বিজ্ঞাপন

৩২-এ নেমেছিল শোকের মিছিল, স্লোগানে স্লোগানে বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ

August 15, 2022 | 6:53 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: পরনে শোকের রঙ, বুকে কালো ব্যাচ, হাতে ফুল অথবা ব্যানার নিয়ে বিভিন্ন বয়সী মানুষের ভিড় এসে মিশেছে ধানমন্ডি ৩২-এ। উদ্দেশ্য বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন। ভিড়ের ভেতর থেকেই মাঝে-মধ্যে স্লোগান উঠছে ‘জয় বাংলা’ অথবা ‘তোমার নেতা, আমার নেতা শেখ মুজিব, শেখ মুজিব।’

বিজ্ঞাপন

সোমবার (১৫ আগস্ট) জাতীয় শোক দিবসে রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের এলাকা থেকে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী ছাড়াও জাতির পিতাসহ ১৫ আগস্টে নিহত শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আসেন হাজারো মানুষ।

শিক্ষামন্ত্রী দীপুমনি, পরিকল্পনামন্ত্রী আব্দুল মান্নান, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসসহ অনেকেই ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন।

এ সময় বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্টের খুনিদের বিচার অসম্পূর্ণ রয়েছে দাবি করে শ ম রেজাউল করিম বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সম্পূর্ণ বিচার হয়নি। অসম্পূর্ণ বিচার হয়েছে। খুনের ঘটনায় যারা ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পনায় ছিল ও যারা সুবিধাভোগী তাদের বিচারের আওতায় আনা হয়নি। এছাড়া আরও কিছু খুনিরা জজকোর্ট ও হাইকোর্ট থেকে এবং তদন্ত পর্যায়ে অব্যহতি পেয়েছে। সবমিলিয়ে বঙ্গবন্ধুর খুনের রহস্য উদঘাটন করে সকল অপরাধীদের চিহ্নিত করতে দরকার একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন তদন্ত কমিশন। সেই কমিশনের রিপোর্টের ভিত্তিতে আবারও তাদের বিচার করার আইনে সুযোগ রয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

১৫ আগস্ট জাতির পিতার খুনিদের অনেককেই বিচারের মুখোমুখি করা গেলেও অনেকেই এখনও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে লুকিয়ে আছেন। বাংলাদেশের বন্ধুপ্রতীম দেশ হিসেবে দাবি করে এমন অনেক দেশেই তারা আছেন। এদের ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে আমাদের অগ্রগতি সম্পর্কে জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী বলেন, ‘সরকার চেষ্টা করছে। এটি একটি আইনি প্রক্রিয়া। বিভিন্ন দেশের আইনও এটির সঙ্গে জড়িত। শোকের মাসে আমরা নতুন আশা দেখছি। আমাদের আশা নতুন একটি কমিশন হবে এবং এই কমিশনের মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের সম্পর্কে আগামী প্রজন্ম ও আমরা জানতে পারব। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা অবশ্যই বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিচার কাজ শেষ করবে।’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাৎবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সকাল থেকেই ধানমন্ডির আশপাশে ভিড় বাড়তে থাকে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় পর্যায়ের বিভিন্ন নেতাকর্মী ও বিভিন্ন ওয়ার্ডের নেতরা আসেন ফুল দিতে। এছাড়াও আসেন বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা। অনেকেই আসেন ব্যক্তিগতভাবে শ্রদ্ধা জানাতে।

আদাবর থেকে প্রতিবছর ১৫ আগস্ট মাকে নিয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে আসেন সুমি। কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের সদস্য নন তিনি। শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি ভালোবাসা ও টান থেকে তারা প্রতিবছর শোক দিবসে আসেন এখানে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে, জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে চলছে আলোকচিত্র প্রদর্শনী ও রক্তদান কর্মসূচি। ১৩ আগস্ট থেকে চালু হওয়া এই প্রদর্শনী শেষ হবে আজ। ‘বাঙালা হতে বাংলাদেশ’ শিরোনামের এই প্রদর্শিনীতে বাংলাদেশের হাজার বছরের ইতিহাস ও ঐতিহ্য তুলে ধরা হয়েছে। বাংলাদেশ স্বেচ্ছাসেবক লীগের আয়োজনে এই প্রদর্শনীর আলোকচিত্র সংগ্রাহক ও সম্পাদক সাহাবউদ্দিন মজুমদার।

ওয়াইডাব্লিউসিএ স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী অধরা মজুমদারকে নিয়ে আলোকচিত্র ঘুরে ঘুরে দেখছিলেন ব্যাংক কর্মকর্তা মা শাশ্বতী হালদার। তারা থাকেন রায়েরবাজার। মেয়ের চার বছর বয়স থেকেই ১৫ আগস্ট ধানমন্ডি ৩২ এ নিয়ে আসেন তিনি। শাশ্বতী হালদার মনে করেন, ইতিহাসের স্বাক্ষী এই ৩২ নম্বরে আসার মাধ্যমে শিশুদের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর প্রতি ভালোবাসা তৈরি হওয়ার পাশাপাশি তারা দেশের ইতিহাস সম্পর্কেও জানতে পারবে।

এদিকে, প্রদর্শনী কেন্দ্রেই স্বেচ্ছাসেবক লীগের আয়োজনে চলে রক্তদান কর্মসূচি। বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. আলী আবরার জানান, সকাল ১০টা থেকে শুরু হওয়া এই কার্যক্রমে দুই ঘণ্টায় ১১ ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আরএফ/পিটিএম

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন