বিজ্ঞাপন

মেট্রোরেল শুরুতে চলবে দিনে ৪ ঘণ্টা

December 20, 2022 | 8:16 am

ঝর্ণা রায়, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: আগামী সপ্তাহেই উদ্বোধন হতে যাচ্ছে স্বপ্নের মেট্রোরেল। ২৮ ডিসেম্বর রাজধানীর আন্তর্জাতিক বঙ্গবন্ধু সম্মেলন কেন্দ্রে এই স্বপ্ন যাত্রার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনের পরদিন থেকেই যাত্রী নিয়ে রাজধানীর বুকে ছুটবে মেট্রোরেল।

বিজ্ঞাপন

প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড-ডিএমটিসিএল জানিয়েছে, শুরুর দিকে প্রতিদিন চার ঘণ্টার জন্য ট্রেন চলাচল করবে। পরবর্তীতে ট্রেন চলাচলের সময় বাড়ানো হবে।

রাজধানীর উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেল উদ্বোধনের আগের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তারা জানিয়েছেন, চালু হতে যাওয়া মেট্রোরেল পথের অবকাঠামো নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে অনেক আগে। এখন প্রতিদিনই লাইনে চলছে মেট্রো ট্রেনের ট্রায়াল। পাশাপাশি বাকি কাজও সম্পন্ন করা হচ্ছে।

ডিএমটিসিএল সূত্রে জানা গেছে, উদ্বোধনের পর দিন অর্থাৎ ২৯ ডিসেম্বর যাত্রী পরিবহনের জন্য চলাচল শুরু করবে মেট্রোরেল। শুরুতে দৈনিক চার ঘণ্টা করে চলাচল করবে। তবে এই চার ঘণ্টা একটানা চলবে নাকি সকাল-বিকাল দুই দফায় চালানো হবে এটি এখনো ঠিক হয়নি। প্রথম এক সপ্তাহ চালানোর পর যাত্রী চাহিদা দেখে পরের সময়সূচি ঠিক করা হবে।

বিজ্ঞাপন

জানা গেছে, প্রতিদিন ট্রেন চলাচল শুরু হবে সকাল আটটায়। মেট্রোরেল ও পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ডিএমটিসিএল ও জাইকা প্রতিনিধিদের মধ্যে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এই সময় ঠিক করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন ছিদ্দিক সারাবাংলাকে বলেন, আমরা শুরুর দিকে একটু গ্যাপ দিয়েই ট্রেন পরিচালনা করব। কারণ মেট্রোরেলে চলাচলের জন্য আমাদের দেশের যাত্রীরা অভ্যস্ত না। সেজন্য প্রথম দিকে সকাল ও বিকালে দিনে চার ঘণ্টা করে ট্রেন চলানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যাত্রী সংখ্যা বাড়ার ওপরে নির্ভর করছে পরবর্তীতে সময় কতটুকু বাড়তে পারে।

রাজধানীর যানজট কমিয়ে যাতায়াত সহজ ও দ্রুত করার লক্ষ্যে বিশ্বের উন্নত দেশের মতো রাজধানী ঢাকায় মেট্রোরেল নির্মাণের উদ্যোগে ২০১২ সালে সায় দেয় সরকার। মোট ৬ ধাপে মেট্রোরেল নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়। পরিকল্পনার প্রথম ধাপে গঠন করা হয় ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড-ডিএমটিসিএল।

বিজ্ঞাপন

এমআরটি লাইন-৬ দিয়ে শুরু হয় প্রকল্পের কাজ। এই রুটের অগ্রগতি ৯৭ ভাগেরও বেশি। এমআরটি লাইন-৬ এর আওতায় রাজধানীর উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল পথের দৈর্ঘ্য ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। এই পথে রয়েছে ৯টি স্টেশন।

মেট্রোরেল শুরুর স্টেশনগুলোতে কম্পিউটারে নেটওয়ার্ক সংযোগ, ক্যাবল স্থাপন, সফটওয়্যারে আপডেট দেওয়ার কাজও শেষ। এখন সেগুলো প্রতিদিন পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হচ্ছে। তবে মিরপুর অংশের কয়েকটি স্টেশনে, বিশেষ করে কাঁজিপাড়া, শেওড়াপাড়া স্টেশনে এখনও কিছু কাজ বাকি। এই দুই স্টেশনের বাইরে ও ভেতরে প্রবেশ পথের নির্মাণ কাজ এখনও চলছে।

সংশ্লিষ্টরা কর্মীরা জানিয়েছেন, দ্রুত কাজ শেষ করার নির্দেশনা রয়েছে। সেজন্য দিন রাত মিলিয়ে কাজ শেষ করতে হচ্ছে তাদের। যদিও শেওড়াপাড়া স্টেশনের চলমান বৈদ্যুতিক সিঁড়ির কাজ এখনো শুরু করতে পারেনি ডিএমটিসিএল। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এই স্টেশনে কিছু জটিলতা থাকায় কাজ শেষ করতে দেরী হচ্ছে। তবে উদ্বোধনের আগেই কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে দাবি করেন তারা।

এ প্রসঙ্গে ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন ছিদ্দিক সারাবাংলাকে বলেন, উদ্বোধনের জন্য আমরা প্রায় প্রস্তুত। এখন যেটুকু কাজ বাকি রয়েছে তা ২৮ ডিসেম্বরের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে। তিনি বলেন, উদ্বোধনকে ঘিরে এখন আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে।

বিজ্ঞাপন

তবে এবার চাকচিক্যময় কোনো উদ্বোধনী আয়োজন করা হবে না বলে জানান তিনি। ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন,  বিশ্ব অর্থনীতির কথা চিন্তা করে খরচ কম করার নির্দেশনা রয়েছে।

উল্লেখ্য, উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল স্থাপনে শুরুতে ব্যয় ধরা হয়েছিল ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা। পরে কমলাপুর পর্যন্ত এ লাইন বর্ধিত করা হয়। এতে ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকায়। এরমধ্যে জাপানের উন্নয়ন সংস্থা- জাইকা দিচ্ছে ১৯ হাজার ৭১৯ কোটি টাকা এবং সরকার নিজস্ব তহবিল থেকে খরচ করবে ১৩ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকা।

মেট্রোরেল সংক্রান্ত আরও সংবাদ:

সারাবাংলা/জেআর/আইই

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন