বিজ্ঞাপন

প্রশ্নের উত্তর না দিয়েই সংবাদ সম্মেলন ত্যাগ করলেন সালাউদ্দিন

April 15, 2023 | 8:25 pm

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট

আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছে ফিফা। বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় চলছে দেশের ফুটবলে। এ বিষয়ে কথা বলতে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছিলেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। একপর্যায়ে প্রশ্ন করা হয়, সাধারণ সম্পাদক নিষিদ্ধ হলেন বিষয়টি দেশের ফুটবলের জন্য লজ্জার কিনা? এই প্রশ্নের উত্তর দেননি বাফুফে সভাপতি। ‘থ্যাংক ইউ’ বলে দ্রুত সাংবাদ সম্মেলনকক্ষ ত্যাগ করেছেন।

বিজ্ঞাপন

আবু নাঈম সোহাগের নিষিদ্ধ হওয়া ইস্যুতে আজ শনিবার (১৫ এপ্রিল) বিকেলে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছিলেন কাজী সালাউদ্দিন। সেখানে তিনি প্রশ্ন করার সুযোগ দিয়েছেন কমই। নিজে থেকেই কথা বলেছেন বেশিরভাগ সময়। জানিয়েছেন, ফিফার নির্দেশনা মোতাবেক সোহাগকে সব ধরনের ফুটবলীয় কর্মকাণ্ড থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বাফুফেরর পরবর্তী সভা শেষে বাকি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেছেন তিনি।

দুজন ভাই প্রেসিডেন্ট দেশের বাইরে আছেন বলে দ্রুত সময়ের মধ্যে বৈঠক করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন তিনি, ‘আমাদের ভাইস প্রেসিডেন্টদের মধ্যে দুজন ভাইস প্রেসিডেন্ট দেশের বাইরে আছেন। তাই আমি বৈঠক ডাকতে পারিনি। ওনারা কাল–পরশু দেশে এসে পৌঁছাবেন। সকালে এসে পৌঁছালে পরশু দিন আমরা বৈঠক ডেকে সিদ্ধান্ত নেব। এরপর আপনাদের জানিয়ে দেব পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে।’

আবু নাঈম সোহাগ নাকি নিষেধাজ্ঞার বিপক্ষে আপিল করার বিষয়ে তাকে জানিয়েছেন বলে জানান কাজী সালাউদ্দিন। বাফুফে সভাপতি বলেন, ‘এটা নিয়ে আমি সোহাগের সঙ্গে কথা বলেছি গতকাল রাতে। সে আমাকে বলেছে, এথিকস কমিটির যে সিদ্ধান্ত, সেটা তার ওপর অবিচার করা হয়েছে বলে সে (সোহাগ) মনে করে। এবং এটা নিয়ে কোর্ট অব অরবিট্রেশন ফর স্পোর্টসে যাবে বলে আমাকে জানিয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

গতকাল শুক্রবার সোহাগের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ফিফা। পাশাপাশি বাফুফে সাধারণ সম্পাদককে ১০ হাজার সুইস ফ্রাঙ্ক অর্থাৎ প্রায় ১২ লাখ টাকা জরিমানাও করেছে ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।

ফিফার বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ফিফা ফান্ডের বিষয়ে মিথ্যা ও ত্রুটিপূর্ণ তথ্য দেওয়ায় সব ধরনের ফুটবল থেকে দুই বছরের জন্য সোহাগকে নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি তাকে ১০ হাজার সুইস ফ্রাঙ্ক জরিমানা করা হচ্ছে।’ এর আগে আর্থিক অস্বচ্ছতার কারণে সোহাগকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছিল ফিফা। এবার এলো নিষেধাজ্ঞা। ফিফার ইনডিপেন্ডেন্ট এথিক্স কমিটি এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

সোহাগের বিরুদ্ধে মোটাদাগে চারটি ধারায় অভিযোগ প্রমাণের কথা বলেছে ফিফা। সেগুলো হলো- ২০২০ সালের ফিফা এথিকস কোডের ধারা ১৫ (সাধারণ কর্তব্য), ১৩ (আনুগত্যের দায়িত্ব), ২৪ (জালিয়াতি ও মিথ্যাচার) এবং ২৮ (অযথার্থতা ও অনুদানের অপব্যবহার)। চার ধারার অধীনে ফিফা মোট ৩০৬টি পয়েন্টে সোহাগের অপরাধের বর্ণনা দিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

ফিফার ইন্ডিপেন্ডেন্ট এথিক্স কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আবু নাঈম সোহাগ মিথ্যা নথি এবং বক্তব্য দিয়েছেন। যেখানে জাতীয় ফুটবল দলের জন্য ক্রীড়া সরঞ্জাম ক্রয়ে ৩০ হাজার ২৭ মার্কিন ডলার (২৫ লাখ ৮৮ হাজার ৬৪০ টাকা ) ব্যয়ের তথ্য দিয়েছেন তিনি। এছাড়া চারশ ফুটবল ক্রয়বাবদ ১২ লাখ টাকা এবং বিমানের টিকিট ক্রয়বাবদ ১৬ লাখ ৮৬ হাজার ৩০০ ব্যয় হয়েছে। ফিফাকে দেওয়া আর্থিক হিসাবে মার্কিন ডলারের যে হিসাব দেওয়া হয়েছে সেটিও চলতি সময়ের সঙ্গে মিল নেই বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

এসব বিষয়ে অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত করা হলে সেই তদন্তেও মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন- এমন অভিযোগ সোহাগের বিরুদ্ধে। পরবর্তীতে ফিফার কাছে দেওয়া সোহাগের ব্যাখ্যা আইনি বিধি অনুসারে মিথ্যা বলে প্রমাণিত হয় এবং সেসব অভিযোগ থেকে মুক্তির জন্য প্রার্থনা করেন সোহাগ। কিন্তু তার আবেদন কানে তোলেনি ফিফা।

সারাবাংলা/এসএইচএস

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন