বিজ্ঞাপন

‘বিএনপির সমাবেশে কোনো অরাজকতা যেন না হয়’

July 27, 2023 | 7:50 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: একদফা দাবিতে বিএনপির ডাকা সমাবেশে (মহাসমাবেশ) সরকারের তরফ থেকে কোনো ধরনের অরাজকতা যেন তৈরি করা না হয়, সে ব্যাপারে সরকারকে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) বিকেলে পুরানা পল্টনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।

মোড়েলগঞ্জে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীমের বক্তব্য প্রদানকালে পুলিশের বাধা প্রদান ও অসৌজ্যমূলক আচরণের প্রতিবাদ, ব্যর্থ নির্বাচন কমিশন বাতিল, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতির প্রবর্তন, বিদ্যমান রাজনৈতিক সংকট উত্তরণে সংসদ ভেঙে দিয়ে জাতীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে এ বিক্ষোভ সমাবেশ আয়োজন করা হয়।

মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, ‘আজকে বিএনপিকে আমি ধন্যবাদ জানাই এবং অন্য যারা এই ভূমিকায় রাজপথে রয়েছেন তাদেরকেও ধন্যবাদ জানাই। আজকে অরাজকতা, ভাঙচুর, অশান্তি বেছে না নিয়ে শান্তি এবং সুন্দর পরিবেশে প্রতিবাদ করছেন, সে জন্য আপনাদের (বিএনপি) ধন্যবাদ জানাই।

বিজ্ঞাপন

‘সরকারকে আমি বলব আগামীকাল বিএনপিসহ অন্যরা যে সমাবেশ (মহাসমাবেশ) ডেকেছে সেই সমাবেশ সুন্দরভাবে করার পরিবেশ যেন তৈরি করা হয়। কোনো ধরনের অরাজকতা যেন তৈরি করা না হয়। কারণ, আপনারা ভালো করে জেনে রাখুন, আজকে বাঘের হুঙ্কার শোনাচ্ছেন, যখন নাকি মজুল মানুষের আওয়াজ আস্তে আস্তে বের হতে থাকবে তখন এই বাঘের গর্জন মাটির নিচে নিষ্পেষিত হয়ে আপনাদের ধ্বংস হয়ে যেতে হবে’— বলেন সৈয়দ রেজাউল করীম।

সব শ্রেণি পেশার মানুষের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আজকে মজলুম মানুষের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। আজকে জানের নিরাপত্তা নেই, মালের নিরাপত্তা নেই, আজকে মুফতি ফয়জুল করীমের ওপরে, আলমদের ওপরে হামলা করা হয়েছে। আসুন, আমরা সবাই একত্রিত হই। আজকে সবাই দাবি আদায়ে রাজপথে নেমেছে, আমরা কি ঘরে বসে থাকব? জানমাল নিয়ে আমরা রাস্তায় আসব।’

বিজ্ঞাপন

সৈয়দ রেজাউল করীম বলেন, ‘আজকে যারা বাংলাদেশের মধ্যে বসবাস করছে, যারা দেশপ্রেমী, দেশের জন্য তাদের মনপ্রাণ কাঁদছে, তারা মজলুমদের আহাজারি দেখে সহ্য করতে পারছে না, আজকে সবাই একত্রিত হয়ে গেছে। আর আওয়ামী লীগ সরকার বাঘ এবং সিংহের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। কিন্তু তাদের ইতিহাস মনে রাখা উচিত। বাঘ-সিংহ তার অবস্থান থেকে হুংকার দেয়। কিন্তু ছোট ছোট প্রাণী যখন একত্রিত হয়, তখন বাঘ-সিংহ লেজ গুটিয়ে পালায়।’

তিনি বলেন, ‘আজকে যারা ক্ষমতায় রয়েছে, তাদের বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীলদের কথা এবং বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর কথা শুনলে মনে হয় যেন তারা ফেরাউনের ভূমিকা অবতীর্ণ হয়েছে। অর্থাৎ তাদের কথা-বার্তা শুনলে মনে হয়, তাদের পরাস্ত করার মতো কেউ নেই। কিন্তু আপনি ভুলে যায়েন না। আপনার আব্বা প্রায় ৯৯ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন। তখন কিন্তু এ ধরনের ফেরাউনি কথাবার্তা শুরু হয়েছিল এবং মুহূর্তের মধ্যে সব নিঃশ্বেস হয়ে গিয়েছিল। ফিরাউন কিন্তু বড় গলায় কথা বলার পরে নীল নদে ডুবে মরেছিল। আপনারা কি ভুলে গেছেন তামাম দুনিয়ার ইতিহাস?’

রেজাউল করীম বলেন, ‘এখনও আমার মনে পড়ে হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ বরিশালে ব্রিজ উদ্বোধন করতে গিয়েছিলেন ঢাকা আসার পরেই তার হাতে শিকল লেগেছিল। জেলের ভেতর তাকে দিনযাপন করতে হয়েছিল। আপনারা হয়তো ভাবছেন, আপনারা ক্ষমতার চূড়ায় অস্থান করছেন। কিন্তু ভালো করে জেনে রাখেন, আমরা ভালো করে জেনে রেখেছি, আমরা ভালো করে লক্ষ করছি আজকে বাংলাদেশের সর্বমহলের মানুষ আপনাদের এই অত্যাচার, আপনাদের এ নির্যাতন, আপনাদের এই জুলুমের বিরুদ্ধে একত্রিত হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘আজকে আমাদের দাবি বাংলাদেশে একটি স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ, নির্ভেজাল নির্বাচন হওয়া প্রয়োজন। এটি কি অন্যায় দাবি? বাংলাদেশে যারা আওয়ামী লীগ করে, তারা তো সবাই খারাপ না। অনেক ভালো মানুষও আওয়ামী লীগে আছে। তারাও কিন্তু বিভিন্ন সুবিধা থেকে বঞ্চিত।’

ইসলামী আন্দোলন ঢাকা দক্ষিণের সভাপতি মুহাম্মাদ ইমতিয়াজ আলমের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ- এর প্রেসিডিয়াম সদস্য মুসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, মহাসচিব অধ্যক্ষ ইউনুস আহমেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাপ আলী আকন, যুগ্ম মহাসচিব আলহাজ্ব মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, সহকারী মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ আবুল কাশেম ও মাওলানা এবিএম জাকারিয়া প্রমুখ।

সারাবাংলা/এজেড/একে

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন