বিজ্ঞাপন

ইদযাত্রা শেষে স্বস্তির নিঃশ্বাস

April 30, 2022 | 2:37 pm

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

রাজশাহী: রাজধানীর কল্যাণপুর থেকে রাত সোয়া ১২টার শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত একটি বাসে ওঠেন সৌমী নাহিদ স্বর্ণ। শনিবার (৩০ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯টায় রাজশাহীর শিরোইল বাস স্ট্যান্ডে নামেন তিনি। নেমেই স্বস্তির হাসি দেন এই তরুণী। বলেন, রাতে বাসে ওঠার পর ভয়ে ছিলাম, যানজটে পরব কি না। কিন্তু সেভাবে যানজট ছিল না। সড়কে ধীরগতি ছিল কিছুটা। তবে শীতাতপ বাসে আসার কারণে কোনো ভোগান্তি পোহাতে হয়নি।

বিজ্ঞাপন

একই রকম কথা বললেন আরেক বাসযাত্রী রায়হান আলমও। তিনি জানান, ঢাকা থেকে ফেরার পথটা এবার মোটামুটি ভালোই আছে। কোথাও কোথাও কাজ চলছে। সে কারণে কিছুটা যানজট দেখা দিয়েছে। ছয় ঘণ্টার পথ পার হয়ে এসেছেন সাড়ে ৯ ঘণ্টায়। তাতেও তিনি খুশি। কারণ অন্যান্য বছর ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা বা তারও বেশি সময় লেগে যাওয়ারও নজির রয়েছে।

শনিবার (৩০ এপ্রিল) সকালে এরকম হাসিমুখে ভরা দেখা গেল রাজশাহীর বাস স্ট্যান্ড। ইদ উদযাপন করতে যে সবাই ঢাকা থেকে এসেছেন বাড়ি। তাদের কেউ কেউ করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে গত দুই বছর বাড়িতে ফিরতে পারেননি। দীর্ঘ বিরতির পর বাড়ি ফিরতে পেরে তিনি ভীষণ খুশি।

তবে বাসযাত্রীদের মতো এতটা স্বস্তির কথা বলতে পারছেন না ট্রেনের যাত্রীরা। তারা বলছেন, কমলাপুর থেকে ট্রেন রাজশাহীর পথে রওনা দিতে দেরি করেছে। ট্রেনে উঠতেও বেশ বেগ পেতে হচ্ছে বলে জানালেন তারা।

বিজ্ঞাপন

যাত্রীদের অভিযোগ, অনেকে টিকিট না কেটেই ট্রেনে উঠে পড়েছে। ভিড়ের কারণে নিজ আসনেও বসতে পারেননি কেউ কেউ। পথে ট্রেনে মানুষজন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই আসছে। তবে অভিযোগের পরও বাড়ি ফেরার আনন্দে ভোগান্তি ভুলে যাচ্ছেন যাত্রীরা।

ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন জুলফিকার আলী। তিনি বলেন, স্টেশনে ১৬ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে টিকিট পেয়েছিলাম। তারপর হুড়োহুড়ি করে ট্রেনে উঠি। সিটে বসে থাকলেও ঘাড়ের ওপর দাঁড়িয়ে ছিলেন যাত্রীরা। এভাবেই এলাম। এখন রাজশাহীতে নামতেই স্বস্তি লাগছে। এত ভোগান্তির সবই ভুলে গেলাম।

জুলফিকার বলেন, বাসে এলে হয়তো একটু ভোগান্তি কম হতো। কিন্তু ট্রেনের ভ্রমণ নিরাপদ। এই ইদের পথঘাটে ঝুঁকি না নিয়ে বহু কষ্ট করে টিকিট সংগ্রহ করেছি। এখন রাজশাহী আসতে পেরেই সব ভুলে গিয়েছি। এখন পরিবারের সঙ্গে ইদটা ভালোভাবে কাটাতে চাই।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা-রাজশাহী রুটের পদ্মা এক্সপ্রেসের রাজশাহী পৌঁছার কথা ছিল ভোর সাড়ে ৪টায়। সেই ট্রেন শনিবার রাজশাহী পৌঁছায় সকাল সাড়ে ৭টায়। তিন ঘণ্টা দেরি হলেও তা নিয়েও যাত্রীরা এখন আর তেমন অভিযোগ করতে চাচ্ছেন না। স্টেশনে নেমেই যেমন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে আনিকা তাবাসসুম নামের এক তরুণী বললেন, ‘অবশেষে রাজশাহী!’

আনিকা বলেন, ইদের সময় ট্রেনে বাড়ি ফেরাটা তো যুদ্ধে জয়লাভ করার মতো বিষয়। সেই যুদ্ধই জয় করে এলাম। এজন্য কষ্টও কম করতে হয়নি। ১০ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট পেয়েছিলাম। পায়ে ব্যথা ধরে গিয়েছিল। শেষমেষ রাজশাহী এলাম। ইদটা শেষ করে আবার ঠিকমতো ফিরতে পারলেই হয়।

রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের ব্যবস্থাপক আবদুল করিম অবশ্য বললেন, ট্রেনগুলো প্রায় ঠিক সময়ইে রাজশাহী আসছে। কোনো কোনো সময় অল্প কিছু সময় হয়তো দেরি হচ্ছে। ইদের সময় সেটা বিভিন্ন কারণেই হয়ে থাকে। তবে তারপরও যাত্রীরা ভালোভাবে ফিরতে পারছেন, এতেই স্বস্তি।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/টিআর

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন