‘দল-মত থাকতে পারে, কিন্তু দেশের অগ্রযাত্রা যেন ব্যাহত না হয়’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: দেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে যেকোনো ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড ও জনজীবনের শান্তি-নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশকে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, দল-মত থাকতে পারে। কিন্তু দেশের স্বার্থে, মানুষের কল্যাণে কোনো উন্নয়ন কাজ যেন কেউ ধ্বংস করতে না পারে, প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে না পারে।

বুধবার (৪ জানুয়ারি) পুলিশ সপ্তাহ-২০২৩ উপলক্ষে নিজ কার্যালয়ে ‘বাংলাদেশ পুলিশ’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উদ্দেশে দেওয়া বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।

আওয়ামী লীগ সরকারের মেয়াদে দেশের আর্থসামাজিক অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘গত ১৪ বছরে দেশের বিরাট পরিবর্তন আনতে পেরেছি। সারাবিশ্বব্যাপী তা স্বীকার করে। করোনা মহামরি মোকাবিলা, এরপর যুদ্ধের সময় অর্থনৈতির চাকাকে শক্তভাবে ধরে রাখা। এটা কিন্তু দুরূহ কাজ, যা অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে করতে পেরেছি।’

এক্ষেত্রে পুলিশ বাহিনীর অবদানের কথা স্বীকার করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই অগ্রযাত্রা যেন কেউ ব্যহত করতে না পারে। এইটুকুই আপনাদের কাছে অনুরোধ। দল-মত থাকতে পারে। কিন্তু দেশের স্বার্থে, মানুষের কল্যাণে ও দেশের উন্নয়নের কাজ কেউ যেন ধ্বংস করতে না পারে, কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে না পারে। দেশের এই অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে না পারে, সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে।’

শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘ভবিষ্যতে যেন আর অগ্নিসন্ত্রাস করার সাহস না পায়। মানুষের জীবনে শান্তি ও নিরাপত্তা বিঘ্নিত করতে না পারে। আন্দোলন সংগ্রাম করবে, জনগণকে নিয়ে করবে। কিন্তু সেখানে যদি কোনো ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম করে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।’

অতীতের অবদানের জন্য পুলিশ বাহিনীকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি ধন্যবাদ জানাই, বাংলাদেশের এ অগ্রযাত্রায় আপনাদের বিরাট ভূমিকা রয়েছে। মনুষ্য সৃষ্ট অনেক দুর্যোগ এসেছে, যেগুলো আপনারা কঠোর হস্তে দমন করেছেন, জঙ্গিবাদ দমন করেছেন। এতে করে দেশের অগ্রযাত্রাকে অব্যহত রেখেছেন।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটা দেশের আইনশৃঙ্খলা হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সেই আইনশৃঙ্খলা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখার কাজটা পুলিশ বাহিনীকেই করতে হয়। পুলিশের ওপর দায়িত্বটা বেশি। তাই এই বাহিনীকে বিভিন্নভাবে ট্রেনিং দেওয়া বা সেক্টর ভিত্তিক বাহিনী করে দিয়েছি।’

আওয়ামী লীগ সরকার টানা ক্ষমতায় থাকার সুফল তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকের বাংলাদেশে যতটুকু উন্নতি করেছি, তা এমনি এমনি আসেননি। এজন্য আমাদের শ্রম দিতে হয়েছে, কষ্ট করতে হয়েছে। দেশের বিরাট পরিবর্তন আনতে পেরেছি। আমরাই শুধু বলি না, আজ বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশ প্রশংসিত।’

স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সবাইকে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ হবে উন্নত ও সমৃদ্ধ। বাংলাদেশ বিশ্বে মাথা উঁচু করে চলবে, সেটাই আমাদের লক্ষ্য। বাংলাদেশ হবে প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন স্মার্ট বাংলাদেশ। সোনার বাংলাদেশ গড়তে সকলকে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানাই।’

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন— স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।

র‌্যাবের মহাপরিচালক এম খুরশীদ হোসেন, পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আনোয়ার হোসেন, আবদুল বাতেন, আমেনা বেগম, যশোর জেলা এসপি প্রলয় কুমার জোয়ারদার বক্তব্য রাখেন। যা মন দিয়ে শোনেন প্রধানমন্ত্রী। এ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ পুলিশের উপর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

সারাবাংলা/এনআর/এনএস