবে পাওয়া ভ্যাকসিন ঢাকায় কোল্ড চেইনে রাখার চেষ্টা করছি আমরা। ঢাকা থেকে সেগুলো বিভিন্ন জেলার সিভিল সার্জনদের কাছে পাঠানো হবে। এটা ইপিআই কর্মসূচির আওতায় যেভাবে ভ্যাকসিন পাঠানো হয়, সেভাবে পৌঁছে দেওয়া হবে।

এর আগের দিন, মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি) স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, ভারত থেকে আসা ভ্যাকসিন প্রাথমিকভাবে তিন স্থানে সংরক্ষণ করা হবে। কেন্দ্রীয় ঔষধাগার (সিএমএসডি), মহাখালীতে অবস্থিত সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) প্রধান কার্যালয় ও তেজগাঁওয়ে সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) নিজস্ব সংরক্ষণাগারে রাখা হবে ভ্যাকসিন। করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন ওয়াক-ইন-কুলে (ছোট ঘরের মধ্যে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় সংরক্ষণ) রাখা হয়। বর্তমানে ২৯টি জেলায় ওয়াক-ইন-কুল আছে। আরও ১৮টি জেলায় ভ্যাকসিন সংরক্ষণের জন্য ওয়াক-ইন-কুল তৈরি হচ্ছে। আরও বেশি ভ্যাকসিন আসার আগেই এগুলো তৈরি হয়ে যাবে বলে আশা করছি।

বিজ্ঞাপন

করোনাভাইরাস বৈশ্বিক মহামারিতে রূপ নেওয়ার পর থেকেই ভ্যাকসিনকে এই মহামারি ঠেকাতে পাখির চোখ করেছে বিশ্ববাসী। স্বাভাবিকভাবে ভ্যাকসিন তৈরিতে দীর্ঘ সময় লাগলেও এবারে বিশ্বের বিজ্ঞানীদের অক্লান্ত পরিশ্রমে শেষ পর্যন্ত একবছরেরও কম সময়ের মধ্যে বেশ কয়েকটি কোম্পানির ভ্যাকসিন ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে সাফল্য পায়। সেগুলো মানবশরীরে প্রয়োজনের জন্য জরুরি অনুমোদনও পায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছ থেকে।

এসব ভ্যাকসিনের মধ্যে অন্যতম অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রেজেনেকার ভ্যাকসিনটি। এই ভ্যাকসিনের প্যাটেন্ট নিয়েই তা বিপুল পরিমাণে উৎপাদন করছে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট। তাদের কাছ থেকে তিন কোটি ভ্যাকসিন কিনতে গত নভেম্বরে ত্রিপাক্ষিক চুক্তি সই করে বাংলাদেশ। ভারতের সিরামের সঙ্গে ওই চুক্তির দেশীয় দুই অংশীদার হলো বাংলাদেশ সরকার ও বেসরকারি ওষুধ উৎপাদনকারী কোম্পানি বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস।

চুক্তি অনুযায়ী, সিরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদিন অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রেজেনেকার করোনা ভ্যাকসিন দেশে আমদানি করবে বেক্সিমকো ফার্মা। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদফতর জানিয়েছে, বেক্সিমকো এই ভ্যাকসিন দেশে আনার পর তাদের নিজেদের ওয়্যারহাউজে সংরক্ষণ করবে। এরপর দেশের নির্ধারিত জেলা ইপিআই কোল্ড স্টোরেজগুলোতে সেগুলো নিজ দায়িত্বেই পৌঁছে দেবে বেক্সিমকো। পরে সেসব ইপিআই কোল্ড স্টোরেজ থেকে ভ্যাকসিন সরকারি ব্যবস্থাপনায় পৌঁছে যাবে ভ্যাকসিনেশন সেন্টারগুলোতে।

সারাবাংলা/এসবি/এসজে/টিআর

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন