বিজ্ঞাপন

যতক্ষণ শ্বাস আছে আপনাদের উন্নয়নে কাজ করে যাব: প্রধানমন্ত্রী

April 1, 2022 | 12:11 am

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আপনাদের জন্য জীবনটা দিতেও আমি এতটুকু কুণ্ঠিত না। এদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে যত বাধাই আসুক, তা করে যাবই। সবাই সুন্দর জীবন পাবে। উন্নত জীবন পাবেন, সুন্দর থাকবে। যতক্ষণ আমার শ্বাস আছে ততক্ষণ আপনাদের পাশে আপনাদের উন্নয়নের কাজ করে যাব।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) সন্ধ্যায় ‘উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ: উন্নয়নের নতুন জোয়ার, বদলে যাওয়া কক্সবাজার শীর্ষক জমকালো উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

প্রসঙ্গত, জাতিসংঘ কর্তৃক বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের স্বীকৃতি প্রদান উপলক্ষ্যে দেশের বিশেষ কয়েকটি স্থানে আনুষ্ঠানিকভাবে উদযাপনের অংশ হিসাবে কক্সাবাজারে অনুষ্ঠিত হয়।

জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে ‘ও জোনাকি’ গানের ভিডিওচিত্র চিত্রায়নে কক্সবাজারের সাফল্য তুলে ধরে সৈকতের লাবণী পয়েন্টে এ উৎসব হয়।

বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি উপস্থিত যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন অর্থমন্ত্রী আ. হ. ম মোস্তফা কামাল। সৈকত প্রান্তে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক সিরাজুল মোস্তফা, ভুমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তার আগে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস।

মন্ত্রীদের বক্তব্য পর্বটি পরিচালনা করেন মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস। স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন।

অনুষ্ঠানে ‘জোরশে চলো বাংলাদেশ’ বাংলাদেশ শীর্ষক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। শতভাগ বিদ্যুাতায়নের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে সম্মান জানিয়ে ‘ও জোনাকি’ভিডিওচিত্র পরিবেশন করা হয়।

বিজ্ঞাপন

টানা মেয়াদে প্রতিটি নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিবারেই নতুন নতুন একটা থিম নিয়ে আসার প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি দেই, সেটা আমরা ভুলে যাই না। ইশতেহার সামনে রেখেই আমরা উন্নয়ন প্রকল্প নেই। কাজেই এবারও আমাদের যেটা ছিল তরুণ সমাজকে একটা উন্নত জীবন দেওয়া। শিক্ষায় দীক্ষায় আধুনিক বিজ্ঞান প্রযুক্তি শিক্ষায় যেন তারা গড়ে উঠতে পারে। তাই আমাদের মূল লক্ষ্যটা ছিল এবং থিমটা ছিল তারুণের শক্তি বাংলাদেশের সমৃদ্ধি।’

সকলের সহযোগিতায় এই উন্নয়নের কাজ করে যাওয়ার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্থদের পুর্নবাসন করে যাওয়ার প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকের বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। বাংলাদেশের প্রতিটি ঘর আলোকিত করেছি শতভাগ বিদ্যুৎ দিয়েছি। বাংলাদেশের কোনো মানুষ গৃহহারা থাকবে না।’

এ সময় আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমার বাবা তার সারাটা জীবন এদেশের মানুষের জন্য উৎসর্গ করেছিলেন। আমরা সন্তান হিসাবে খুব অল্প সময় তাকে পেয়েছি।’

সশরীরে কক্সবাজারের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে না পারার প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, ‘আজকে সত্যি আমার নিজেরই কষ্ট হচ্ছে। যে আমি এখানে উপস্থিত থাকতে পারলাম না। যে কক্সাবাজার বারবার গিয়েছি। কত সভা করেছি। আমরা সমুদ্র সৈকতেও জনসভা করেছি। প্রত্যেকটা দ্বীপাঞ্চলে সভা করেছি। পার্লামেন্ট চলছে। তাছাড়া অনেকগুলি কর্মসূচি ছিল যে কারণে ওখানে সশরীরে উপস্থিত হতে পারলাম না।’

বিজ্ঞাপন

তবে ডিজিটাল বাংলাদেশের কারণে ভার্চুয়ালি আপনাদের সামনে উপস্থিত হতে পেরেছি।একটা সুবিধা হচ্ছে সবাইকে খুব ভালভাবে দেখতে পাচ্ছি। সেটাই হচ্ছে সবথেকে বড় সাস্ত্বনা বলেও মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘হয়ত আমারও বয়স হয়েছে কিন্তু নিশ্চয়ই একবার আসব কক্সবাজার। সকলের সঙ্গে আবার দেখা হবে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত সমৃদ্ধ হবে সেই পরিকল্পনাও করে তা বাস্তবায়নের কাজ শুরু করেছি। কাজেই বাংলাদেশকে আর কেউ পিছনে টানতে পারবে না। বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। বাংলাদেশ জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা হিসাবে আমরা গড়ে তুলব।’

দেশপ্রেম না থাকলে, দেশের মানুষের প্রতি কর্তব্যবোধ না থাকলে, দেশের মানুষের ওপর বিশ্বাস-আস্থা না থাকলে কখনো কাজ করা যায় না জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সেই আস্থা বিশ্বাসটাই হচ্ছে আমাদের সবথেকে বড় শক্তি। মানুষের বিশ্বাস এবং মানুষের আস্থা এবং মানুষের ভালবাসাই আমাদের প্রেরণা।’

তিনি বলেন, ‘বাবা-মা ভাই সব হারিয়েছিলাম আমরা দুই বোন। যেদিন ঢাকায় ফিরে আসি ১৯৮১ সালে। যখন যাই সেই ৭৫’র ৩০ জুলাই। ঢাকা তেজগাঁও এয়ারপোর্ট থেকে প্লেনে উঠি। কামাল জামাল রাসেল সবাই ছিল এয়ারপোর্টে।কিন্তু যখন ফিরে আসি বাবা মা ভাই কাউকেই পাইনি। কিন্তু পেয়েছিলাম এদেশের লাখো মানুষ। ঝড় বৃষ্টি উপেক্ষা করে তারা ছুটে গিয়েছিল। কাজেই তারাই সেদিন থেকে আমার আপনজন এই বাংলাদেশের মানুষ। তারাই আমার পরিবার।তারাই আমার সব। তাদের জন্যই আমি কাজ করি এবং আপনারা বাংলাদেশের মানুষই আমার সবথেকে আপনজন এবং আমার পরিবার হিসাবে মনে করি।’

সারাবাংলা/এনআর/একে

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন