বিজ্ঞাপন

৬ দফা ছিল স্বাধীনতার রিহার্সেল

June 7, 2022 | 10:13 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছয় দফার সিঁড়ি বেয়েই ধাপে ধাপে আন্দোলন-সংগ্রাম এগিয়ে নিয়ে বাংলাদেশকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন। এই ছয় দফা ছিল স্বাধীনতা আন্দোলনের যুগান্তকারী পরিবর্তনের বাঁক। বলা যায়, ছয় দফা ছিল স্বাধীনতার রিহার্সেল।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার(৭ জুন) ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস উপলক্ষে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদ সদস্যরা এসব কথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করছিলেন।

আলোচনায় অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ বলেন, ৬ দফা বাংলাদেশের স্বাধীনতার অন্যতম ভিত্তি। ৬ দফার মধ্য নিহিত ছিল বাঙালির স্বাধিকার ও স্বাধীনতার কথা। ১৯৬৬ সালের ৭ জুন বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাসে একটি যুগন্তকারী পরিবর্তন ঘটেছিল। এদিন ৬ দফা ঘোষণা করা হয়েছিল। ঐতিহাসিক ৬ দফা স্বাধীনতার অন্যতম মাইলফলক। আজ তরুণ প্রজন্মকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করতে এই ইতিহাস জানাতে হবে।

সাবেক মন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধুর অন্যতম ঘনিষ্ঠ তোফায়েল আহমেদ বলেন, ৬ দফা ছিল বঙ্গবন্ধুর একটি ঐতিহাসিক ও সময়োপোযোগী ঘোষণা। ৬ দফা ঘোষণার পর বঙ্গবন্ধু আমাদের বলেছিলেন— সাঁকো দিলাম, ওপারে যাব। বঙ্গবন্ধু তখনই বিশ্বাস করতেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হবে। এই লক্ষ্যেই তিনি ৬ দফা ঘোষণা করেছিলেন।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, এই ৬ দফার আন্দোলন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই আন্দোলনের অগ্রভাগে ছিলেন। ৬ দফা আমাদের স্বাধীনতার অনুপ্রেরণা ছিল। সেই ৬ দফা থেকে ১১ দফা। ৬ দফার সিঁড়ি বেয়েই বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংগ্রামকে বঙ্গবন্ধু ধাপে ধাপে এগিয়ে নিয়েছিলেন। এর মাধ্যমে তিনি বাঙালি জাতিকে মুক্ত করে দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর ৬ দফা ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার রিহার্সেল।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, ৬ দফা দেওয়ার পর বঙ্গবন্ধু আন্দোলন করতে গিয়ে সেখানেই যান, সেখানেই গ্রেফতার করা হয়। বঙ্গবন্ধুসহ ৩২ হাজার আওয়ামী লীগ ও ছাত্রনেতাকে গ্রেফতার করা হয়। ৬ দফার দাবিতে প্রথম ৭ জুন হরতাল পালন করা হলো। মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সেই হরতালে অংশ নিল। বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হলো। কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়, কেউ জানত না। ৬ মাস বঙ্গবন্ধুর কোনো খোঁজ ছিল না। পরে তো ১৯৬৯ সালে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার বিরুদ্ধে সারাদেশে আনেদালন ছড়িয়ে পড়ল। আইয়ুব খান উপায় না দেখে ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার করে ২২ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধুকে ছেড়ে দিল।

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু বলেন, ৬ দফাকে বিচ্ছিন্নতাবাদী দাবি বলা হয়েছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন— এটি বিচ্ছিন্নতাবাদী নয়, বাঙালির স্বায়ত্তশাসনের দাবি। বঙ্গবন্ধু সারাদেশে গণআন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। তিনি শ্রমিক সংগঠনগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। শ্রমিকরা ৬ দফা আন্দোলনে এগিয়ে আসে। ৭ জুনের হরতাল ছিল বঙ্গবন্ধুসহ রাজবন্দিদের মুক্তি ও ৬ দফা দাবি মেনে নেওয়ার হরতাল। জুলম-নির্যাতনের মধ্য দিয়েই হরতাল সফল করা হয়।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, হরতাল সফল হওয়ার পর দেশের মানুষ ৬ দফাকে ‘ম্যাগনা কার্টা’ হিসেবে গ্রহণ করেন। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, আইয়ুব খান ৬ দফা যদি মেনেই নেয়, তাহলে ৬ মাসের মধ্যে বাংলাদেশ স্বাধীন করার দায়িত্ব আমার। তাই বাংলাদেশের মুক্তির সংগ্রামে ৭ জুন ছিল একটি ঐতিহাসিক দিন।

সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন