বিজ্ঞাপন

চ্যানেল ২৪-এর বিরুদ্ধে প্রতিমন্ত্রীর ছেলের ১০০ কোটি টাকার মামলা

October 26, 2021 | 11:59 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বিচারাধীন মামলা নিয়ে প্রকৃত সত্য গোপন করে সংবাদ প্রচার করায় বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ‘চ্যানেল ২৪’, চ্যানেলটির বার্তা সম্পাদক ও প্রতিবেদকের বিরুদ্ধে একশ কোটি টাকার মানহানির মামলা দায়ের করেছেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলমের ছেলে মুশফেক আলম সৈকত। মামলায় তিনি তার তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী ও সাবেক শাশুরিকেও আসামি করেছেন।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (২৫ অক্টোবর) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আসাদুজ্জামান নূরের আদালতে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। মামলায় চ্যানেল ২৪, চ্যানেলের বার্তা সম্পাদক, প্রতিবেদক মাসুদুর রহমান, সৈকতের সাবেক স্ত্রী তাসনোভা ইকবাল ও তাসনোভার মা নাজমা সুলতানাকে আসামি করা হয়েছে।

আদালতে সূত্রে জানা গেছে, আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ শেষে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) মামলাটি তদন্ত করে আগামী ৬ ডিসেম্বর প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, বিচারাধীন মামলা নিয়ে প্রকৃত সত্য-মিথ্যা যাচাই না করে এবং প্রকৃত সত্য গোপন করে গত ২২ অক্টোবর চ্যানেল ২৪ খবর প্রচার করে। এর মাধ্যমে বাদী মুশফেক আলম সৈকত ও তার পিতা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলমকে হেয় করা হয়েছে। সমাজ ও জাতির সামনে পিতা ও পরিবারের ভাবমূর্তি নষ্টের অভিযোগ এনে ১০০ কোটি টাকার মানহানি মামলাটি দায়ের করেছেন মুশফেক আলম সৈকত।

বিজ্ঞাপন

বাদীপক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার জুয়েল সরকার জানান, ‘প্রতিমন্ত্রীর ছেলের বিরুদ্ধে দেড় বছর ধরে স্ত্রীকে সন্তানের মুখ না দেখানোর অভিযোগ’ শিরোনামে গত ২২ অক্টোবর চ্যানেল ২৪ একটি খবর প্রচার করে। এতে বিশিষ্ট নাগরিক প্রতিমন্ত্রী পরিবারের ১০০ কোটি টাকার মানহানি হয়েছে। বিচারাধীন বিষয় নিয়ে মিথ্যা, আক্রমণাত্মক ও মানহানিকর খবর প্রকাশ করা হয়েছে। এ কারণে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, বাদী মুশফেক আলম সৈকত ২০১৫ সালের ২০ অক্টোবর ইকবাল কামালের মেয়ে তাসনোভা ইকবালকে বিয়ে করেন। ২০১৬ সালের ১৮ ডিসেম্বর তাদের কন্যাসন্তান জন্ম নেয়। কিন্তু শিশু সন্তানের কথা চিন্তা না করে তাসনোভা উচ্চশিক্ষা নিতে বিদেশে যেতে চান। তার পীড়াপীড়িতে মুশফেক তাকে নিয়ে মালয়েশিয়া যান। সেখানে মুশফেক নিজেই সন্তানের দেখাশোনা করতেন। একপর্যায়ে পড়ালেখায় ব্যাঘাত ঘটানোর কথা বলে ‍মুশফেককে মেয়েসহ দেশে ফিরতে বাধ্য করেন তাসনোভা। ২০১৮ সালের ৫ অক্টোবর মুশফেক মেয়েকে নিয়ে দেশে ফেরেন পরে তাসনোভা বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন বলেও অভিযোগ করেছেন মুশফেক।

তিনি অভিযোগে আরও বলেন, এর ১১ মাস পর তাসনোভা দেশে ফিরলেও সন্তানের সঙ্গে সময় না কাটিয়ে ঐচ্ছিক কনফারেন্স ও বিনোদনমূলক ভ্রমণ করেন। সেখান থেকে ফিরে গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি সৈকতের বাসায় এসে ঝগড়া ও ভাঙচুর করেন। পরে তাসনোভা তার সন্তানকে ফিরে পেতে উচ্চ আদালতে রিট করেন। সৈকত ও তার বাবার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। আদালত তাসনোভাকে তার সন্তানকে ভিডিও কলে দেখার আদেশ দেন। সৈকত ও তার পরিবারকে হেয় করতে তাসনোভা ৫৬ লাখ ৬৮ হাজার টাকা দাবি করে দেনমোহর ও খোরপোষের দাবিতে আদালতে আরও একটি মামলা করেন। কিন্তু সন্তানকে দেখতে চাওয়ার বিষয়ে আদালতকে কিছু জানাননি তাসনোভা।

বিজ্ঞাপন

মুশফেকের অভিযোগ, তাসনোভা তার আপিলের মেমোতে কন্যাকে সশরীরে দেখতে চাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করেননি। বরং দ্বিতীয় অতিরিক্ত সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতে দায়ের করা মামলায় মেয়েকে ভার্চুয়ালি দেখতে চাওয়ার আদেশ রদ চান। আদালত তার আপিল নামঞ্জুর করেন। এ অবস্থায় বিচারাধীন মামলাটির তথ্য যাচাই-বাছাই না করেই চ্যানেল ২৪ গত ২২ অক্টোবর একটি সংবাদ প্রচার করে, যা বাদী মুশফেকের বাবা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম ও তার পরিবারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে। এতে তাদের ১০০ কোটি টাকার মানহানি হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪৯৯, ৫০০, ৫০১ ও ১০৯ ধারায় অভিযোগ এনেছেন মুশফেক।

সারাবাংলা/জেজে/এআই/টিআর

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন