বিজ্ঞাপন

ঢামেকের ইন্টার্ন চিকিৎসককে ঢাবি শিক্ষার্থীদের মারধর

August 9, 2022 | 1:21 pm

ঢাবি করেসপন্ডেন্ট

ঢাবি: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থীর হাতে মারধরের শিকার হওয়ার অভিযোগ করেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এক ইন্টার্ন চিকিৎসক। এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢামেকের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ (ইচিপ)।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (৮ আগস্ট) রাত সাড়ে নয়টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারসংলগ্ন এলাকায় এই ঘটনা ঘটে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী চিকিৎসক সাজ্জাদ হোসেন। তবে মারধরের তাৎক্ষণিকতায় কাউকে শনাক্ত করতে পারেননি তিনি।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সাজ্জাদ হোসেন বলেন, কলেজ লাইব্রেরিতে পড়াশোনা শেষে রাত নয়টার দিকে আমি শহীদ মিনারের দিকে যাই। সেখানে আমি একা একা বসে বাদাম খাচ্ছিলাম। তখন আমি দেখি যে, দুই-তিন জন করে একেকটা দলে ভাগ হয়ে বেশ কিছু ছেলে শহীদ মিনারে আগতদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে, অনেককে সেখান থেকে উঠিয়ে দিচ্ছে। তারা কেন এটা করছিলো আমার জানা নেই।

একপর্যায়ে তিন জন এসে আমাকে জিজ্ঞাসা করে যে, আমি সেখানে কী করছি। আমি বললাম, ‘আমি বসে আছি’। তখন তারা আমার পরিচয় জানতে চায়। তখন আমি আমার পরিচয় দিলে তারা আমার পরিচয়পত্র দেখতে চায়। আমার কাছে পরিচয়পত্র নেই জানালে তারা আমাকে বলে, ‘পরিচয়পত্র নেই কেন? আমাদের কাছে তো পরিচয়পত্র আছে’? তখন আমি বললাম, ‘সবাই কী সবসময় পরিচয়পত্র নিয়ে ঘোরে?’ এই কথা বলার পর সঙ্গে সঙ্গে আমাকে একজন থাপ্পড় মেরে বসে। এরপর আরও দুই তিন জন এসে আমাকে চড়-থাপ্পর মারা শুরু করে।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, মারধরের একপর্যায়ে আমি চিৎকার করে বলে উঠি, ‘আপনারা চাইলে আমার সঙ্গে ঢাকা মেডিকেলে গিয়ে আমার পরিচয়পত্র দেখে আসতে পারেন’। এই কথা বলার পর তারা হয়তো বুঝতে পারে যে, আমি ঢাকা মেডিকেলের ছাত্র। তখন আমি কাউকে ফোন দিয়ে এনে ঝামেলা হয়তো ঝামেলা করতে পারি, এই ভয়ে তারা আমাকে দ্রুত ওই স্থান থেকে বিদায় করার জন্যে তৎপর হয়ে ওঠে। আমি চলে যাওয়ার সময় যে পারছিল, সেই আমাকে মারধর করছিল এবং জোর করে চলে যেতে জোর করছিল। ঠিক এই সময় কেউ একজন আমার কানের ওপর জোরে থাপ্পর দিলে আমি বসে পড়ি। বসে কেন পড়লাম, এই অপরাধে একজন জুতা পায়ে আমার মুখে লাথি মারে। একারণে আমার নাক দিয়ে রক্ত পড়া শুরু হয়। এরপর আমি চলে যেতে উদ্যত হলে যাওয়ার পথে যে যেভাবে পেরেছে আমাকে মারধর করেছে রিকশায় ওঠার আগ পর্যন্ত। আমাকে ৮ থেকে ১০ জনের মতো মারধর করে। তাদের উদ্দেশ্য ছিনতাই ছিল নাকি অন্যকিছু ছিল জানি না।

মারধরকারীদের কেউ কেউ নেশাগ্রস্ত ছিলো বলে উল্লেখ করে সাজ্জাদ বলেন, ‘আমাকে মারার সময় অনেক শরীরের ভারসাম্য রাখতে পারছিল না, পড়ে যাচ্ছিল। তাদের লক্ষণ দেখেই বোঝা যাচ্ছিলো যে, তারা নেশাগ্রস্ত। তাদের আচার-আচরণ স্বাভাবিক ছিল না।’

মারধরকারীদের কাউকে চিনতে পেরেছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তাদের প্রায় সবার গায়েই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগোওয়ালা টি-শার্ট ছিল। কিন্তু পরিস্থিতি এমন ছিল যে, তাদের পরিচয় জানা বা বোঝার উপায় ছিল না। তবে সবাই একটু হালকা পাতলা গড়নের ছিল। কারো নাম বা হলের নাম জানার সুযোগ পাইনি। একজন সিলভার রঙের টি-শার্ট পরা ছিল ঢাবির লোগোওয়ালা। এর বেশি খেয়াল করতে পারিনি’

বিজ্ঞাপন

এদিকে, এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সংগঠন ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ (ইচিপ)।

মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) সকালে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনটির সভাপতি ডা. মহিউদ্দিন জিলানী এবং সাধারণ সম্পাদক ডা. মারুফ উল হাসান শামীম বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর কতিপয় ছাত্র কর্তৃক গত ০৮/০৮/২০২২ইং তারিখ, রাত ৯ টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে বিনা উসকানিতে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতাল এর ইন্টার্ন চিকিৎসক ডা. মো. সাজ্জাদ হোসেন এর উপর বর্বরোচিত হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’

দোষীদের শনাক্ত করে শাস্তি দেওয়ার জন্য ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছে সংগঠনটি। বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সিসি টিভি ফুটেজের মাধ্যমে দোষীদের শনাক্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে লাগাতার কর্মবিরতিসহ পরবর্তীতে আরও কঠোর কর্মসূচি গ্রহণে ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বাধ্য থাকিবে।’

এদিকে, অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী। তিনি বলেন, ‘অভিযোগ পেলে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আরআইআর/এমও

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন